ছাদনাতলায়
ছাদনাতলায়
ট্র্যাডিশনাল বিয়ে বাড়িতে আনন্দ যে ছিলনা তা নয়,
তবে নিয়ম, মেয়ের বাপকে নাকি গামছা গলায় ,
পাড়ার লোককে নেমন্তন্ন করতে যেতে হয়।
মাছ-মাংস খাওয়ালেও, "ডালভাত" বলতে হয়।
আসলে বোধহয় কন্যাদায়ে দেখাতে হয় বিনয়!
উৎসব অনুষ্ঠানে যদিও আত্মীয়রা আসে যায়,
সকলের সাথে অনেকদিন পর হয়তো দেখা হয়!
তবু বিয়েবাড়িতে আজ মজা খুঁজে পাওয়া দায়।
এখন বেশীরভাগ টাই ফর্মালিটি, আনন্দ কোথায় !
ছাদনাতলার কলাগাছ অদৃশ্য, আকাশ দেখা যায়?
বিয়ের মন্ত্র নাকি, চাঁদ তারা সাক্ষী রেখে বলতে হয় !
এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেক বেশী প্র্যাক্টিক্যাল।
চলে ফোটো শুট, তাই তো চাই মেকাপ, ব্রাইডাল !
হতে পারে তাতে কারও কারও মনে ভীষণ চাপ।
ভাবে, আমাদের সময়ে যদি থাকতো এসব সিস্টেম,
দেখানো যেতো, আগে আমি কতটা সুন্দরী ছিলাম!
সংসারের জাঁতাকলে, হয়েছে হাড় মাস কালি, কালি,
কনের সাজে দুদিনের ছুঁড়ি, দেমাক দেখায় খালি ।
কে আর অযথা খরচ করে বাড়িতে বসায় ভিয়েন,
তার চেয়ে সোজা ঐ সব পকোড়া, মোমোর দোকান।
জলখাবারের জন্য মুখ খুচখুচ বা পেটে ছুঁচোর ডন,
ইচ্ছে হলেই সেসব নিজেরাই চেয়ে নিয়ে খান ।
এরপর প্রতিযোগিতা হয় শুরু, নিতে দখল টেবিলের,
অনেকটা যেন সেই খেলা, হুঁউ, মিউজিক্যাল চেয়ার !
এবারে আসে সময় ক্যাটারারদের দাপট দেখাবার,
পাতে পড়ে হাইস্পিডে নানা আইটেম,যত সব খাবার।
কারো খাওয়া হলো কি না হলো, দেখার নেই দরকার,
পরের ব্যাচের লোক দাঁড়িয়েছে হয়তো টেবিল ধরে,
আইসক্রিম শেষ হয়নি তখনও,শোনা যায় তকরার।
বোঝা মুশকিল, এতো লোক নেমন্তন্নের কি দরকার !
পছন্দ করে গিফ্ট কেনাটাও নয় কিন্তু কম ধকল,
মনের মতো কিছু দিতে চাইলেই হয় বাজেট ফেল।
তারপরেও গিফ্টটা ধরিয়ে দিয়ে ফিরে আসা চলবেনা,
বাড়িতে ফিরে গরম সেদ্ধভাত, খাওয়া সেদিন মানা।
যদি বিয়েটা হয় গরমের দিনে, এ যেন সোহাগা খই!
সোনার কারণে কষ্ট হলেও তাকে হবে ফুটে উঠতেই।