দাম্পত্য (প্রথম ভাগ)
দাম্পত্য (প্রথম ভাগ)
মনির সাথে আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় বছর পাঁচেক, আমাদের মেয়ের বয়স তিন। এই পাঁচ বছরে প্রায় পাঁচশ বার রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছে। প্রতি বারেই আমি গিয়ে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিয়ে আসি। আমি এখন ঠিক করেছি আর নয়, এবার যদি রাগ করে চলে যায় আর আনতে যাবো না। ঝগড়ার সময় এই কথা বারবার শুনিয়ে রেখেছি। মেয়ে সুমিকে নিয়েই চিন্তা, ও মা ছাড়া কি থাকতে পারবে।
সেদিন অফিস থেকে ফিরে সবে ফ্রেশ হয়ে বসেছি, মনি এসে বললো
"শোনো আমি ভাবছি সুমিকে ক্রেশ রেখে একটা চাকরি করবো"
আমি একটু অবাক হয়ে বলি
"কেনো আমার উপায়ে কি সংসার চলছে না?"
"এই সংসার ছাড়া কি আমার আর কোনো জগৎ নেই, আর সুমি শুধু আমার একার মেয়ে নয়, তুমিও ছুটি নিয়ে মাঝে মাঝে ওর দেখাশোনা করবে" কথাটা বলেই মোবাইল টা নিয়ে কি যেনো খুঁজতে লেগে গেলো। আমি আর কোনো কথা না বলে শোবার ঘরে যাওয়ার জন্য উঠতেই মোবাইল টা আমার মুখের সামনে মেলে ধরে বললো "এই দেখো, এই কোম্পানি আমাকে ইন্টারভিউ এর জন্য ডেকেছে"
দেখলাম একটা প্রাইভেট কোম্পানির নাম। শুধু "ঠিক আছে, যাও" বলে আর কথা বাড়ালাম না, যদিও আর কথার কোনো মূল্য থাকবে না এটাও ভালো করেই জানতাম।
সুমিকে ক্রেসে না দিয়ে আমার এক দিদির বাড়ি রাখার ব্যবস্থা করলাম অগত্যা। একবার ভালো করে বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তার বাক্য বানে অস্থির হয়ে এ ছাড়া আর পথ ছিল না।
মনি চাকরি টা পেলো ঠিক কিন্তু বুঝতে পড়লাম সুমিকে এতটা সময় ছেড়ে থাকতে তার মনটাও সায় দিচ্ছে না। তবু মনের জেদ কিছু তাকে করতেই হবে, এই সংসারে থেকে থেকে তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি সময় মত অফিসে বেরিয়ে গেলাম। কথা ছিলো মনি অফিস যাওয়ার আগে সুমিকে দিদির বাড়ি রেখে আসবে।
সেদিন বাড়ি ফিরতে বেশ একটু দেরি হলো। সুমি ঘুমিয়ে পড়েছিল। ওকে মাথায় হাত বুলিয়ে শোবার ঘরে গেলাম, মনি খুব ক্লান্ত হয়ে খাটে আধশোয়া হয়ে মোবাইল দেখছিল।
ক্রমশঃ