ধোকা
ধোকা
রাত দুপুরে আজ হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল,
মশারির পাশ দিয়ে কে যেন চলে গেল!!
ভালো করে চোখ কঁচলে আবার তাকাই আমি,
ভাবি এ কি সত্যি নাকি স্বপ্ন দেখছি আমি!!
পাশে স্বামী চাদর মুড়ি দিয়ে নি:সারে ঘুমোচ্ছে।
ডাকতে তাকে পারছি না,বিরক্ত হবে মিছে।
একি জ্বালা কাকে দেখলাম ভাবছি মনে মনে ,
টুং করে একটা আওয়াজ হোল রান্নাঘরে।
এবার তো আর কোন ভুল নয়,আওয়াজও শুনেছি-
খাট থেকে লাফিয়ে নেমে হাঁটার লাঠিটা নিয়ে পা টিপে এগোচ্ছি।
লাইটও ছাতা জ্বালানো দায়,তার ঘুমের ব্যাঘাত হবে,
সকাল হলেই যে তাকে দপ্তরে যেতে হবে।
অন্ধকারে হাতরে হাতরে চলেছি রান্নাঘরে,
দেখি ফ্রিজের পাশে কে যেন নড়াচড়া করে,
কি করি,কি করি,ভেবে লাঠিটা দিলাম চালিয়ে,
চমক আমার ভাঙলো তার আর্তচিৎকারে।
গলাটা যে বেজায় চেনা,ইনি আমার স্বামী
অন্ধকারে ভুল বুঝে একি করলাম আমি!!
লাইটটা জ্বেলে ঝাঁঝিয়ে উঠি-এত রাতে এখানে করছো কি?
মাঝরাতে উঠে লুকিয়ে মিষ্টিগুলো সাবার করলে নাকি!!
বললে মিনসে কাতর স্বরে-‘মিষ্টি না গো গিন্নি-
কিছুই খাইনি আমি তোমার মাথার দিব্যি।
জল তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়েছিলো।
তোমায় ডেকে জল চাইতে বড্ড মায়া হোল।
সারাদিন খাটুনির পর ঘুমোচ্ছো শান্তিতে,
চুপচুপি এলাম তাই আমি জল নিতে।
শোবার ঘরে জল রাখতে আজ বুঝি তুমি গিয়েছিলে ভুলে?
জল খেতে চুপিসারে তাই নিজেই এলাম চলে।’
স্বামীর সহানুভূতি ভরা কথায় মনে পেলাম বড় শান্তি,
এ যে আমার পরম পাওয়া, ভুললাম সব ক্লান্তি।
সবই তো বুঝলাম,তবে বিছানায় কে আছে শুয়ে!!
দৌড়ে এসে চাদর তুলে দেখি অবাক হয়ে-
কেউ নয়,কোলবালিশ ছিলো চাদরে ঢাকা
মাঝরাতে ঘুমের ঘোরে খেলাম বড় ধোকা!!