Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Mysterious Girl "মিশু"

Abstract

4.7  

Mysterious Girl "মিশু"

Abstract

শাঁখা

শাঁখা

4 mins
521


হঠাৎ কার নজর লাগল এই পাড়াটায় কে জানে? গত এক সপ্তাহ ধরে একের পর এক মানুষ মরছে। তাদের মৃত্যুর কারণ, লক্ষণ সবই মিলে যাচ্ছে। সেকি বিভৎসতা মৃত দেহ গুলোর মধ্যে ফুটে উঠেছে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। কোটর থেকে চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। যেন সেই চোখ দুটো বলছে, "বাঁচাও আমাকে"।

গায়ে হাতে পায়ে অসংখ্য আঁচড়ের দাগ, যেন হিংস্র কোনো পশু আঁচড় কেটে দিয়েছে। শরীরে রক্তের লেশ মাত্র নেই। আর সবচেয়ে বড় আশ্চর্যজনক বিষয় হলো বুকের বাঁদিকে হাড় মাংস খুবলে কেউ হৃদপিন্ড বের করে নিয়েছে।

বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ থেকে চশমাটা খুলে রাখলো অপূর্ব। পাড়ার নিস্তব্ধতা বুঝিয়ে দিচ্ছে কতটা আতঙ্কের মধ্যে আছে পাড়ার মানুষ। পুলিশের তদারকিও কোনো কাজে লাগছে না। ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে সকলে। বিশেষ করে চিন্তা হচ্ছে বাড়ির সকলের ভীত মুখ গুলো দেখলে।

"অপূর্ব আমাকে কিছু টাকা দাও তো" মল্লিকা ঘরে ঢুকে কথাটা বলল। হিসাবের খাতা থেকে চোখ সরিয়ে স্ত্রী-এর দিকে তাকালো অপূর্ব। মল্লিকা নিজের দুহাতের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বলল, "শাঁখা গুলো কি সুন্দর না? দাও দেখি টাকা দিয়ে আসি, নিচে শাঁখারি মাসি বসে আছে"।

"শাঁখা পরাতে এসেছে?" অপূর্ব প্রশ্ন করতে মল্লিকা একগাল হেসে বলল, "হ্যাঁ, এই মাসিটা খুব ভালো শাঁখা নিয়ে আসে। পাড়ার অনেকে নিয়েছে, আমিও আজ নিয়ে নিলাম"।

অপূর্ব আর কথা না বাড়িয়ে টাকাটা দিয়ে দিল। মল্লিকা টাকা নিয়ে চলে গেল আর অপূর্ব ব্যস্ত হয়ে পড়ল নিজের হিসাবের খাতা নিয়ে।

রাত একটা বেজে চল্লিশ। রাতের অন্ধকার সব কিছুকে গ্ৰাস করে একেবারে নিস্তব্ধতা ছেয়ে দিয়ে গেছে। মল্লিকা বিছানায় শুয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, অপূর্ব এখনো নিজের হিসাবের খাতা নিয়ে টেবিলে বসে আছে। দোকানের হিসাব নিকাশ না মেলানো পর্যন্ত চোখে ঘুমের লেশ মাত্র নামবে না।

আঙুলের কড় গুনে ও ক্যালকুলেটরে চোখ বুলিয়ে নিতে নিতে হঠাৎ কেমন অদ্ভুত এক শিহরণ বয়ে গেল অপূর্বের শরীর জুড়ে। অযাচিত কোনো অতিথির অস্তিত্ব অনুভব হলো। খাতা বন্ধ করে রেখে পিছন ফিরে তাকাতে দেখল মল্লিকা শোয়া ছেড়ে উঠে বসেছে।

"কি হয়েছে গিন্নি, উঠে পড়লে যে! আলোটা নিভিয়ে দেবো নাকি?" অপূর্ব প্রশ্ন করল। তবে উত্তর পেলো না। 

মল্লিকা ধীর পায়ে বিছানা ছেড়ে নেমে এলো। কেমন যেন এলোমেলো পা ফেলছে। অপূর্ব চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো, মল্লিকার আবভাব সুবিধার ঠেকছে না।

অপূর্ব আবার মল্লিকাকে ডাক দিতে সে ঘরের মাঝবরাবর এসে থমকে দাঁড়ালো। মাথা তুলে তাকালো একবার। মল্লিকার হাসি কলরবে ভরা মুখের বদলে নিস্প্রাণ ফ্যাকাশে দৃষ্টিটা দেখে অপূর্ব বিহবল হয়ে গেছে। নিজের স্ত্রী'কে এই প্রথমবার বড্ড অপরিচিত মনে হচ্ছে। গত দু'বছরের বিবাহিত জীবনে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি।

"কি হয়েছে মল্লিকা!!" অপূর্ব কোনো রকমে কথাটা বলল। গলার স্বর সঙ্গ দিচ্ছে না।

মল্লিকা এতক্ষন পর এবার বলে উঠল, "খিদে পেয়েছে"।

অপূর্বের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, মুখে থমথমে অভিব্যক্তি। মল্লিকার মুখে কথাটা শুনে অপূর্ব খানিক হেসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল, "ওহ এই ব্যাপার! আচ্ছা চলো নিচে যাই। খাবার ফ্রিজে আছে নিশ্চয়ই"।

"ফ্রিজে! আমি টাটকা খাবো, একদম এখান থেকে বের করে" মল্লিকা এগিয়ে এসে অপূর্বের বুকের বাঁ দিকে হাত রেখে ফ্যাসফ্যাসে স্বরে বলল।

"মানে?" অপূর্ব অবাক হয়ে গেল।

"লাল মাংসপিন্ড টা চাই আমার" মল্লিকা লোভনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো।

অপূর্ব থতমত খেয়ে পিছিয়ে গেল, "কি যা তা বলছো!!"

"খাবো, খিদে পেয়েছে। ওটা চাই আমার" মল্লিকা এগিয়ে আসতে লাগল।

অপূর্ব চিৎকার করে উঠল, "মল্লিকা কি আজেবাজে বকছো! ঘুমের ঘোর কাটেনি তোমার। তুমি কি ভুলে গেছো আমি তোমার হাসবেন্ড"।

মল্লিকা হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, "তুমি আমার স্বামী নও, আমি তোমার কেউ নই"।

"কি বলতে চাইছো!" অপূর্ব কাঁপা কাঁপা গলায় বলল।

মল্লিকা কোনো কথা না বলে ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে হাতে থাকা শাঁখা দুটো খুলে ফেলল। তারপর বলে উঠল, "খুলে দিলাম তোমার বউ এর হাত থেকে, তোমার রক্ষাস্ত্র রইল না।"

"ক...কে কে তুমি!" অপূর্ব প্রশ্ন করল কোনো রকমে। সব ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।

"সেই শাঁখারি, যে বিবাহিত মেয়েদের শাঁখা পরানোর নামে বশ করি" বলে মল্লিকার শরীরটা অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়লো। হাসি থামিয়ে আবার বলল, "এবার আমি নিজের ক্ষুধা মেটাবো"।

অপূর্বের কাছে এবার সব পরিষ্কার হতে লাগলো। ঠিক তো, পাড়ার যতজন মরেছে সকলে বিবাহিত, তাদের সকলের মৃত দেহের পাশে শাঁখা জোড়া পাওয়া গেছে। তাহলে কি এবার অপূর্বের পালা! 

ভাবতে ভাবতে অপূর্ব অনুভব করলো কেউ ওর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক থাবায় বুক চিঁড়ে দুফালা করে দিল। চোখ প্রায় বেরিয়ে এলো কোটর ছেড়ে, প্রাণ পাখি খাঁচা ছেড়ে বেরোনোর জন্য ছটফট করছে।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract