Apurba Kr Chakrabarty

Romance Tragedy Others

4.0  

Apurba Kr Chakrabarty

Romance Tragedy Others

প্রেম স্বপ্ন ও বাস্তব

প্রেম স্বপ্ন ও বাস্তব

8 mins
246



রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। আবীর নিজ শয়নকক্ষে বিছানায় বসে মোবাইল ঘাঁটছিল। নির্জন ঘর,একাকী রাতে যেন ঘুম আসতেই চায় না। তাই ঘুম না আসা অবধি মোবাইলই তার সঙ্গী। অবিবাহিত আবীর বড় নিঃসঙ্গ। মা মারা যাবার পর সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বাবা এখান সেখান ধর্ম স্থানে বছরের বেশীরভাগ সময় ঘুরে বেড়ান।

সমস্ত বাড়ীটা রাতে যেন তার মনে হয় এক হানা বাড়ী ।দোতলায় এক পাশে, এক কক্ষে, সে যেন আবদ্ধ এক অশরীরী।হঠাৎই আজ এক অজানা নম্বর থেকে ফোন এল। আবীর ফোন ধরতে অন্য প্রান্ত থেকে এক মহিলা কন্ঠে জিজ্ঞেস করল" ভালো আছো আবীর দা!"

আবীর ভীষণ ভদ্র আর মিশুকে স্বভাব।এত রাতে সৌজন্যতাবশত অজানা মহিলার উদ্দেশ্য বলল "আপনি কে ঠিক বুঝলাম না! "

অন্য প্রান্ত থেকে উত্তর এল ," তোমার খুব পরিচিত ছিলাম ,আজ হয়ত নাম বললে খেয়াল হবে না। তুমি অনেক বড় পদে আছো, শুনে খুব ভালো লাগল।"

আবীর বলল"নামটা বলুন না!খেয়াল নিশ্চয় থাকবে।"

মেয়েটি এবার খুব হাসতে হাসতে বলল "ওরে বাবা ! যদি খেয়াল হয় তবে হয়ত ফোনটা কেটেই দেবে। ফোনে তোমার সাথে কথা বলারও সুযোগ দেবে না। প্লিজ ফোন টা কাটবে না।আর আপনি নয় তুমি করে বলো।"

আবীর বলে" ঠিক আছে তা এইটুকু বলো, কোথা থেকে বলছ । "

"অনেক দুর থেকে।সেদিন তোমায় কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেনে দেখলাম খুব সুন্দর লাগছিল তোমায়। আবার তোমার পাশে বসা এক ভদ্রলোক বললেন স্যার, আমাকে আপনার গাড়ীতে একটু লিফট দেবেন! আজ একটু তাড়া আছে স্যার। তুমি বললে আমার বাপের গাড়ী! সরকারী গাড়ীতে সঙ্গে যাবেন বলার কী আছে।" বোলপুরের নামলে ।"

আবীর বলল "তুমি আমার কাছাকাছি ছিলে?"

মেয়েটি খুব হাসতে হাসতে বলল" কাছাকাছি মানে! আমার রিজার্ভভেশন সিটেই তুমি বসে ছিলে! আমি উল্টো দিকে আপার বার্থে ছিলাম।উপর থেকে তোমায় সমানে দেখতে দেখতে এলাম।বর্ধমানে উঠলে হঠাৎই তোমাকে নজরে এল। বোলপুরে নেমে গেলে। পরশুর ঘটনা।

আবীর বলল সব ঠিকই বলছ ।ডেলী প্যাসেঞ্জাররা এমন বেহায়ার মত অন্যের রিজার্ভভেশন সিটে বসে এটাও ঠিক। বিশেষত ঐ অফিস টাইমে কাঞ্চনজঙ্ঘার কোন বিকল্প ট্রেন এ লাইনে নেই। তুমি যেই হও খুব পরিচিত হলে দেখলে নিশ্চয় চিনতে পারতাম।

মেয়েটি খুব হাসতে হাসতে বলল "এক তো তুমি আপনভোলা ।তার উপর মেয়েদের দিকে তাকিয়ে দেখা তোমার তো স্বভাব নয়,তা আবার ট্রেনে অচেনা মেয়েদের!"

তারপর হাসতে হাসতে বলল "আমি একবার নামলাম বাথরুম যাবার ছল করে, তোমার ডান পাশে বসা বয়স্ক ভদ্রলোক কী যেন নির্ঝর দা বলে উনাকে তুমি ডাকছিলে। সে ভদ্রলোক পর্যন্ত কেমন হাঁ করে আমায় দেখছিল যেমন গিলতে আসছিল। তুমি তো তাকালেই না ,কি করব কিছুক্ষণ পর উঠে এলাম ।"

একটু হাঁফ নিয়ে বলে" একদিকে বাবা ভালোই হল। তুমি চিনতে পারলে আমি লজ্জায় বিব্রত হতাম। তাই সেই সুযোগে তোমাকে অনেক দিন পর এত কাছ থেকে দেখার লোভ আর সামলাতে পারছিলাম না ।তাই অনেকক্ষণ দেখলাম।"

আবীর স্মৃতিচারন করে বলে "তাই তো নির্ঝর বাবু , গোপাল,ট্রেন থেকে নেমেই বলছিল এক পরমা সুন্দরী মেয়ে নাকী আমার দিকে সমানে তাকিয়ে ছিল পরে আপার বার্থে উঠে গেল। আমি তো ভাবলাম মজা করছে।সব তো মিলে গেল। তা হলে রহস্য রাখছ কেন? নামটা বললে ক্ষতি কী?"

অনেক দিন তোমার সাথে কথা বলে একটু স্মৃতিমন্থন করতে ভীষণ ভালো লাগছে। কত কষ্টে তোমার নামে ফেসবুক আছে কীনা সার্চ করে তোমার প্রোফাইলে মোবাইল নম্বর পেয়ে বহু সাধনায় দুটো কথা বলছি।আমার নাম পরিচয় পেলে ফোন টা কেটেই দেবে হয়ত।"

আবীর বলে" কথা দিচ্ছি আমি কাটব না,তোমার গলার স্বর কেমন যেন অনেক চেনা চেনা! প্লিজ নামটা বলো।

কিছুক্ষণ চুপ থাকে একটু পর কেমন আভিমানী আর্দ্র বিষন্ন গলায় মেয়েটি বলে "আমি মালবিকা বেশ্যা বাজারি মেয়ে! বলতে বলতে তার কন্ঠস্বর রোধ হয়ে আসে একটা চাপা কান্না শোনা যায়।

বিস্মিত বিচলিত আবীর উদ্বিগ্ন হয়ে বলে" তুমি মালবিকা ? কেমন আছো তুমি ! কোথায় আছো তোমারা?"

তখনও একটা চাপা কান্নার শোনা যাচ্ছিল। কোন উত্তর এল না,সহসা মেয়েটি ফোন কেটে দিল।

মালবিকা তাদের নিকট প্রতিবেশী ছিল।ওর বাবা ট্রাক ড্রাইভার, এক বড় পরিবহন ব্যবসায়ীর কর্মী।বর্ধমানের পুলিশ লাইনের নিকট সুকান্ত পল্লির তাদের বাসছিল।আবীরের বাবা সরকারী কর্মী,শহরের প্রান্তিক এলাকায় ব্যাঙ্ক ঋনে একটা বাড়ী করেন। তার মায়ের তাতেই গর্ব ছিল আকাশ ছোঁয়া,তেমন মুখরা আর ঝাগড়াটে মহিলা । শান্ত শিষ্ঠ ট্রাক ড্রাইভারের ছোট অসচ্ছল পরিবার,পাশের বাড়িতে ভাড়ায় ছিল।বাড়ির মালিক সপরিবারে চাকুরী সুত্র বাইরে থাকত।

আবীর যখন অষ্টম শ্রেণীর মালবিকা পঞ্চম শ্রেণির। প্রায় এক কিমি দুরে এ এলাকার নামকরা ইংরেজীর শিক্ষক সুবল স্যারের কাছে ইংরেজী টিউশন পড়তে যেত।খুবই সন্দরী হাসি খুসী মিশুকে মেয়ে মালবিকা।  নিজ নিজ সাইকেলে ওরা এক সাথে রাত নটার পর বাড়ি ফিরত।এইভাবে চারপাঁচটা বছর কেটে গেছে ।বাল্য প্রেমের আবেগে হাবুডুবু খাচ্ছে তখন।

সেদিনটা আবীরের টিউশন যাবার শেষদিন। সামনেই এইচ এস ফাইনাল।ফেরার পথে তখন রাত নটার কিছু বেশী।একটু নির্জন পথে আবীর সাইকেল থেকে হঠাৎই নামল।দেখাদেখি মালবিকারও নেমে বলে "কী হল আবীর দা নামলে! "

আবীর আবেগঘন হয়ে বলে "আর তো তোকে এত কাছে কবে পাব জানি না !একটু আদর করতে ইচ্ছা হল।"

মালবিকা লজ্জা পেল, কিন্ত আবীর দিকে এগিয়ে আসে । আবীর চরম উত্তেজনায় তার হাত দিয়ে মালবিকার উষ্ণ নরম হাতদুটো আলত টিপল, তার পর গভীর আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে। সারা শরীর বেয়ে এক নতুন অনুভূতির আনন্দ অজানা উত্তেজনায় মালবিকাকে চুম্বনও করে । মালবিকার শরীর জুড়ে এক উষ্ণ শিহরণে আবীরকে খুব জোরে জড়িয়ে ধরে থাকে। এক অজানা শঙ্কা ভয় আবার পরিতৃপ্তি । আবীরের দুইবাহুর আগলে এভাবেই যেন সে থাকতে চায় আজীবন।

দুরে মটোর সাইকেলের হেড লাইট জ্বেলে আঁধার ভেদ করে কেউ দ্রুত এগিয়ে আসতে দেখে হতচকিত আবীর তাড়াতাড়ি মালবিকাকে ছেড়ে সরে এল। মালবিকার চোখে আনন্দ অশ্রু, জীবনে এক নতুন অনুভূতি কিন্ত এক অজানা ভয় আর শঙ্কায় বলে "তোমার মা বাবা আমাকে মেনে নেবে আবীর দা! "

আবীর আত্মবিশ্বাসী ,বলে "এইচ এস পরেই এয়ার ফোর্সে চাকরীর দরখাস্ত করব, মামাতো দাদা এয়ার ফোর্সে আছে, এখন চন্ডীগড়ে। সব জেনেছি, দুবছর ট্রনিং তার পর চাকরী, আর মাকে ভয় নয়। তোকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেবো! মা না মানলে তোকে নিয়ে যাব, আমার কাছে ,অনেক দুরে ,কেউ আটকাতে পারবে না।" একটু থেমে বলে "তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না ,আমার সারা মনজুড়ে তুই ! "

এটাই তাদের প্রথম ও শেষ শারীরিক সান্নিধ্য। এরপর বাড়ীর পাশাপাশি ছাদে আবীরের মাকে লুকিয়ে গল্প প্রেমালাপ চলতই, মালবিকার মায়ের তাতে সায় ছিল। আবীরের মা ছাদে উঠছে বুঝলেই, ভয়ে সংকোচে মালবিকা সরে পরত ।

বিপদ ঘনিয়ে এল মালবিকার বাবা ভীষণ অসুস্থ হলে। অতিরিক্ত মদ্যপান অসময় খাওয়া ও পরিশ্রমে কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হল। হাসপাতালের ভর্তি হল।মালবিকার মা তখন পঁয়ত্রিশের আশপাশে বয়স, শরীরের আঁটোসাটো বাঁধন। রীতিমত সুন্দরী।

আর্থিক সাহায্য সাথে সাথে ঐ ট্রাক ব্যবসায়ী ওদের বাড়ীতে যাতায়াত বাড়াল। অসহায় কর্মীর স্ত্রী কন্যার প্রতি তার দরদ না অন্য কিছু ! সেটা যাইহোক, পাড়া প্রতিবেশীদের রসাল গল্প শুরু হল।স্বামী অসুস্থ আর মাগী মেয়েকে নিয়ে বাড়ীতে বেশ্যাখানা খুলেছে!গভীর রাতে নাকি অনেক মানুষ আসে! কোন প্রমাণ ছাড়াই এসব কেচ্ছা পাড়ার মেয়ে মহলে রটে গেল। এদের থেকে দুরে দুরে থাকা , সঙ্গে একটা সন্দেহভাব আর অপরাধীর চোখে দেখতে লাগল।

একদিন এরমধ্যে ছাদে নিভৃতে আবীর মালবিকার গল্প কথাবার্ত্তা কানন নিজে চাক্ষুষ করল।কানাঘুসো তার কাছে এদের ঘনিষ্ঠতার খবর ছিল, তবু এতটা মরিয়া ছিল না।কিন্ত মা মেয়ে এই কলঙ্ক রটনার পর তার গোয়েন্দা গিরি বেড়ে যায়।আবীর তখন বারো ক্লাসে পরীক্ষা দিয়েছে মালবিকা সদ্য দশম শ্রেণীতে।

ঝড়ে গতিতে এসে কানন ,মালবিকার উদ্দেশ্যে তীব্র ভৎসনা শুরু করল "এই বেশ্যা মেয়ে তোর মা কী আমার ছেলেকে খদ্দের ভেবেছে! খানকী আমার ছেলের মাথাটা চিবিয়ে খাবি ভেবেছিস? ঝাঁটা মেরে তোদের মা বেটিকে এই তল্লাট থেকেই বিদেয় করব। "

মায়ের রণং দেহী মূর্তির দেখে আবীর দুঃখে হতাশায় থমথমে মুখে নিচে নেমে গেল। মালবিকা কোন উত্তর দিতে পারে না অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে ছাদ থেকে নিচে নেমে গেল।

একটু পর মালবিকার মা মেয়েকে নিয়ে, মেয়ের এই অপমানের নালিশ জানাতে, আবীরদের বাড়ীতে দরজায় বেল বাজালে। কানন দরজা খুলে ওদেরকে বাইরে রুখে রেখে, অভিযোগ না শুনে,ভিতর থেকেই খেউরী শুরু করল"ভাতার সুস্থ থাকতে তো এত সখ আল্লাদ দেখিনি!এবার ভাতার মরলে মেয়েকে নিয়ে মহাজন টুলিতে ঘর ভাড়া নিবি !মা মেয়েতে দেহ বেচে খাবি।খানকী বাজারী বেশ্যাদের জন্য এ পাড়া নয় ।ভদ্রলোকের পাড়া এটা। "

মা মেয়ে অঝোঁরে কাঁদছিল বিপদের সময় প্রতিবেশীর এ হেন আচরণে তারা দিশেহারা।

আবীরের এই তীব্র অপমানের বাক্য বান থেকে মাকে থামানোর সাধ্য নেই ।মায়ের উগ্র স্বভাব তার জানা। তাই সহসা ছুটে গিয়ে মালবিকা ও তার মায়ের সামনে দরজা বন্ধ করে দিল, মা যাতে আর তাদের সামনে পেয়ে অপমান করতে না পারে।মালবিকার ও তার মায়ের ধারনা হল আবীরও বিশ্বাস করছে তারা বেশ্যা বাজারি মেয়ে। তাই ঘৃনায় সেও দরজা বন্ধ করে দিল!

এরপর মালবিকা ও তার মা ঘর থেকেই বের হতো না লজ্জা অপমানে ভয়ে কেমন দিশেহারা হয়ে গেল।

মাস খানেক পর মালবিকার বাবা মারা যায়। মালবিকা তার মা এ পাড়ার ছেড়ে মামার বাড়ি জলপাইগুড়ির এক গ্রামে চলে যায়।এরপর বারোটা বছর কখন কেটে গেছে।

মালবিকার মা চা বাগানে কাজ করত। গতবছর এক পথ দুর্ঘটনায় এখন অক্ষম, মালবিকা নার্স ট্রেনিং ছিল এক প্রাইভেট সংস্থায়। এখন একটি কলকাতায় বেসরকারী নার্সিংহোম হোমে কাজ করে। মায়ের খরচ নিয়মিত গরীব মামাকে পাঠায়।আর সে তিন মাস পর পর ,সাতদিনের ছুটি নিয়ে মাকে দেখতে যায়।

পরশু কাঞ্চনজঙ্ঘার বাড়ি ফেরার সময়, আবীরকে দেখে তার কেমন পুরোন দিন গুলো মনে পরে গেল। বর্ধমান থেকে বোলপুর অবধি সারাক্ষণ আবীর ও তার সঙ্গীদের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনেছিল।

আবীর বি সি এস পাস করে ভালো সরকারী পদে ।

এখন বোলপুরে তার কর্মস্থল।

পরদিন রাতে একই সময় আবীর মালবিকাকে ফোন করল।এবার মালবিকা ফোন ধরে।" আবীর বলল তোমাকে আমি ভীষণ ভালোবেসেছিলাম ,আজ তুমি নিশ্চয় কারোর ঘরনী, পরস্ত্রীর প্রতি অনুরাগ পাপ।" দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল আমি আজ বড় নিঃসঙ্গ একা।

মালবিকা বেশ অবাক হয়ে বলল" তুমি বিয়ে করোনি! যা বুঝলাম তুমি তো বড় চাকুরে !"  

   আবীর বলে"টাকার অভাব আমার নেই,দিনে অফিসারের ব্যস্ততায় কেমন যেন সময়টা কেটে যায় ।রাতটা কাটতে চায় না, বড় নিঃসঙ্গ লাগে! নিজেকে মনে হয় রাতের কোন হানা বাড়ির এক অভিশপ্ত অশরীরী। আর বিয়ে! ভরসা পাই না। আজও মন জুড়ে শুধু তুমি ! অন্য জন সে যেই হোক,মন থেকে ভালোবাসতে পারব না । সেটাও তো পাপ! কারোর সাথে প্রতারণা।"

"তোমার মা বাবা! তারা কেন তোমায় বুঝিয়ে সংসারী করছে না!"

"আমি তো বাচ্ছা নই! আর মা মারা গেছেন ,বাবা সংসার বিরাগী ভবঘুরে সন্ন্যাসীর মত, বাড়িতে আর থাকে কদিন? সংসার আর করব না।"

মালবিকা বলে "তোমার মা ,তুমি সেদিন বেশ্যা বাজারি মেয়ে যাই ভাবো আমরা তা ছিলাম না।বাবার যার কর্মী ছিলেন,ভদ্রলোক যা কিছু আমাদের সেসময় সাহায্য

করেছিলেন,বাবার কর্মজীবনে তার সততা আর নিষ্ঠার প্রতিদানে ।বাবা মারা যাবার পর আমাদের কিছু টাকা দিয়ে বললেন, দেশে ফিরে যাও।আর আমাদেরও এ ছাড়া উপায় ছিল না।"

আবীর দুঃখে অনুশোচনায় ব্যথিত, বলল "সেদিন কে কী বলেছিল জানি না। তোমারা যে খারাপ, ঈশ্বরের দিব্যি বিশ্বাস করি না। তোমার নিষ্পাপ মুখে কলঙ্কের দাগ আমি জীবনেও বিশ্বাস করব না।তোমারা আমায় ভুল বুঝেছিলে।

মালবিকার চোখে জল ,বুক ফেটে যেন এক অসহ্য কষ্ট দুঃখ যন্ত্রণার অনুভুত হয় আবীরের জন্য । নিজের এক আজানা অনিশ্চিত ভবিষ্যত চিন্তায় সে দিশেহারা কেমন নির্বাক থাকে। কিন্ত আবার নিজেকে আবীরের জীবনে জড়াতে ভয় পায়। সেই বিপদের দিনে নিদারুণ অপমান যন্ত্রণা আঘাত তাকে আজও আতংকিত করে । ভাবলেই কেমন যেন দমবন্ধ হয়ে আসে ।ঐ পাড়ার বেদনাস্মৃতি বাবার মৃত্যু আর অপমানিত মায়ের কান্না দীর্ঘশ্বাস সে ভুলতে পারে না আজও। সে আজও অবিবাহিতা, পরস্ত্রী প্রশ্নই আসে না ।তবুও এ সত্য  আবীরকে বলে না। বলতেও চায় না। শুধু দুখী মনে নীরবে কাঁদতে কাঁদতে ফোন ব্লক করে দেয়।



Rate this content
Log in