হয়ে ওঠ কালী!
হয়ে ওঠ কালী!
ও দুঃখী নারী!
কেন তুই ভেঙে পড়িস অল্পেতে?
কেন দূর্বলতা তোর মুখের বচনেতে?
কেন করিস চোখের জল কে সস্তা?
কেন নিস বয়ে জীবনে দুখের বস্তা?
শোন নারী তবে একটা কথা
ভাবিস না তোর ত্যাগের তরে , কেউ খুঁড়ছে নিজের মাথা!
ভাবিস না কারোর কর্ণপটহে, পৌঁছাচ্ছে তোর কষ্টকথা!
ভাবিস না তোর মানিয়ে নেওয়ায়, কারোর কিছু যায় আসে,
সবাই তো বেশ দিব্যি আছে, শুধু তোর জীবনটাই বানে ভাসে!
পরিবারের মেয়ে হয়ে তুই কেন চুপ থাকিস?
কেন বলিস তুই সবার কাছে, সবসময় খুশি আছিস?
ভেতরে ভেতরে লাশ হয়ে তুই বোঝাতে কি পারিস কিছু ?
তাহলে কেন ঘুরিস তুই অবসাদ আর যন্ত্রণার পিছু পিছু?
কেন পাস এত দুঃখ, কার জন্য এত কাঁদিস?
কার জন্য গোটা জীবনটা তুই বিসর্জন করিস?
তোর কথা কে ভাবে রে, তুই যে মরছিস এত?
দেখিসই তো চারিদিকে তোর মতো নারী মরছে কত!
সবাই কিন্তু তোর মতোই করেছিল ত্যাগ, মেনে নিয়েছিল সব
কিন্তু শেষপর্যন্ত তাদের দশা হয়ে দাঁড়াল হয়ে শশ্মানের শব।
কারোর হলো দাহ, কেউ বা হলো বেওয়ারিশ লাশ
পুলিশের খাতায় লিখে এলো, বৌ এর ছিল ক্রাশ।
কাউকে আবার মরতে হলো শ্বশুরবাড়ির হাতে
পুলিশ সুপার জানল তবে আত্মহত্যাই রাতে।
কি হবে করে এমন ত্যাগ যেখানে নেই তোর প্রাণের দাম?
কি হবে তোর এদেরকে ভেবে যেখানে কারোর মনে থাকে না তোর নাম?
পরিবার ভাবে তোর ভাইয়ের কথা, তোর ভাই ভাবে তোর পরিবারের কথা।
শ্বশুরবাড়ি ভাবে তোর বরের কথা, বরও ভাবে তোর শ্বশুরবাড়ির কথা।
তোর মা ভাবে তোর জামাইয়ের কথা, তোর শ্বাশুড়ি ভাবে তার ছেলের কথা।
তাহলে সবাই যখন নিজেদের কথা ভাবছে
তখন তুই তোর নিজের কথা ভেবেই কর না নিজের মাথা ব্যথা।
স্বার্থ শূণ্য হয়ে তো দেখলি জীবনে তোর নেই শান্তি
স্বার্থপর হ এবার, দেখ এবার কিসের কমতি?
যেই দুনিয়ায় তোর সেবা কে দিয়ে তোর আয়ু মাপা হয়
সেই দুনিয়ায় কীসের সেবা, কিসের যত্ন, ওসব কিচ্ছু নয়।
সবাই যখন বহুরূপীর মতো পাল্টাচ্ছে রং
তখন তুই কোমলত্ব দেখিয়ে কেন করিস ঢং?
কেন করিস তুই সবার জন্য নিজের সব ইচ্ছার হত্যা?
কেন তুই কেঁদে বিলিয়ে দিস, নিজের দেবী সত্ত্বা?
শোন নারী অত পড়িস না ভেঙে, থাকিস না লুকিয়ে
অপরাধী দেখলেই তার বুকে দে ছুরি ঢুকিয়ে।
ধর্ষনের সময় বস্ত্র টেনে নির্বস্ত্র করছে তোকে যারা
হাত কেটে তুই ফেলে দিয়ে তাদের, বইয়ে দে রক্তধারা
তোকে যারা মারছে তিলে তিলে তাদের দে একেবারে শেষ করে
তবেই দেখবি পাচ্ছিস সম্মান , পাচ্ছিস ভক্তি মা কালীর মতো করে।
পুরুষের যৌন আক্রমণে ভয় না পেয়ে বসিয়ে দে দাঁতের কামড়
ছিন্ন ভিন্ন করে দে তুই, যেভাবে পুরুষের অত্যাচারে নারীর বের হয় পাঁজর ।
শোন নারী, তুই যতদিন থাকবি কোমল মমতাময়ী
ততদিন পর্যন্ত তোর জীবনে আঁধার থাকবে স্থায়ী
রান্নাবান্নার শেষে যখন ঝলসানো দেহের উপর
ক্লান্তি নয়, ক্রোধ রাখ ধর্ষক স্বামীর উপর।
মুখ বুজে সব সহ্য করা বন্ধ কর এবার
নিজের প্রতিবাদ, নিজের লড়াই এ হয়ে ওঠ দুর্নিবার!
হত্যালীলা, ধ্বংসলীলা শুরু কর তুই নারী
দেখবি সব ওসুর গুলো বলবে, মা তোর পায়ে পড়ি।
ভুলে যায় যারা নারী বসুন্ধরা, নারীই দুর্গা, নারীই কালী
ভারতমাতার ভূমিতে দাঁড়িয়ে কোমলত্ব দেখাস খালি!
দুঃখী হয়ে থাকিস না মা, কাঁদিস না রে আর
রক্ত আগুনে গরম করে চারিদিক ঝলসে দে এবার!
মানুষের পরিচয় পাসনি এখনো, পুরুষের দেওয়া নাম "নারী"
অস্ত্র তুলে খতম কর অন্যায়ের জারিজুরি
চারিদিকে যত পাপের আঁধার মুছিয়ে দে তুই নারী
ও নারী তুই লক্ষ্মী হওয়া ছেড়ে, হয়ে ওঠ এবার কালী!