কৃষ্ণদাসী [পর্ব-৯]
কৃষ্ণদাসী [পর্ব-৯]
।। কৃষ্ণদাসী (পর্ব ঌ) ।।
- পৃথ্থীশ সরকার
আজ সকাল থেকে ই সিংহরায় হাউসে খুব তোড়জোড় চলছে । আজ শুভাঙ্গী র fiancee আসবে এই বাড়িতে । সকাল থেকেই নানা আনন্দ আর হইচই এ মেতে থাকা সত্বেও তমসা আর কৌস্তভ নাম দুটো একবারের জন্যও ভুলতে পারেনি কিশোরী ।
এই ক'দিনে রুহানার আসল রূপ টা শোভন কিশোরী খুব ভালো মতই জেনে গেছে । তবে রুহানার দাদা কাম শুভাঙ্গী র fiancee এই রেহান যে আরো খারাপ তা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেনি কিশোরী । রেহান নিজের কর্মগুণেই নিজের পরিচয় দিয়ে দিল আজ । কিশোরী র তো এখন মনে হচ্ছে .... সৌভিকের সাথে এই রকম স্বভাবের মিল থাকার জন্য ই রেহান এত বছর রাজ্যের বাইরে থাকা সত্বেও বা সমবয়সী না হওয়া সত্বেও দুজনের এত বন্ধুত্ব ....
রেহান আসার পর থেকেই যে ওর কুনজর বারবার কিশোরীর ওপর পড়ছিল ...তা প্রথমে বুঝতে পারেনি কিশোরী । অনেকক্ষণ পর খেয়াল করেছে সে......। অস্বস্তি বোধ করে ও ভিতর দিকে চলে আসার সঙ্গে সঙ্গে ই রেহানও ওয়াশরুমে যাবার নাম করে ভিতর দিকে চলে এল । হঠাৎ করে পিছনে ঘুরে কিশোরী দেখে রেহান পিছনে দাঁড়িয়ে । আশে পাশে যে কেউ নেই......সেই সুযোগ টাই হয়তো কাজে লাগিয়েছে রেহান ।
কিশোরী : কী ব্যাপার ......আপনি এখানে?
রেহান : আমি তো washroom use করতে এসেছি .....
কিশোরী : এটা আমার ঘর....
শোভন : I know....actually ছোট বেলায় এই বাড়িতে এলে আমি , শোভন , সৌভিক আর শুভায়ন দা এই রুম টাই share করতাম ....so অভ্যাস বশতই........
কিশোরী : ওহ.....
বলেই বেরিয়ে যাচ্ছিল কিশোরী ......
রেহান : শোভনের আরো একটা জিনিস ওর সাথে share করে use করলে ....
কিশোরী : মানে .....??
রেহান : কিছু না .....
রুহানা র থেকেও এই রেহান কে বেশি খারাপ লাগল কিশোরী র । এই রেহানকে এত ভালোবাসে শুভাঙ্গী দিদি, আদেও কী এই ছেলে টা ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য ? ও তো প্রথমে ভাবছিল ....শোভন কে এক্ষুনি গিয়ে রেহানের এই সব কীর্তি গুলো বলবে ......কিন্তু এখনো রেহান direct কিছু খারাপ behave করেনি .....তাই আর একবার সুযোগ দেবে ভাবল শোভন কে ।
অনেক দিন বাদে আজ সন্ধ্যায় একসাথে তিন ভাই আর রেহান আড্ডায় বসেছে । উঠে আসছে ওদের ছোটবেলার অনেক হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি । তার ই মাঝখানে একটা অকওয়ার্ড প্রশ্ন করে বসল রেহান -
রেহান : শোভন ....bro ....একটা কথা খুব জানতে ইচ্ছা করছে..... বলেই ফেলি বল.......
শোভন : বল ।
রেহান : Bro .....we all know that you are one of the most popular business bachelor in India.. .... so you have lots of hot and beautiful female fans । তুই বিদেশে যাওয়ার পরেও তুই কখন new pic or post upload করবি ....তার জন্য কত মেয়ে eagerly wait করতো....
শোভন : so what..??
রেহান : না এত options থাকতে bro তুই ঐ কিশোরীকে ........I mean কিশোরী বৌদিকে কেন বিয়ে করলি ?
কিশোরী সৌভিকের ঘরেই আসছিল , কিন্তু আলোচনায় নিজের নাম টা শুনতে পেয়ে বিষয়টা বোঝার জন্য আড়ালে গিয়ে দাঁড়াল ।
❤ শোভন : আমার কিশোরী কে ভালো লেগেছে ....কিশোরী র আমাকে ভালো লেগেছে ....আর after all আমি মনে করেছি আমরা সারাজীবন একসাথে চলার জন্য perfect ....so we've married...
রেহান : Bro , I know she is beautiful.....but ওর কোনো status আছে ....তোর জায়গার অন্য কেউ থাকলে just time pass করে breakup করে দিত.....
শোভন : Bro , for this I am Sobhon Sinha Roy....and I am not any other one....
রেহান : দেখ bro তুই যাই বল .......ওর status এর কথা বাদই দিলাম ...but qualiification কি ওর ?..... only graduation ......তাও আবার distance এ. Should she really deserve you , bro ?
শোভন : দেখ রেহান , ও যে শুধু মাত্র BA pased তাতে আমাদের কারোর ই problem নেই ....because she is a house wife now... ..যদি ও কখনো তার বাইরে কিছু করতে চায় ......ওকে শিখিয়ে নিতে খুব একটা অসুবিধা হবেনা .........আর ওর academic qualification দেখে আমি ওকে ভালোবাসিনি bro ...... highly academically qualified মেয়ে তো অনেক পাওয়া যেত .......but .কিশোরী র মত ভালো মন হয় তো আজকের দিনে খুবই rare....so you can say that মানবিক qualification টাতেই I have given more impotance .....so I love her ...very much.......
শোভন যে কিশোরী কে ঠিক কতটা ভালোবাসে ......আর শোভন যে কিশোরী র প্রতি কতটা protective .....কিশোরী সহ সবাই তার পরিচয় পেল আবার । কিশোরী এই আনন্দের হিমবাহ জাত অশ্রুধারা কে আর সামলাতে পারল না । নিজের জীবন কে আজ আরো দামি আর সম্মানের মনে হচ্ছে ওর । আজ পর্যন্ত এত সম্মান ওকে কেউ দেয়নি, " ধন্যবাদ রাইমুরারী....তোমাদের দূত বানিয়ে ছোটসাহেব কে আমার জীবনে পাঠিয়েছো ...."❤
Background Music of ❤marked part :
Na kuch pucha , na kuch manga
Tune dil se diya jo diya
Na kuch bola , na kuch tola
Muskurake diya jo diya
Tu hi dhup tu hi chaya
Tu hi apna paraya
Aur kuch na janu
Bas itna hi manu
Tujhme Rab Dikhta he Yaara me kya karu.....
আজ কিশোরী ঠিক করেই রেখেছে আজ স্বপ্নে ঐ তমসা আর কৌস্তভের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবে । কিন্তু এসব চিন্তায় এখনো ঘুমই আসছে না ওর ....। কিন্তু ঘুম না এলে যে স্বপ্নও আসবে না । জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করল কিশোরী। না এখনো আসছে না । কিশোরী মনে মনে ভাবল, ঘুম যখন আসছেই না , তাহলে একবার নিচতলায় ঠাকুরদালানে গিয়ে একবার রাইমুরারীকে ডাকার চেষ্টা করা যাক ।
নীচে নেমে আগে দেখে নিল কিশোরী.......হ্যাঁ , কাকীমণির ঘর , শুভাঙ্গীর ঘর আর রুহানা-রেহানের গেস্ট রুমের আলো বন্ধ । তারমানে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে । ঠাকুরদালানের দিকে চলে গেল কিশোরী । হঠাৎ ই পিছন থেকে কে যেন ওর হাত টা টেনে ধরল ....
কিশোরী (পিছন ঘুরে ) : রেহান বাবু আপনি ...?
রেহান : Yes sweetheart ....
কিশোরী : হাতটা ছাড়ুন ....আমি নয়তো এক্ষুনি সবাই কে ডাকব ......
রেহান : ডাকো sweet heart.....ভুলে যেওনা তুমি নিচতলায় এসেছো .....এত রাতে .....সবাই তো ভাববে তোমারই কোন মতলব ছিল ....আমি তো সবাইকে তাই বলব .....
কিশোরী : বাড়াবাড়ি করবেন না .....হাতটা ছাড়ুন .....
রেহান : শুনলাম এর আগে সৌভিক ও নাকি তোমার হাতটা ধরেছিল ......তখন তো কেউ জানতে পারেনি ..........সৌভিক আর শোভনের মধ্যে এমন কী আছে , যা আমার নেই ....???
কিশোরী : ছি: এত খারাপ মানসিকতা ....সৌভিক এই গুলো ও বলেছে আপনাকে ....
রেহান : তোমাদের personal matter বুঝি sweet heart ??
কিশোরী : সৌভিক কে আমি ভাই এর স্থান দিয়েছিলাম......তাই কাউকে কিছু জানাইনি .....হাতটা ছাড়বেন না তো..........( মনে মনে ) রাধা কৃষ্ণ মহানাম মহিমা অপার, আমার হাতের স্পর্শ হোক যেন জ্বলন্ত অঙ্গার ।
সঙ্গে সঙ্গে হাত ছেড়ে দিল রেহান ।
রেহান : So hot.....
কিশোরী : কী ??
রেহান : My hot sweetheart....
আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে ওপরে চলে এল কিশোরী । ওর ইচ্ছা করছিল তক্ষুনি শোভন কে রেহানের সব কথা গুলো বলে দিতে । কিন্তু শোভনের নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকা মুখ টা দেখে ওর ঘুম ভাঙাতে আর ইচ্ছা করল না কিশোরীর । কাল সকালেই বলবে সবকিছু ।
তারপর বিভিন্ন কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে কিশোরী ....তা ওর খেয়ালও নেই । আজও স্বপ্নে ও দর্শন পেল রাইমুরারীর....
কিশোরী : তোমরা এটা তো বলো কে এই কৌস্তভ আর কে এই তমসা?
শ্রীকৃষ্ণ : সবকিছুর নির্দিষ্ট সময় আছে কিশোরী । আর আমরা তোমাকে তমসার বিষয়ে শুধু এই টুকু বলতে পারি যে .......ও এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি আর তোমার সবচেয়ে বড় শত্রু । আর ও কে ..... কী ওর বাকি পরিচয় .. ..তা তুমি নিজেই সময়ের সাথে সাথে ই জানতে পারবে .....
কিশোরী : আমার শত্রু কেন ? আর কৌস্তভের বিষয়ে তো কিছু ই বললে না......
শ্রীরাধা : কৌস্তভ কে জানতে হলে আর তমসার সাথে তোমার শত্রুতার কারণ জানতে গেলে তোমায় তোমার অস্তিত্ব কে বুঝতে হবে.......তোমার আসল পরিচয় তোমাকে মনে করতে হবে ......
কিশোরী ( বেশ অবাক হয়ে) : আমার আসল পরিচয় .....???
( .......ক্রমশ)
এটি একটি ধারাবাহিক গল্প, এর বিষয়বস্তু:
মন্দিরে পালিত কিশোরী বড় হওয়ার সাথে সাথে উপলব্ধি করেছে তার ঐশ্বরিক সংযোগ ।ভাগ্য ওকে মন্দিরের আঙিনা থেকে নিয়ে এল জমিদার বাড়ির অন্দরমহলে।কিন্ত হঠাৎ ই ঘটল ওর অকালমৃত্যু।কে ছিল এই খুনের পিছনে?এই শত্রুরা লৌকিক জগতের না অলৌকিক জগতের?কে নেবে এই মৃত্যুর প্রতিশোধ?সব উত্তর পেতে পড়ুন ভালোবাসা , রহস্য আর অলৌকিকতায় ভরা এই ধারাবাহিক গল্প "কৃষ্ণদাসী"।