Rashmita Das

Horror Thriller

4  

Rashmita Das

Horror Thriller

পাপস্খলন পর্ব ২

পাপস্খলন পর্ব ২

2 mins
21


আমি হাঁ হয়ে দেখতে থাকলাম,আমার বলপ্রয়োগের তীব্রতার সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে কুঠুরির দরজা যান্ত্রিক ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ সহকারে উন্মোচিত হচ্ছে।এইভাবে আমি কুঠুরির পুরো দরজাটাই খুলে ফেললাম। এবার আমি কুঠুরির ভিতর আমার অপ্রতিরোধ্য কৌতূহল নিয়ে দুচোখের দৃষ্টি যতটা দূরে যায় প্রসারিত করার চেষ্টা করলাম৷ কিন্তু হঠাৎ করে এইরকম একটা ঝটকা খাব এটা আমি সত্যিই দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।একটা বীভৎস দুর্গন্ধ যেন আমায় মৃত্যুর ন্যায়ে শ্বাপদের মতো গিলতে এল যা আমার এই এক জন্মের কেন,গত সাত জন্মের আন্নপ্রাশনের ভাত আমার নাড়িভুড়ি টেনে ছিঁড়ে বার করে নেবে।কিন্তু আমিও নাছোড়বান্দা। এত ঝঞ্ঝাটের পর যখন সামনে এইরকম একটা রাজারাজড়ার আমলের রহস্যময় চোরাকুঠুরির খোলা দরজার সামনে দাঁড়িয়েও স্রেফ দুর্গন্ধের কারণে আমি বেমালুম সরে পড়ব এটা আমি কিছুতেই মন থেকে মানতে পারছিলাম না।মনটা একটু শক্ত করে...মনে জোর এনে পুনরায় আমি দৃষ্টি ফেললাম কুঠুরির উন্মুক্ত দরজাতে।

হঠাৎ রীতিমতো অপ্রত্যাশিতভাবে কুঠুরির উন্মুক্ত দরজা থেকে দুর্গন্ধের লেশটুকুও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়ে সেখান থেকে দমকা হাওয়ার মতো নির্গত হতে শুরু করল পাগল করা নেশাতুর এক মিষ্টি সুবাস।আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুধু কুঠুরির ভিতরে ঢোকার রাস্তা খোঁজার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলাম।

মাথাটা একটু ঝোঁকাতে দেখলাম,সূর্যের আলো যেন সহস্র যুগ ও সহস্র অন্ধকার পার করে যেন জীবনের দিশা দেখানোর জন্য কুঠুরির দরজার ভিতরে আলগোছে প্রবেশ করেছে।ওই আলোতে আবছাভাবে প্রত্যক্ষ করলাম। একটা সিঁড়ির উপস্থিতি যা নীচের দিকে নেমে গিয়েছে।আমি কালবিলম্ব না করে ওই সিঁড়িতে পা দিয়ে নীচে নামার জন্য উদ্যত হলাম।মনের ভিতরে যাবতীয় সংকোচ,পিছুটান ধূলার ন্যায়ে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে আমি আস্তে আস্তে করে কুঠুরির দরজা ও সিঁড়ির রাস্তার ভারসাম্য ঠিক রেখে ধীরে ধীরে ভয়ে ভয়ে একধাপ একধাপ করে নীচে নামতে শুরু করলাম।বুকের ভিতর যেন কামার বসে বসে হাতুড়ি পিটছে।আমি মোবাইলের টর্চ জ্বেলে আস্তে আস্তে প্রবেশ করতে লাগলাম রহস্যের অতল প্রান্তরে।

অবশেষে পা দানির কোটা পূরণ করে আমি পা রাখলাম ভূগর্ভস্হ ভূমিতে।মোবাইলের আলো ফেলে যা দেখলাম তাতে আমার চক্ষু একেবারে চড়কগাছ।বিস্ময় তার চোরাস্রোতের একেবারে মোহনায় পৌঁছে তার এই সুতীব্র জলোচ্ছ্বাসের দ্বারা আমায় যে এইভাবে স্তব্ধ করে দেবে আমি তা কল্পনাতেও আনতে পারিনি।

আমি চারপাশে দেখলাম,প্রায় শ খানেক স্বর্ণমুদ্রাপূর্ণ ঘড়া।কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়িয়ে রইলাম শুধু। কিয়ৎক্ষণ পর মস্তিষ্কের অজানা কন্ট্রোলরুমের চালিত রোবটের ন্যায়ে আমি দ্রুত মোহরের ঘোড়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকলাম। হঠাৎ আমায় গায়ে তীব্র গতিতে কিছুটা তরলপদার্থ ছিটকে আসার মতো সুতীক্ষ্ণ একটা স্পর্শ অনুভব করলাম।টর্চের আলো ফেলতেই আমার চক্ষুস্হির!আমার কনুইএর কাছে লেগে আছে একফোঁটা টাটকা রক্ত।আমি চিৎকার করে উঠলাম। কে!কে!

উত্তরে পেলাত শুমারি নৈঃশব্দ্যতার লেলিহান আস্ফালন।আর প্রায় সাথে সাথেই অনুভব করতে আরম্ভ করলাম,আমার সারা শরীরে পিচকিরির মতো তাল তাল রক্ত দিয়ে উন্মাদের ন্যায়ে কেউ স্নান করিয়ে দিতে উদ্যত হয়েছে। আমি তখন মোহরের মায়া ত্যাগ করে সেই অন্ধকূপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলাম।পশ্চাতে ফিরে যেই বেরোনোর জন্য অগ্রসর হব তখন তাড়াহুড়োয় আমার মোবাইলটা কিসে যেন ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে গেল।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror