The Devil Queen 😈🔥

Tragedy Others

4.0  

The Devil Queen 😈🔥

Tragedy Others

বন্ধু তোমার সাথে আড়ি

বন্ধু তোমার সাথে আড়ি

7 mins
2.8K


হাইইইই 


কারোর ডাক শুনে পেছনে তাকিয়ে বলল রিঙ্কু তোরা....? এইখানে...? 


রিঙ্কুর এক বান্ধবী বলে উঠল অনুস্কা -হ্যাঁ ওইইই ঘুরতে বেরোলাম, আর কি....'


ওওও... রিঙ্কু বলে উঠল


অনুস্কা হটাৎ বলে উঠল -কিরে এত শপিং কার জন্য? আর এত্তোগুলো গোলাপ...? কাউকে ভালোটালো লাগল নাকি?


আরেএএ ধুরর.. ও আর প্রেম..! তার থেকে তো ও দশ হাত দূরে থাকে কিন্তু....-তারপর ই অনুষ্কার সাথে থাকা প্রিয়া বলেই হেসে উঠল


রিঙ্কু বলল কিন্তু কি বল..? আর কি বললো গোলাপ শুধু প্রেমিকার জন্যই কিনতে হবে.? মানুষটি কে হতে পারে না...!?


প্রিয়া বলল হ্যাঁ হতেই পারে কিন্তু আজ পর্যন্ত তোকে এত খুশি দেখিনি তাই বললাম আর কি...!


খুশি হব না আমি প্রচুর খুশি এবং ব্যস্ত রেএএ... আর হবেই না বা কেন আজ 5 বছর পর অনু আসছে যে.... রিঙ্কু উচ্ছাসিত হয়ে বলে উঠল

প্রিয়া বলল অনু, মানে যার কথা বলি তুই এতদিন আমাদের কানে পোকা এতদিন খেয়েছিস, সে..?


খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে রিঙ্কু বলল হ্যা রে....! আমার প্রাণভোমরা আমার কাছে ফিরে আসছে যে.... 


অনুস্কা মুড ভার করে বলে উঠল যার জন্য তুই আমায় আমার অত বড় নামটা ধরে ডাকিস সবাই অনু বললেও তুই অনুস্কা বলিস


হ্যাঁ সেইইই...! হেসে বলল প্রিয়া


অনুস্কা রিঙ্কুকে বলে উঠল আচ্ছা সে তো এখন খুব বড় মানুষ হয়ে গেছে, তোর মত সাধারন মানুষকে পাত্তা দেবে তো..??


সত্যিকারে বন্ধুত্ব কখনো টাকা,পয়সা ফেমের কাছে হার মানে....আ....

হটাৎ করে কেউ রিঙ্কুর চোখ চেপে ধরায় সে চুপ হয়ে যায় এই কে রে.....??

কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর হঠাৎ করে রিঙ্কু আনন্দে উঠলো.... কুত্তিইইইইইইই তারপরই রেগে বলে উঠল চোখ ছাড় কুত্তি.... আরি সঙ্গে....


সে সে চোখ ছেড়ে দিয়ে বলে উঠলো সত্যি তো..?


হ্যাঁ সত্যি.... বলেছিলি মাঝে মাঝে আসবি....! এই তোর আসা...? দুর হ তুই -রাগে অভিমানে বলে উঠল রিঙ্কু


-

 আমার প্রিয় ফ্রুট & নাট চকলেট আর গোলাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আমাকে বলছে আড়ি.... দে আমাকে রিঙ্কুর রাগ ভাঙাতে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে বলে উঠল অনু, জানে এতেই একমাত্র রাগ জল হবে


রিঙ্কু বলে উঠল এটা তোর জন্য না...! কি বলেছে এটা তোর জন্য..? এটা অনুর জন্য


আনন্দিত হওয়ার ভান করে অনু বললদে তাহলে


আ্যা.....আসছে হয়... ওর নাম ও অনু....অনুষ্কা, অনুষ্কা দিকে তাকিয়ে ভাব নিয়ে বলল রিঙ্কু 


অনু রিঙ্কুর এই কথাটা শুনে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে


তা দেখে রিঙ্কু তুতলিয়ে বলে ওঠে ও ও ও ওইইই ভা আ বেএ তাকাস কেন..?


কিছু না Nothing else কিন্তু তুই তো তোতলাচ্ছিস কেনো?


জানিস না আমার তোতলানোর রোগ আছে...?


অনু হেসে বলে ওঠে হ্যাঁ জানি তো.... ৫০ বছরের বুড়ি, 


রিংকু হেসে বলে ওঠে হ আইছে বুড়ি আমার....! বুড়ির বান্ধবী বুড়ি..! তো তুই এখানে? তো বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল...?.অবাক হয়ে বলে ওঠে রিঙ্কু


ম্যাজিক!


ম্যাজিক না ছাই, আসল লোচাটা বল...!


-আসল ম্যাজিকটা হল কাকিমা,আর কিছুটা অনুমান বাকিটা বন্ধুত্বের টান! চ ওই সামনের পার্কটায় গিয়ে বসি, পার্কের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলল অনু।


হ্যাঁ চ, তোরাও আয় অনুস্কা ও প্রিয়াকে বলল রিঙ্কু


ওকে অনুস্কা ও প্রিয়া বলে ওঠে


অনু রিংকুর ছোটবেলার বন্ধু, বন্ধু বললে ভুল হবে, বোন তারা.... একসময় দুজন দুজনকে ছাড়া চলতে পারতো না, কিন্তু হঠাৎই তার পড়াশোনার জন্য দিল্লিতে চলে যেতে হয় নিজের একটা কোম্পানি আছে আজ দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পশ্চিমবঙ্গে আসছে....।


হটাৎ অনু ফুচকার গাড়ি দেখে রিঙ্কু কে বলে উঠল ওই দ্যাখ ফুচকা, রিঙ্কু চ ফুচকা খাবো...


রিংকু বলে উঠল হ্যাঁ চ...


ফুচকার দোকানের সামনে গিয়ে রিঙ্কু ফুচকা কাকুকে বলে ওঠে কাক্কু ৩ প্লেট ফুচকা দিন তো...!


রিংকুর কথা শুনে প্রিয়া হটাৎ অবাক হয়ে বলে উঠল ৩ প্লেট?আমরা তো 4 জন...!


প্রিয়ার কথা শুনে অনু রিঙ্কু একসঙ্গে বলে উঠল আগে আগে দ্যেখো হোতা হে ক্যায়া...!


অনুস্কা ও প্রিয়া ওদের কথা শুনে হতবাক 


যথা সময় ফুচকা এলে অনু রিঙ্কু একটা প্লেটে দুজন মিলে কাড়াকাড়ি করে খেতে লাগল লাস্ট ফটো দুজনকে দেখে নিজে মুখে পুরে নিয়েই হেসে ফেললো তাদের মুখে তৃপ্তির হাসি, কিছু স্মৃতি আবার ফিরে পাওয়ার আনন্দ সেইটা হয়তো অনুভূতি প্রকাশ করা যাবে না।


তারপর প্রিয়া অনুস্কা চলে গেলে ওরা গেল তাদের ছোট বেলার স্কুলে, যেখানে তাদের বন্ধুত্বের সূচনা....


রিঙ্কু আক্ষেপ করে বলে উঠল ইস রে.... মাই কিউটিপাই সাইকেলটাকে মিস করছি!


মনে আছে আমার সাইকেল নিয়ে আমায় কতবার ধাক্কা দিয়ে ফেলেছিস আর কতবার নিজে পড়েছিস....? লজ্জা করে না সাইকেল এর কথা বলতে...? আর শেষে তো... রেগে গিয়ে বলল অনু


সরি ক্ষমা দে মা আর বলবো না! মনে মনে রিঙ্কু বলে উঠল -কেন যে বললাম...?


তোকে না সাইকেল চালাতে বারন করেছি...? চালাস কেন তুই?


রিংকু বলে উঠল কই চালাই না তো..! মনে মনে-এই রে একে কে বলল আমি সাইকেল চালিয়েছি....?


রেগে অনু বলে উঠল মিথ্যা বলছিস আমায়? অার কেউ আমায় বলেনি তোর থেকে আমি তোকে বেশি জানি!


যা আমি তো ভূলেই গেছি এ যে মনের কথাও শুনতে পায় মনে মনে বলল রিঙ্কু কিন্তু অনুকে বলে উঠল আমি এখন বাইক চালাই।


অনুকে আরোও রেগে যেতে দেখে ভয় পেয়ে রিঙ্কু বলল তোকে চকলেট,ফুচকা, আইসস্ক্রিম মোমো যা বলবি খাওয়াবো শান্ত হ।


অনুকে আরোও রেগে যেতে দেখে মনে মনে রিঙ্কু বলল আগুনে ঘি ঢালতে তোকে কে বলে রিঙ্কু...? মুখে কিছু আটকায় না....!! কেন আটকায় না..!


অনুকে শান্ত করতে শেষ চেষ্টা করল রিঙ্কু- না.. মা মা নে আ মি আস তে আ স্তে সাবধানে চালাবো তোর দিব্বি‌।


সন্দেহজনক দৃষ্টি নিয়ে অনু বলল সত্যি তো?


হ্যা, পাক্কা প্রমিস, নে চ এবার। ইমোসনাল হয়ে রিঙ্কু বলল আমায় খালি বকে মেয়েটা...!


কলেজ যাওয়ার পথে হাইরোডে রিঙ্কুর অ্যাকসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে অনু রিঙ্কু কে সাইকেল, বাইক চালাতে দিতে ভয় পায়। রিঙ্কু অনুকে না জানিয়ে বাইক কেনার পর পাক্কা তিন মাস কথা বলেনি। শেষে অনেক কষ্টে মানভঞ্জন করা সম্ভব হয়েছে।


হটাৎ অনু বলে ওঠে দ্বারা ফোন করে কাকুর বাইকটা আনাই


কেন?

লং ড্রাইভে যাবো


তাহলে আমার টা আনাই...?


না তোর টা আনতে দেরী হয়ে যাবে


কিছুটা ভেবে বলল রিঙ্কু হ্যা সেই


অনু বলল কিন্তু একটা condition আছে আমি বাইক চালাবো.!

অবাক হয়ে প্রশ্ন করল রিঙ্কু তুই আর বাইক..?


হ্যাঁ কেনো বিশ্বাস হয় না...?!


না তা না... কিন্তু আমার ও একটা শর্ত আছে, যাওয়ার সময় তুই চালাস,আসার সময় আমি চালাবো


-ওকে ডান


ফোন করে বাইক আনতে ম্যাক্সিমাম ১৫ মিনিট লাগল

অনুর কাকু বাইকটা দিয়ে গেলেন


তারপর

রিংকু বলে উঠল কোথায় যাবি?


অনু বলল কোথায় আবার চ আমাদের প্রিয় " নন্দনে "।


- চ ডার্লো (ডার্লিং এর লেজেন্ড ফর্ম)


যাওয়ার সময় ওরা প্রচুর ইয়ার্কি ঠাট্টা করতে করতে যাচ্ছে।

রিঙ্কু অনুকে বলে আচ্ছা বান্দরনি তুই কবে বিয়া করবি?


অনু অভিযোগ করে বলে ওঠে ওই মোটেও আমি বান্দরনি নই।


হ জানা আছে, তুই কচু জানো। আমি কিন্তু তিনমাস আগে থেকে তোর বিয়ার ভোজ খামু, তোর বাসর ভাঙন দেবো।


তুই আগে কর কুত্তি, তারপর আমারটা ভাববি।


না, আগে তোর


আমি বলছি তো আগে তোর


আচ্ছা বাবা থাম। এক কাজ করবো আমরা দুজন একসাথে বিয়ে করুম।


- হ‍্যাঁ বর দুটো বেশ আমাদের মতো Bff হবে।


- হ‍্যা তোর বর হবে আমার জিজা প্লাস শালা


- ওই শালা ছেলেদের হয়


হ আমি টম বয়


শালা


শালি তুই আমার


অনুকে রিঙ্কু বলল শোন না জিজু ঠিক কর, আর দেখবি আমাদের মতো Bff যেন হয়,


তুই ঠিক কর না...


ওকে দুজনে মিলে.....


এইরকম কথা বলতে ওরা দুজন যাচ্ছিল নন্দনে। কিন্তু হঠাৎই একটা লড়ি ডান পাশ দিয়ে এসে ওদের বাইকে ধাক্কা মারে......

অনুউউউউউউ......ভয়ে আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে রিঙ্কু

তারপর সব অন্ধকার...


৩ দিন পর

অনুর জ্ঞান ফেরে, সামনে তাকিয়ে দেখে মা, বাবা, কাকারা দাড়িয়ে। আস্তে আস্তে চোখ খোলে অনু। হাত পা প্লাস্টার করা তারপর ওর সব মনে পড়তে থাকে......

- মা..... রিঙ্কু কোথায়?

- ও পাশের কেবিনে আছে। ঠিক আছে ও।

- আমায় ওর কেবিনে সিফ্ট করে দিতে বলো না....

- এখন তো সম্ভব না রে, পড়ে দেখা করিস।

অনুর মন খারাপ হয়ে পড়ে

এক মাস পর .......

 মা রিঙ্কু এলো না কেন? এতোদিন হয়ে গেল একবারও ওর কুত্তিকে দেখতে এলো না কেন?? ও ঠিক আছে তো??? ভয়, উৎকণ্ঠায় অনু ওর মাকে জিজ্ঞাসা করে

মেয়েকে কি বলবে আর কতদিনই বা লুকিয়ে রাখবে এই ভেবে মেয়ের ভালোর জন্য বলে ওঠে- হ‍্যাঁ ঠিক আছে।


তোমরা গত একমাস ধরে এই একটা কথাই বলে যাচ্ছ। ও যদি ঠিক থাকে তাহলে এখনো আমার সাথে দেখা করতে এলো না কেন? তোমরা আমায় সত‍্যিটা বলো না হলে আমি সব প্লাস্টার খুলে ফেলবো। না ই আসতে পারে কিন্তু ফোনে তো কথা বলতে পারে , আর আমি ফোনে কথা বলতে চাইলে তোমরা নানা অজুহাত দিয়ে আমাকে ফোন করতে দাও না, আর যদি জিজ্ঞেস করি ও ফোন করেছে কিনা তখন ও তোমরা বলো ও ফোন করেনি। বলোনা তোমরা ও কেমন আছে? চিৎকার করে বলে ওঠে, যদিও চিৎকার টা করতে পারে না গলায় চোট লাগার কারনে, ভয়ে উৎকণ্ঠায় অসহায় দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে...!


অনু অত‍্যাধিক প‍্যানিক করতে থাকে, মাথায় চোট লাগা অংশটায় যন্ত্রনা হতে থাকে। ফর্সা মুখটা লাল হয়ে যায়। Hearth breathing এর রেট হাই হতে শুরু করে। 


শেষে অনুর মা একমাত্র মেয়ের কিছু হয়ে যাওয়ার ভয়ে সত‍্যিটা বলে.........ও আর নেই বলেই হাউমাউ করে কেঁদে দেয়

অনু মায়ের কথা শুনে অবাক হয়ে বলে মা মা মা নেএএ


মানে অ্যাকাসিডেন্টের দিন তুই ছিটকে ফুটপাতের দিকে চলে গেলেও ও মাঝ রাস্তায় পড়ে থাকে আর ও বাসের নীচে পড়ে যায় কাঁদতে কাঁদতে বলে অনুর মা... 


অনু পুরো শান্ত হয়ে যায়। কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে বসে থাকে, তারপ‍র হঠাৎই খুব জোড়ে হেসে ওঠে.....


-মা তুমি মিথ‍্যে কথা বলছো বলো....

নিজের মেয়েকে সামলাতে সামলাতে না রে তোকে মিথ‍্যে বলে কি লাভ?

- না মা এটা হতে পারে না। জানো মা ও আমায় বলেছিল আমার বিয়েতে তিন মাস আগের থেকে হাজির হয়ে যাবে। একসঙ্গে আমরা বিয়ে করবো তাও আমাদের মতো দুই বেস্টফ্রেন্ডকে। মা ও আমায় বিয়েতে সাজিয়ে দেবে, আমি ওকে সাজিয়ে দেব বলেছিল। মা ও আমায় তো কখনো মিথ‍্যা প্রমিস করে না......


অনুর মা অনুকে জড়িয়ে ধরে, মেয়ের কষ্ট যে কোনো মা-ই যে সহ্য করতে পারে না

মা ও যা বলে তাই করে। আচ্ছা ওকে বাইক চালাতে বারন করলাম বলে কি ও রাগ করলো? মা ওকে বলো না ফিরে আসতে, আমি আর কখনো ওকে বাইক চালাতে বারন করবো না, কখনো বাধা দেব না। ও খেতে ভালোবাসে তো যা বলবে তাই খাওয়াব, যেখানে বলবে ঘুরতে নিয়ে যাব। পাঁচ বছরের অভিমানের সাজা এইভাবে সারাজীবন আমায় দিতে পারে না........কাঁদতে কাঁদতে প্রলাপ বকতে থাকে অনু


অনু অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে দেখে ডাক্তার ওকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে যায়। ধিরে ধিরে চোখ বুজে আসে, ঘুমের দেশে তলিয়ে যায় অনু। এক বাইক আ্যকসিডেন্ট শেষ করে দেয় পনেরো বছরের বন্ধুত্ব, দুই বন্ধুর পঞ্চাশ বছরের বন্ধুত্বের জন্মদিন পালনের স্বপ্ন।


Rate this content
Log in

More bengali story from The Devil Queen 😈🔥

Similar bengali story from Tragedy