লেসিয়া
লেসিয়া
সে যুগের বক্সারদের কথা ভাবলেই মনে পড়ে যায় ,
গ্যারি কসপারভ, মাইক টাইসন, ক্লিচকো ব্রাদারস।
ভ্লাদিমির ক্লিচকো আর ভিতালি ক্লিচকো দুই ভাই,
দুজনের কেউ নিজেদের বিরুদ্ধে করেননি লড়াই ।
অথচ বক্সিং এ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন কিন্তু দুজনেই !
ভিতালি এখন ইউক্রেনের কিভ শহরের মেয়র,
শহরের বহু মানুষের জান-মালের দায়িত্ব এখন তাঁর,
কি করবেন, রাশিয়ার আক্রমণে সব হচ্ছে ছারখার!
তবুও প্রতিজ্ঞা, দায়িত্ব কম নয় কিভ শহর রক্ষার।
আর ভ্লাদিমির? তিনি তো রীতিমত যুদ্ধে নামলেন,
আরও খেলোয়াড় আর বক্সাররাও কথাটা ভাবলেন।
ভাসিলি লোমাচেঙ্কো নামে বক্সারও যুদ্ধে এলেন,
আলেকজান্ডার উসিক,বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন যিনি,
দেশের ডাকে মারণ অস্ত্র হাতে তুলেই নিলেন তিনি ।
এবারে, নগর রক্ষার দায়িত্বে থাকা দুই সৈন্যের কথা,
লেসিয়া ইভাশেঙ্কো আর ভ্যালিরি ফিলিমোনোভ ।
লেসিয়া তো আজকের যুগের নারী, দেশ রক্ষার তরে,
খেলোয়াড়দের মতোই বেছে নিয়েছে যুদ্ধের প্রান্তরই।
দুজনেই সাধারণ, তাতে ওদের নেই কোনও ক্ষোভ !
বছর কুড়ির সম্পর্কের একসাথে জীবন গড়ার স্বপ্ন,
হঠাৎ যুদ্ধের গোলাবারুদের ধোঁয়াশায় যেন আচ্ছন্ন!
প্রাতিষ্ঠানিক বিবাহটি অবশ্য হয়েছিল আগেই।
আনুষ্ঠানিক বিবাহের সুখকল্পনা গুলোর কি হবে?
কিছুই তো বোঝা যাচ্ছে না, এই যুদ্ধ যে কবে থামবে!
আদৌ কি দুজনেরই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা হবে?
একদিন না একদিন তো যুদ্ধ নিশ্চয়ই থেমে যাবে।
আছে কি এমন নিশ্চয়তা, যে দুজনেই বেঁচে ফিরবে !
আর অপেক্ষা নয়,এটাই সিদ্ধান্ত নেবার সঠিক সময়,
যুদ্ধক্ষেত্রে শহিদ যদি হওয়া যায়, বিবাহও সম্ভব হয়।
সবাই বুঝুক যতোই যুদ্ধ হোক, জীবন থামার নয় !
বক্সার দের মতোই নারীও পারে জীবন বাজি রাখতে,
মেয়র ভিতালির উপস্থিতি বড় উপহার এই বিয়েতে !
যুদ্ধের এগারোতম দিবসে ফুলের সৌরভ ও হাসিতে,
আনন্দে চোখে যে জল এলো লেসিয়ার আঁখিপাতে।