আয়না (পর্ব ১৩)
আয়না (পর্ব ১৩)
চরণদাস পিনাকী বাবুকে জানান দুর্গাবতীর আত্মার মৃত্যুর রহস্য । আর কেনই তিনি এতটা হিংস্র হয়ে উঠেছেন। সে অনেকদিন আগেকার কথা যা লোক মুখে শোনা যায়। জমিদার বিক্রম প্রতাপের রাজত্বকালে নিতাই পুরের মানুষ খুব ভালোভাবেই জীবন যাপন করছিল।
কারণ জমিদার বিক্রম প্রতাপ ছিলেন একজন প্রজা বৎসল জমিদার। তাই তিনি সবসময় তাঁর প্রজাদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থাকতেন। একদিন তিনি তাঁর প্রতিবেশী নন্দীগ্রামের জমিদার প্রতাপ নারায়ণের বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেছিলেন।
জমিদার প্রতাপ নারায়ণের একমাত্র বিবাহযোগ্যা কন্যা ছিলেন দুর্গাবতী। বিক্রম প্রতাপ দুর্গাবতীকে দেখে তাঁকে খুব ভালোবেসে ফেলেন। আর জমিদার প্রতাপ নারায়ণের কাছে তাঁর একমাত্র কন্যাকে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন।
এই প্রস্তাব শুনে জমিদার প্রতাপ নারায়ণও খুব খুশি হন। আর তিনি এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। আর ধুমধাম করে জমিদার বিক্রম প্রতাপ আর রাণী দুর্গাবতীর বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর তাঁরা সুখেই সংসার করছিলেন।
হঠাৎ একদিন বিক্রম প্রতাপ আর রাণী দুর্গাবতী তাঁদের মামা বাড়িতে বেড়াতে যান। যেহেতু জমিদার বিক্রম প্রতাপ ছিলেন ছোটবেলা থেকেই মাতৃহারা। তিনি তাঁর পিতা জমিদার শুভঙ্কর প্রতাপের যত্নে বড় হয়েছিলেন।
আর ছোটবেলা থেকেই বিক্রম প্রতাপের তাঁর মামা বাড়ির উপর টান ছিল। কিন্তু তাঁর মামা মোটেই সুবিধাজনক ছিলেন না। কারণ তিনি অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন নিতাই পুরের জমিদারের সিংহাসনে বসার।
কিন্তু জমিদার শুভঙ্কর প্রতাপ বিক্রম প্রতাপের মামা হরিশংকর রায়কে কোনোদিন এই সুযোগ নিতে দেননি। কারণ তিনি আগের থেকে সবটাই জানতেন। আর তাই তিনি অতি সাবধানে তাঁর জমিদারি চালনা করতেন।