কবে থামবে যুদ্ধ!
কবে থামবে যুদ্ধ!
চালতা গাছটা ধীরে ধীরে কি করে বড় হয়ে গেলো!
সেদিনের কিশোরী মেয়েটি ঝুঁটি বাঁধা ছেড়ে দিল।
দয়িত ফিরে আসবে একদিন, তাকে কথা দিয়েছিল,
কয়েক বছরেই মনে হয় যেন কত যুগ কেটে গেল!
এলো চুলের সাথে দেখা করেনা আর চিরুনী,
সে যে আজ আর বাঁধে না বাঁধেনা মাথায় বিনুনী।
দু হাতে পেঁচিয়ে একটা খোঁপা করে নেওয়া সোজা,
আগের মতো মাথায় নেই তো আর চুল এক বোঝা।
চালতা পাতার শিরের মতো মনে সুখস্বপ্ন দাগ কাটে,
দিনে দিনে একদিন হতে পারে চুল সাদা ! বুক ফাটে ।
বাবা মায়ের শখ পুরণ করতে, নিজের ইচ্ছে মেটাতে,
গিয়েছিলো প্রিয়, ইউক্রেনের মেডিক্যাল ওডেশাতে।
বিয়ের সব কথা তো পাকা হয়ে গিয়েছিল আগেই,
বিয়েটা তো হয়ে যেতো, ঠিক সময়ে ফিরে এলেই।
কিন্তু কোথা দিয়ে যে কি হয়ে গেল, বোঝা গেলনা,
কিছুই আগে থেকে একটুও অনুমান করা গেল না।
হঠাৎ যেন ইতিহাসের পাতা থেকে যুদ্ধ উঠে এলো,
এবারে কামান নয়, আরও বেশী আধুনিক হাতিয়ার,
আকাশ থেকে সারি সারি মিসাইল নিচে পড়লো।
ঘর-বাড়ি, স্কুল, ইমারত সব একে একে ভেঙে গেল,
কত যে তাজা প্রাণ ইউক্রেনের মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।
ধুলো আর ধোঁয়াতে শহরের অলি - গলি ভরে গেল!
কিছু লোক ট্রেঞ্চ খুঁড়ে, বেসমেন্টে লুকিয়ে,
নিজেদের বাঁচাতে চেষ্টা করছে, একথা শোনা গেল ।
টিভিতে দেখানো চ্যানেল গুলোর আলোচনা সভা,
যেন ক্রমে ক্রমে মাথাটা খারাপ করে দিতে লাগল।
ঘরে থাকা মেয়েটির পক্ষে যেন মুশকিল হয়ে উঠল,
তার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বিড় বিড় করে উঠল,
হঠাৎ করেই একবার চালতা ফুলের কথা মনে হলো ।
কবে থামবে যুদ্ধ? কবে ফুঁটবে চালতা ফুল !
বাগানে গিয়ে চালতা গাছের পাতার দিকে তাকালো।
এই সুন্দর সৃষ্টি যাঁর, তাঁর কাছে অভিযোগ জানালো,
ধ্বংসই যদি পরিণতি, সৃষ্টি করার কি দরকার ছিল?