ধামসা মাদল
ধামসা মাদল
"পাট তুলি মুঠি মুঠি, বানাই ঝুরি ঝাঁটি...........
ঢোল ধামসা মাদল তালে কাঁপে ভুঁইয়ের মাটি।"
সবাই তো জানি আমরা, আদিবাসী মানেই খাঁটি,
আইন আছে, যেন না হয় বিক্রি কখনও ওদের মাটি।
কিন্তু ওরা যে ভীষণ বোকা, বড় বেশীই সরল !
বুঝতে পারেনা, দেখতে পায়না মানুষের মনের গরল।
না চিনে, সহজেই সব মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলে,
ঋণ করে, হাঁড়িয়া বা তাড়ি খেয়ে কথা দিয়ে ফেলে।
এভাবেই কায়দা করে কোনো কোনো চতুর মহাজন,
ওদের জমিজমা গিলে ফেলে, বাড়ায় আপন ধন।
পান্তা ভাতে একটু নুন আর পেঁয়াজ পেলেই তো খুশী,
গেঁড়ি, গুগলি, ঝিনুক, কাঁকড়া ভরপুর প্রোটিনে !
দেশী মুরগীর ঝোল হয় কখনো সখনো অতিথি এলে,
শুয়োরের মাংস হয় অবশ্য হঠাৎ পালা পার্বনে,
জীবনে বাঁচতে গেলে, এর চেয়ে কি আর চাই বেশী !
হ্যাঁ খানিকটা এরকমই ধারণা ছিল কিছুদিন আগেও,
ঘরে আনতো বিয়ে করে কর্মঠ দেখে শক্তিশালী বউ !
মাঠে ঘাটে ওরাই তো বেশী কাজ করতো আগে,
এখন সময় পাল্টেছে, ছেলেরাও পড়ে, চাকরি মাগে।
কৃষিকাজ করে শিকার ছেড়ে, ছাড়েনি আজও হুল!
উৎসবে, পার্বনে, মন খুশী হলে অথবা বিনাকারণে,
আজও ডুম-ডুমা-ডুম বোল তোলে ধামসা মাদল।
কালো মেয়েদের সারিবাঁধা জড়ানো হাতের সারি,
একনাগাড়ে নেচে চলে, বেশ কয়েক ঘন্টা সময় ধরি।
বসন্তের কোকিল কি যে যায় বলে সুর করে করে,
ছাতাপরব, বাহা, ভাদু, টুসু, কিংবা সাধের ঐ সহরাই,
লালের লড়াইয়ের সাক্ষী তো ঐ পলাশ শিমুলেরাই ।
সন্ধার বেগুনী সন্ধ্যামালতি অথবা হলুদ ঝিঙেফুল,
আজও মহুয়ার ফুলের বুঁদ হওয়া গন্ধকে মনে করায়।
দূর থেকে ভেসে আসা অচেনা ধামসা মাদলের শব্দ,
আমার রক্তে দোলা দেয়, কেমন যেন নেশা ধরায় !