ত্রিশূল
ত্রিশূল
চারুলতার আগুনচোখের দিকে দৃষ্টি পড়লে এইক্ষণে সমাজের যে কোন অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবে এই কথা বলাই বাহুল্য। চারুলতার হাত রক্তে ভিজে গেছে। কোনও এক অতিমানবিক শক্তির প্রভাবে কেঁপে কেঁপে উঠছে শরীর। মাটিতে আধ বসা অবস্হায় ত্রিশূলটা চোখে বিঁধিয়ে রণচণ্ডীর রূপ নিয়েছে চারুলতা। মুখমন্ডল জুড়ে সিঁদুরের রক্তিম আবরণ। প্রচন্ড ধস্তাধস্তির ফলে খোলা চুল সারা পিঠে ছড়িয়ে পড়েছিলো। আজ বিসর্জনের মন বিষাদের রাতে চারুলতা মর্ত্যলোকের অসুর দলনী।
চারুলতা দত্ত, মা মরা মেয়েটা বাবার বড় আদুরে চারু। বোস পাড়ার হৃদয়, সকল অধিবাসীবৃন্দের খুব পছন্দের মেয়ে চারু। চারুর নাচ, গান এবং সঞ্চালনা ছাড়া পাড়ার বৈশাখী অনুষ্ঠান হোক অথবা শারদ উৎসব হোক ভাবাই যায় না। বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতক পরবর্তী পড়াশোনা শেষ করে চারু এখন বিভিন্ন বেসরকারী সংস্হায় চাকরির আবেদন করছে। অঞ্জন দত্ত, চারুর বাবা মেয়ের বিবাহ দ্রুত সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা করছে। ভারতীয় রেল দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী, চারুর বয়স যখন তিন বছর তখনই স্ত্রী শিখা পরলোক গমন করেছে। সুস্হ থাকতে থাকতে মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর অঞ্জন দত্ত। চারুলতার এই বিষয়ে কোন আপত্তি নেই।
বিসর্জনের দিন বোসপাড়ার সিঁদুর খেলা খুব বিখ্যাত। প্রতিবার চারুলতা সকাল থেকেই পাড়ার কাকীমা,মাসিমা, দিদি-বোনদের সাথে এই সিঁদুর খেলায় সামিল হয়। কিন্তু কোনবারই দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেখতে গঙ্গায় আসে না চারু। বাবার এই বারণের প্রতিবাদ করে অবাধ্য হয়নি চারু। যত বয়স বাড়ছে প্রচন্ডে ভিড় এবং আওয়াজে অঞ্জন দত্ত অসুস্হবোধ করেন তাই বিসর্জন বাড়িতে বসে টেলিভিশনে উপভোগ করেন। এই দিনে অন্য কারুর ভরসায় মেয়েকে ছাড়তে নারাজ অঞ্জন দত্ত। বিসর্জনের দিন কারুর কোনও হুঁশ থাকে না। সমাজবিরোধীরা অসভ্যতামি করার জন্য অপেক্ষা করে। সমাজ কি কোনও দিন নারীদের জন্য সম্পূর্ণ সুরক্ষিত হবে না?
মাতৃপ্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় সবাই একসঙ্গে নাচতে নাচতে গেলেও ফেরবার সময় সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন একা একা নিজ নিজ দায়িত্বে বাড়ি ফেরা ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। পঞ্চমীর দিন থেকেই নূপুর চারুলতাকে অনুরোধ করেছে এই বছর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যেতেই হবে। হয়ত নূপুর ও চারুলতা দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিবাহের আগে শেষ একসাথে পুজো। কিন্তু চারুলতার সাহস নেই বাবাকে বিসর্জনে যাওয়ার কথা বলার। তাই অঞ্জন দত্তর থেকে অনুমতি আদায়ের দায়িত্ব বাধ্য হয়ে নূপুরকে নিতে হয়েছিল।
পঞ্চমীর দিন থেকেই নূপুর চারুলতাকে অনুরোধ করেছে এই বছর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যেতেই হবে। হয়ত নূপুর ও চারুলতা দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিবাহের আগে শেষ একসাথে পুজো। কিন্তু চারুলতার সাহস নেই বাবাকে বিসর্জনে যাওয়ার কথা বলার। তাই অঞ্জন দত্তর থেকে অনুমতি আদায়ের দায়িত্ব বাধ্য হয়ে নূপুরকে নিতে হয়েছিল।
- জ্যেঠু, প্লিজ চারুকে অনুমতি দাও। এই বছর আমার সাথে বিসর্জনের দিন গঙ্গায় যাবে।
- দেখ নূপুর মা, এই দিনটাকে আমি ঠিক ভরসা করতে পারি না। অতি শিক্ষিত ভালো বংশের মানুষও এই দিনে সর্ব জ্ঞানশূণ্যের মতো ব্যবহার করে। চারুও আমার এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে যাওয়ার কোনদিন চেষ্টা করেনি।
- জ্যেঠু, তোমার যুক্তিপূর্ণ সব কথা মেনে নিলাম। তবু আমি দায়িত্ব নিচ্ছি। আমাদের দুজনের বিয়ের আগে এটাই শেষ পুজো। কোন বছর আমি এই দাবী নিয়ে তোমার কাছে আসিনি জ্যেঠু, এটাই প্রথমবার আর হয়তো শেষবার। প্লিজ হ্যাঁ বলো। আমাদের দুজনের সঙ্গে দাদা তো থাকবে।
- ও হ্যাঁ, তোর দাদা ভালো নামটা কি যেন! বয়স হচ্ছে সব ভুলে যাচ্ছি। ডাকনাম তো রাজু!
- হ্যাঁ জ্যেঠু, ডাকনাম রাজু, ভালো নাম অতনু।
- হ্যাঁ, মনে পড়েছে, অতনু। আজকাল কি কাজ করছে অতনু?
- দাদা তো সরকারী চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিল। সেই সব পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা হয়েছে। এখন অনলাইন টিউশন করে।
- ও আচ্ছা! ছেলেটা ভালো। কোন সাতে পাঁচে থাকে না। নিজের জগত নিয়ে নিজে থাকে।
- হ্যাঁ জ্যেঠু। আমার দাদার মতো ছেলে আজকের দিনে আর হয় না।
- চারু মা, এই বছর নূপুর আর অতনুর সাথে বিসর্জনে গঙ্গায় যাবি? তোর মনের ইচ্ছা কি?
- তুমি যা বলবে সেটাই হবে বাবা।
- ঠিক আছে, এই বছর বিসর্জনে চারু যাবে।
- অনেক ধন্যবাদ জ্যেঠু, থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। তোমায় আমি এই বিজয়ায় নিজের হাতে তৈরি স্পেশাল মিষ্টি খাওয়াবো।
- হা হা হা হা। তা বেশ! তা বেশ!
পুজোর চারটে দিন চোখের পলক পড়ার মতো দ্রুতবেগে চলে যায়। বিসর্জনের দিন এসে উপস্হিত হয়। সকাল থেকেই চারুলতা আর নূপুর কেউ কারুর চোখের আড়াল হচ্ছে না। দর্পনে প্রতিমা বিসর্জন, সময় অন্তর অন্তর সিঁদুর খেলা তো ছিলো তার ওপর একসাথে জলখাবার এবং দ্বি প্রাহরিক ভোজন, পুরোটাই একে অপরের সঙ্গী।
পাড়ার মন্ডপে দুপুরবেলা থেকেই মায়ের বরণ শুরু হয়ে গেছে। সাথে চলছে সিদুঁর খেলা আর ঢাকের তালে কোমর দোলানো। বরণ ও নাচানাচির পরে শুরু হলো শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার শুরুর থেকেই চারুলতা ও নূপুরের ওপর কড়া নজরদারি রাখছিলো অতনু। প্রতি বছর মাতৃমূর্তি বিসর্জনের সময় অস্ত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়। তবে পিতলের ত্রিশূলটা চারুলতার হাতে দেওয়া হয়। চারুর মা শিখা দত্ত সন্তান লাভের আশায় মানত করে এই ত্রিশূলটা তৈরি করিয়ে ছিলেন এবং পাড়ার পুজো কমিটিকে দান করেছিলেন। ত্রিশূল দানের পরের বছর শিখা দত্তের কোল আলো করে পৃথিবীতে এসেছিল চারুলতা।
প্রতি বছর বিসর্জনের পরের দিন পুজো কমিটির সভাপতি অঞ্জন দত্তের বাড়িতে গিয়ে ত্রিশূলটা দিয়ে আসে। কিন্তু এই বছর যেহেতু চারুলতা গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত এসে উপস্হিত হয়েছে তাই পাড়ার ছেলেরা চারুলতাকে ডেকে ত্রিশূলটা চারুলতার হাতে দিয়ে দিলো। আচমকা গঙ্গার ঘাটে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়ে গেলো। কোন প্রতিমা আগে বিসর্জন হবে সেই বিষয় নিয়ে প্রথমে যুক্তিহীন তর্ক গালিগালাজ তারপর হাতাহাতি। ঘাটে উপস্হিত পুলিশদের মধ্যে প্রশিক্ষণহীন সবুজ পুলিশদের সংখ্যা বেশি থাকায় সুস্হভাবে পরিস্হিতি মোকাবিলা করতে অপারগ হয়ে সবুজ পুলিশরাও হাতাহাতিতে যুক্ত হয়। ক্রমশ সামগ্রিক অবস্হার চূড়ান্ত অবনতি হয়।
নূপুর আর চারুলতা দুজন দুজনার হাত শক্ত করে ধরলেও দুজনেই হতচকিত এবং কিংকর্তব্যব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। ঠিক এই সময়ে অতনু ওদের দুজনকে সুকৌশলে সুরক্ষিতভাবে উত্তেজনাপূর্ণ স্হান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। উত্তেজনাটা গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার প্রধান সড়কে মূহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। চারুলতা ও নূপুরকে প্রধান সড়ক এড়িয়ে গলির রাস্তা দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায় অতনু। পরিস্হিতি বিচার করে চারুলতা ও নূপুর সেই পরিকল্পনায় সম্মতি জানায়।
গলির রাস্তায় কিছুটা এগোতেই তিনজন প্রচন্ড রকম দুর্গন্ধ অনুভব করতে শুরু করলো। শৌচকর্মের দুর্গন্ধ, মাদক সেবনের দুর্গন্ধ সব মিলিয়ে চূড়ান্ত রকমের অসুস্হ পরিবেশ। অতনুর খুব অসুবিধা না হলেও চারুলতা ও নূপুরের প্রচন্ড অসুবিধা হতে শুরু করলো। তবু তারা নিরুপায়। তাই তিনজনেই হাঁটার গতিবেগ বাড়িয়ে দিলো। বেশ কিছুটা এগিয়ে যখন দুর্গন্ধপূর্ণ পরিবেশ ম্লান হয়ে গেছে তখন আচমকা চারুলতা অনুভব করলো সে একাই হেঁটে এগিয়ে চলেছে নূপুর আর অতনু নেই। পিছনে ফিরে তাকাতেই চারুলতা দেখলো অতনু তার বোন নূপুরকে এমনভাবে জড়িয়ে চেপে ধরে আছে যে নূপুরের সেই বাঁধন মুক্ত করার কোনও সুযোগ নেই এমনকী চিৎকার করারও সুযোগ নেই। চারুলতা হতবাক। নূপুরের দিকে এগিয়ে যেতেই চারুলতাকে পিছন থেকে কে যেন ঠিক একইভাবে জড়িয়ে চেপে ধরলো।
আকস্মিক আক্রমণে বিভ্রান্ত হয়ে যায় চারুলতা। আক্রমণকারীর শরীরের কড়া সুগন্ধী এবং মুখ নিঃসৃত মাদকের উগ্র গন্ধ চারুলতাকে তাৎক্ষণিক বিভ্রান্ত ও প্রায় জ্ঞানশূণ্য করার অনুঘটক রূপে কাজ করছিলো। জীবনে এই প্রথমবার চরম পরিণতির কথা ভেবে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো। হঠাৎ আক্রমণে হাতের ত্রিশূলটা সামান্য দূরে মাটিতে ছিটকে পড়েছে। চিৎকার করার সুযোগ নেই। আর চিৎকার করলে এই গলির রাস্তায় আরও মাতালরা, সমাজবিরোধীরা এসে সামিল হবে। নিজের লড়াইটা নিজেকেই লড়ে নিতে হবে এই কথা ভেবে অবশেষে প্রতিরোধ শুরু করে চারুলতা। ধস্তাধস্তিতে চুল এলোমেলো হয়ে যায়। শাড়ী অবিন্যস্ত। শরীরের স্পর্শকাতর অংশে হাত দেওয়ার প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে থাকে চারুলতা। চোখের সামনে মা এবং দুর্গা মায়ের মুখ ঝলক দিয়ে দিয়ে আসা যাওয়া করছে।
চারুলতার প্রতিরোধ করার চেষ্টা দেখে নূপুরও নিজের দাদা অতনুর বাঁধন থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। নূপুরের প্রতিরোধ বেশি সময় সামলানো যাবে না বুঝতে পেরে অতনু নূপুরের কানে কানে কথা বলতে শুরু করে
- চুপ করে শান্ত হয়ে থাক। তোর সাথে খারাপ কিছু হবে না। বান্টির চারুলতাকে খুব ভালোলাগে একটু মজা করে ছেড়ে দেবে। বান্টি আর আমি দুজনে মিলে এই প্ল্যানটা করেছিলাম। আমাদের প্ল্যানকে সাপোর্ট করে দিলো গঙ্গার ঘাটের উত্তেজনা। মা দুর্গা সবার মনকামনা পূর্ণ করে। এর বদলে বান্টি আমাকে আর তোকে দুজনকে দুটো আইফোন উপহার দেবে। এই ঘটনাটা কোনদিন কোন পরিস্হিতিতেই কাউকে বলবি না।
রাগ, দুঃখ, লজ্জা এবং ভয় সব মিলিয়ে নূপুর মন ও শরীর গুলিয়ে ওঠে। সামান্য আইফোনের লোভে দাদা এরকম একটা ন্যক্কারজনক পরিকল্পনায় সামিল হলো! সামান্য আইফোনের জন্য! এই দাদাকে নিয়ে আমরা গর্ব করতাম! যে দাদা হাথরাস থেকে হাঁসখালি নারীদের ওপর হওয়া প্রতিটা শারীরিক নিগ্রহের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় বইয়ে দেয় সে আজ তার নিজের বোনের বন্ধুর শারীরিক নিগ্রহের ষড়যন্ত্রের একজন মূল চক্রী। ছিঃ! ছিঃ! কিন্তু এটা ভেঙে পড়ার সময় না। প্রতিরোধ আরও তীব্র করার সময়। লড়াই চালিয়ে যায় নূপুর।
ধস্তাধস্তি চলাকালীন চারুলতার নজর রাস্তায় পড়ে থাকা ত্রিশূলটার দিকে পড়ে। বান্টি চারুলতার শরীরের নিম্নাংশে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবার সময় চারুলতা মনে জোর এনে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে দূরে ঠেলে ফেলে দেয় বান্টিকে। আবছা আলোয় অদূরে পড়ে থাকা ত্রিশূলটা তুলে বিঁধিয়ে দেয় বান্টির চোখে। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা বান্টির চোখ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসতে শুরু করে। বান্টি আহত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ত্রিশূলটা বের করে বান্টির দিকে তাকিয়ে উন্মত্তের মতো রাগে ফুঁসতে থাকে চারুলতা। বান্টির অজ্ঞান অবস্হা আর চোখ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসছে দেখে নূপুরের ওপর বাঁধনটা আলগা হয়ে যায় অতনুর। নূপুর এক ঝটকায় নিজেকে বাঁধন মুক্ত করে সজোরে চড় মারে অতনুর ডান গালে। অতনু গালে হাত দিয়ে নূপুরের দিকে একটা রাগী দৃষ্টি দিয়ে ঘটনাস্হল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
একবছর পরে.....
অতনু পলাতক। কোন খোঁজ খবর হদিশ কিচ্ছু নেই।
বান্টির ডান চোখ সম্পূর্ণ বিকল। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সে এখন সম্পূর্ণ গৃহবন্দী। আরও স্পষ্ট করে বললে ঘরবন্দী।
নূপুরের বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে গেছে। যে মেয়ের দাদা পলাতক সেই মেয়ের বিবাহের সম্বন্ধ কার্যকর হওয়া এই সমাজে বেশ কঠিন। তবে কটূ প্রস্তাব শুনে শুনে নূপুর এখন এই বিষয়ে সহজাত এবং তীব্র প্রতিবাদী।
চারুলতার বিবাহ চন্দননগরের এক বনেদী ব্যবসায়ী বাড়ির ছোট ছেলের সঙ্গে মহা আড়ম্বরপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মায়ের স্মৃতি হিসাবে ত্রিশূলটা চারুলতা নিজের কাছে, নিজের ঘরে রেখে দিয়েছে। যখনই সাহস হারিয়ে ফেলবে তখনই এই ত্রিশূলটা শক্তির যোগান দেবে।
রক্ত লাগা ত্রিশূল যে আর পুজোর কাজে লাগবে না এই কথা পরিকল্পনা করে গোপন করেছে চারুলতা ও নূপুর। চারুলতার শারীরিক নিগ্রহের ঘটনার একজন মূল ষড়যন্ত্রীর নাম যে অতনু সেই কথাও সম্পূর্ণ গোপন করেছে চারুলতা ও নূপুর।
পাড়ায় সবাই জানে বান্টি বিসর্জনের দিন মদ্যপ অবস্হায় ওই আলো আঁধারি গলি রাস্তাতে কোনও ধারালো বস্তুর আঘাতে আহত হয়েছিলো।
নূপুরের মা ছেলের প্রত্যাবর্তন এবং মেয়ের বিবাহের মানত করে একটি নতুন পিতলের ত্রিশূল দান করেছে পাড়ার পুজো কমিটিকে।
সমাপ্ত