শিকড়ের জাল
শিকড়ের জাল
টবে লাগানো কোনো গাছকে ভালো রাখতে,
দরকার হয় খানিকটা মাটি, আর চাই ভালোবাসা।
নিয়মিত ও পরিমিত সার, জল দিতে,
প্রয়োজন শুধু মনযোগ আর একটুখানি আশা।
কোনও বীজ বপন করার পর তা ধীরে অঙ্কুরিত হয়,
লাজুক কচি পাতা মাটি ফুঁড়ে আকাশে উঁকি দেয়।
আর ওদিকে মাটির নিচে শিকড়ের জাল বুনন হয়,
সম্পর্কও একই ভাবে হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত হয়।
যখন মানুষ খুব কাছে, মানে একদম নিকটে থাকে,
তাকে হাতের আঙুলের অভ্যেস এর মতো মনে হয়।
মর্ম তখনই বোঝা যায় যখন কেউ দূরে চলে যায় !
এমনকি আকাশের তারা হয়ে গেছে ভেবে,
রাত জাগা, চোখের জল, হা হুতাশ আর হায় হায়।
কাছে না থাকলে যে টান অনুভব করা যায়,
সেই টানটা কত জোরালো তা দিয়েই বোধহয়,
কে কাকে কতটা ভালোবাসে তা মাপা সম্ভব হয়।
ঠাকুর বলেছিলেন, মাগ,ছেলে,সম্পত্তি,বিষয়-আশয়,
সব টান যোগ দিলে যে টান তৈরী হয়,
তাকেই খাঁটি,নিখাদ, ঈশ্বর প্রেম বলা যায়।
হে ঈশ্বর তুমি যদি কথাটা জিজ্ঞেস করো আমায়,
"কাকে আমি সবচেয়ে ভালোবাসি ?"
তুমি কি বিশ্বাস করো এই কথা, যদি বলি "তোমায়" !
জানি, এক কথায় তোমার উত্তর আসবে "না"।
আমিও যে মিথ্যে কথা সহজে বলি বলিনা।
আমি তো শুধু তোমার নানারকম নাম শুনেছি,
চোখে কি তোমায় কখনও কোনোদিন দেখেছি?
এটাই তো আশ্চর্য, তোমাকে আর তোমার সৃষ্টিকে,
কিছু না বুঝেই একটু একটু ভালো বাসতে পেরেছি।
অবশ্য আপদে,বিপদে,তোমায় ডেকে সাড়া পেয়েছি!
অনন্ত জিজ্ঞাসা আমার মনে হামেশাই উদয় হয়,
উত্তর না পেয়ে পেয়ে প্রশ্ন গুলো ক্রমে মিলিয়ে যায়।
হৃদয়ের গভীরে গিয়ে আবার চুপ করে লুকিয়ে রয়,
কবে আসবে তুমি ! আদৌ কি সত্যিই আসবে?
এ কথাগুলো দিনরাত আনাগোনা করে মনের কোনে,
হয়তো তাই থাকতে পারি খুশী হয়ে আনমনে !
মাঝে মাঝে এই কারণে, কাজে ভুলচুক হয়ে যায়,
তাই তো তোমাকে বেশী ভালোবাসি একথা মনে হয়।