অবিস্মরণীয় ভালোবাসা ❤ পর্ব ৯
অবিস্মরণীয় ভালোবাসা ❤ পর্ব ৯
অহনা : কি হোলো Little boy , তোমাকে কেউ বকেছে ?
আয়ুশ মাথা দুদিকে দুলিয়ে " না " করে তারপর অহনার শাড়ির টানতে থাকে । অহনা হাটু মুড়ে আয়ুশের সামনে বসতেই আয়ুশ অহনার গলা জড়িয়ে ধরে আর গালে একটা চুমু দিয়ে " মা " বলে ওঠে । অহনা হতচকিত হয়ে যায় ।
অহনা : কি বললে little boy ? আবার বলো কি বললে ?
আয়ুশ : " মা "
আয়ুশের মুখে প্রথম বুলি ফুটতেই " মা " বলেছে শুনে অহনার দুচোখ বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা । সাথে সাথেই আয়ুশকে জড়িয়ে ধরে অহনা চীৎকার করে " আদি, আদি " বলে আদিকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ডাকতে শুরু করে । অহনার ঐরকম ব্যাকুল কন্ঠস্বর শুনে আদি, ইভান, অহনার মা ছুটে আসে ।
আদি : কি হয়েছে অহনা ? তুমি কাঁদছো কেনো ? কি হয়েছে বলো ?
ইভান : এই অহনা কি হোলো হঠাৎ , এইভাবে কাঁদছো কেনো ?
অহনা দুবার " আয়ুশ আয়ুশ " বলে চুপ করে যেতেই আদি অস্থির হয়ে জিজ্ঞাসা করে ,
আদি : আয়ুশ ? কি করেছে ও ? কেঁদো না, কিছুতো বলো ।
অহনা কাঁদতে কাঁদতে বলে," এইমাত্র আয়ুশ প্রথম কথা বলেছে । আমাদের আয়ুশ আজকে কথা বলেছে । "
আদি : কথা বলেছে মানে ! কি বলছো তুমি ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না, একটু খুলে বলো অহনা ।
অহনা হাতের আঙুল দিয়ে চোখের জল মুছে আয়ুশকে বলে, " Little boy তুমি এইমাত্র আমাকে যেটা বলে ডাকলে আবার বলোতো দেখি ।
অহনার কথা শুনেও আয়ুশ কিছুক্ষণ চুপ করে সবার মুখের দিকে কয়েকবার তাকায় তারপর মাথা নিচু করে থাকে ।
অহনা অস্থির হয়ে যায় আয়ুশের মুখে ডাকটা পুনরায় শোনার জন্য তাই বারবার বলতে থাকে,
অহনা : little boy বলো আমাকে যেটা বলে ডাকলে, please সোনা আরেকবার বলো । বলো, বলো little boy ।
অহনার অস্থিরতা দেখে ইভান বলে ,
ইভান : অহনা আমার মনে হয় তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে । তুমি নিশ্চয়ই ভুল শুনেছো, চ্যাম্প কি করে কথা বলবে ?
আদি : আমি জানি অহনা, তুমি অনেক চেষ্টা করছো আয়ুশের মুখে কথা ফোটানোর । তুমি বলেছিলে সেটা সময়সাপেক্ষ আর এখন তুমি বলছো আয়ুশ কথা বলেছে !
অহনা আবার কাঁদতে কাঁদতে বলে,
অহনা : তোমরা বিশ্বাস করো আমি সত্যি বলছি আয়ুশ এইমাত্র আমাকে একবার নয়, দু - দুবার মা বলে ডেকেছে ।
অহনা মা : মামনি তুই বোধহয় সত্যিই ভুল শুনেছিস, আসলে তুই আয়ুশকে এতো বেশি ভালোবাসিস বলে হয়তো তোর মনে হয়েছে ও তোকে মা বলে ডেকেছে ।
মায়ের কথা শুনে অহনা রেগে গিয়ে চীৎকার করে উঠে বলে,
অহনা : আমি একেবারেই ভুল শুনিনি, তোমরা কেউ কেনো বিশ্বাস করছো না আমার কথা । আমি একজন ডাক্তার হয়ে এতো বড় মিথ্যে বলতে পারি না তাও আবার আয়ুশকে নিয়ে ।
এই বলেই অহনা আয়ুশকে আবার বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে , তারপর দুহাত দিয়ে আয়ুশের দুগাল ধরে আদর মাখা কন্ঠে বলে,
অহনা : আয়ুশ সোনা, দ্যাখো কেউ আমার কথা বিশ্বাস করছে না । তুমি একবার মা বলে শুনিয়ে দাও সবাইকে । বলো সোনা, please একবার বলো ।
অহনার এতোবার বলা সত্ত্বেও আয়ুশ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে অহনার মুখের দিকে তারপর হঠাৎ করেই " মা " বলে ডেকে উঠে জড়িয়ে ধরে অহনার গলা ।
আদি, ইভান এবং অহনার মা তিনজনেই একেবারে হতভম্ব হয়ে যায় ।
আয়ুশের মুখ থেকে প্রথম কথা শুনতে পেয়ে আদিও আনন্দে আত্মহারা হয়ে প্রথমে আয়ুশকে তারপরেই অহনাকে জড়িয়ে ধরে , ঠিক তখনই ইভানের কাশির শব্দ পেয়েই তাড়াতাড়ি অহনাকে ছেড়ে দেয় । অন্যদিকে অহনাও হতচকিত হয়ে প্রস্তরমূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে, তার সলজ্জ স্থির দৃষ্টি নিবদ্ধ আদির মুখের দিকে । অহনার মাও আয়ুশকে সাথে নিয়ে তাড়াতাড়ি চলে যায় সেখান থেকে , গুটিগুটি পায়ে ইভানও আদিত্য আর অহনাকে একা রেখে চলে আসে বসার ঘরে । ইভান যাওয়ার সময় অহনার ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে " আমি দরজাটা বন্ধ করে দিচ্ছি এবার তোরা নিজেদের মতো একটু কথা বল আদি " এই বলে দরজাটা বন্ধ করে দেয় ।
ইভান দরজা বন্ধ করে দিতেই অহনা আর আদি দুজনেই লজ্জা পেয়ে দুজন দুদিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে , প্রায় মিনিট দুয়েক সব চুপচাপ । ঘরের ভিতরকার পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক করার জন্য প্রথম কথা বলে উঠলো আদি নিজেই ।
আদি : " এটা তোমার ঘর ? "
অহনা শাড়ির আঁচলের একটা কোণ নিজের বাঁ হাতের তর্জনীতে মোড়াতে মোড়াতে শুধু
" হ্যাঁ " বলেই চুপ করে যায় ।
আদি : " আমাকে বসতে বললে নাতো ? আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো ? "
আদির কথায় অহনা লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি ওর বিছানার একটি পাশ দেখিয়ে বলে ,
" এখানে বসুন । " একথায় আদি " কি বললে ? বসুন ? " এই বলে ভ্রু কুঁচকে তাকায় অহনার দিকে ।
******** To Be Continued