বৃত্তের বাইরে স্বাধীনতা
বৃত্তের বাইরে স্বাধীনতা
- হটাৎ সুইসাইড করতে যাচ্ছিলেন যে? কি হলো প্রশ্ন করছি উত্তর দিন ঝাঁপ দিচ্ছিলেন কেন??
- আপনার কি?বাঁচাতে গেলেন কেন? আমি চাই না বাঁচতে, মৃত্যুই আমার কাছে একমাত্র পথ।
- শান্ত হন বসুন, ভাগ্নিস ঝাঁপ দেওয়ার আগেই ধরলাম..
- জানেন, আজ কাল কিছু ভালোবাসা ঠিক দাড়িপাল্লা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সম্পর্কে থাকতে হয় বলে থাকছে একসাথে ঘর করেছে, থাকছে, ঘুমোচ্ছে শারীরিক চাহিদা মেটাচ্ছে কিন্তু ভালো বাসছে না। হয়তো ভালবাসছে তবে নিজের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
- বুঝলাম তা আপনি মরতে চলে ছিলেন কেনো?
ওই যে আমার সাহস নেই তাই!
দেখুন জীবন টা আপনার, ভাঙা গড়া সব থাকবে, তবে এখন তো চামড়া টান অনেক কিছুই সহজে পাবেন চেষ্টা
করলে খারাপ সময় ঠিক কাটাতে পারবেন, কিন্তু বয়স বাড়লে না নিজের খেয়াল রাখতে পারবেন না কেও রাখবে।
- হম তবে সবটাই মায়া জানেন তো?
মায়া হয়তো বা, তবে একদিন হাত কেটে ফেলছেন, একদিন পা, রোজ রোজ নিজের শরীর কে এই ভাবে
কারো হাতে তুলে দিতে ভালো লাগে?
লাগতো একসময় এই শরীর টাই তারজন্যে মনে হতো, এই শরীরটার যত্ন নিতাম সুন্দর করে রাখার চেষ্টা করতাম
কিন্তু যতো দিন যায় শরীরের খীদে মেটানো ছাড়া ভালোবাসা চোখে পড়েনি, সংসারে প্রতিদিন বঝগড়া হওয়ার পরে
সেই মানুষটার সাথে আর থাকতে ইচ্ছে করে না, সামান্য সহানুভূতি টুকু তো
- বিয়ে কতো বছর?
- থাক সেসব কথা, কিন্তু এই যে আপনি আমাকে বাঁচালেন, এখন কি করি আমার যে জীবনের সাথে লড়াইয়ের সাহসটাই নেই।
সাহসটাই নেই।
নিজেকে যে মুক্ত করতেই হবে তার জন্য এই সাহস টুকু সঞ্চয় করতেই হবে, যখন ভালো লাগছে না ঘর ছাড়া পাখি হোন না ক্ষতি কি?
বলছেন?
- নিশ্চই, একদিন তো মরবেন এটা তো পাকা, তাই ভাবুন না কিছুদিন আমি আপনাকে উপহার দিলাম।
- আপনি কিন্তু ভালো কথা বলেন জানেন তো, তা আপনি এখানে কি করতে?
- হয়তো আপনাকে বাঁচাতে।
- আরে বলুন না।
- আমার যখন মন খারাপ হয় তখন এখানে এসে বসি, কিন্তু আজ জানলাম আমার থেকেও কেও আছে যার অনেক বেশি মন খারাপ হয়।
- যদি কিছু মনে না করেন জানা যাবে কি ঘটেছিল?
- বাদ দিন সেইসব বিষয়ে কথা নাই বা বললাম আজ। আসলে সবার জীবনেই কোনো না কোনো বিষয়ে খারাপ লাগে, আচ্ছা ছাড়ুন চলুন হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিক টায় যাই, সন্ধ্যে নামছে কে কি বলে আবার।
- গঙ্গার ঘাটে বসে কি সুন্দর মন খুলে গান গাইছে দেখুন,
- হ্যাঁ ঠিক বললেন তো
- গান টা কি ভালো তাই না বলুন,
(রবীন্দ্র সঙ্গীত)
- হম কিনতু sorry to say আমি এই গান আগে কখনো শুনিনি রবীন্দ্র সংগীত তো।
- রবীন্দ্রনাথ কে ভালোবাসেন না?
- নানা তেমন নই, আমিও লিখতে ভালোবাসি, ওনার লেখা ভালোবাসি, গান খুব একটা শোনা হয়না।
- বুঝলাম, শুনুন মশাই মাঝে মধ্যে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনবেন, দেখবেন মন ভালো লাগবে, আচ্ছা আপনি কিন্তু আপনার মনের কথাটা বললেন না, কি ঘটেছে আপনার জীবনে
- অনেক কিছু, সব এক সাথে জানতে নেই।
- ঠিক আছে, গঙ্গার হাওয়া কি দারুন, ভাগ্যিস জল খেতে দেননি, নয়তো ডুবে গেলে হয়ে যেত...
- হা হা চা নাকী ফুচকা?
- আগে ফুচকা টাই চলুন না।
- চলুন তারপরে চা খাবো
- দাদা একটু ঝালটা বেশি দেবেন, আসলে কি বলুন তো ফুচকায় ঝাল না হলে না আমার একদমই চলে না।
- আপনি দারুন তো চোখের জল পড়ছে এদিকে হাসছেন।
by the way হাসলে ভালোই লাগে। চলুন বসা যাক?
- না আজ চলি,
- যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা?
- না আজ থাক আমি করে নেবো, বললেনই তো মন খারাপ হলে এখানে আসেন।
- আচ্ছা কিন্তু আপনার নামটাই তো জানা হলো না আমি হলাম আকাশ।
- আর আমি হলাম পাখি, আর এবারে থেকে বিকেল করে খোলা আকাশে পাখির সঙ্গে গল্প টা কী হবে?
- তাহলে রোজ মন খারাপ হোক আর রোজ আসি!
- তবে আমার আসার কারন টা এবার থেকে অন্য হোক..... (হাসি)।