Purnabrata kobita ghor

Abstract Horror Thriller

3.2  

Purnabrata kobita ghor

Abstract Horror Thriller

প্রেম হারা

প্রেম হারা

9 mins
233



লতা খুব জোরে হাটছিলো , রোহিত লতা কে ধরতেই পারছিলোনা। রোহিত বললো লতা ওই দিকে যেওনা, ওই দিকে জঙ্গল আরো বেশি ঘনো। তার মধ্যেই লতা পৌঁছে গেলো সেই ঘনো জঙ্গলের দিকে । রোহিত তাড়াতাড়ি ছুটে গিয়ে দাঁড়ালো লতার পাশে । 


আসলে লতা আর রোহিত হলো নব দম্পতি। সবে ৩ মাস হলো তাদের বিয়ে হয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছর ভালোবাসার পরে তাদের বাবা মা তাদের সম্মতি সহ তাদের বিবাহে মত প্রদান করেছে । তারপর তাদের শুভ বিবাহের পরিণয়ের পর আজ তারা হাজারীবাগ এ এসেছে হানিমুনে। হাজারিবাগের রিভার ফরেস্ট বাংলো বাড়িতে তাদের এক আত্বিয়ের সুপারিশে বুকিং পেয়েছে ওরা। কলকাতা থেকে নিজেদের গাড়িতে করে বেরিয়ে পরে তারা। রোহিত ড্রাইভিং করতে খুব ভালোবাসে। তাই বাড়ির সবাই বারণ করা সত্ত্বেও তারা নিজেদের প্রাইভেট গাড়ি তেই পারি দিলো হাজারীবাগ। কিন্তু গন্ডগোল হলো রাস্তায় একজায়গায় জন বিক্ষোপের ফলে তারা অনেক টা দেরি করে পৌঁছলো সেই বাংলোতে। বাংলোর কম্পাউন্ডা এ গাড়ি দাঁড় করানোর সাথে সাথে একজন লোক এসে তাদের মাল পত্র বাংলোর ভিতর নিয়ে গেলো। ম্যানেজার বাবু এলেন উনি বাঙালি। জানতে চাইলেই যে তাদের এতো দেরি কেন হলো এখানে আস্তে। রোহিত বললো সেই অবরোধের কথা।


তারপর ম্যানেজার বাবু নিজে তাদের নিয়ে গেলেন রুমে। সব কিছু বুঝিয়ে তিনি চলে আসছিলেন । কিন্তু হঠাৎ তিনি ফিরে এসে আস্তে কিন্তু দৃঢ় স্বরে বললেন , উত্তর দিকের জানালাটা রাতের বেলায় খুলবেন না । রোহিত জানতে চাইলো কেন ? লতাও জিনিস গোছানো ফেলে তাদের কথা শুনতে লাগলো । ম্যানেজার বাবু বললেন ও কিছুনা। আসলে ঠান্ডা ভালোই পড়েছে , আর এখানে গন্ধ গোকুলের খুব উপদ্রপ। আর বড়ো খোলা জানালা,কোথায় কি ঢুকে যাবে তাই । রোহিত আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো । কিন্তু ম্যানেজার বাবু যেন সেই কথা বুজতে পেরেই আগে ভাগেই যেন চলে গেলেন। যাই হোক সেই রাতে লতা ও রোহিত দুজনেই খুব ক্লান্ত ছিল লম্বা সেই গাড়ি জার্নির জন্য । তারা দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম থেকে উঠে রোহিত দেখলো লতা আগেই ঘুম থেকে উঠে ঘরের সব জানালা গুলো খুলে দিয়েছে আর এক ঝাঁক আলো ও হাওয়া এসে ঘরটাকে ভরিয়ে দিলো । আর সেই উত্তরের জানালার দিকে বিভর ভাবে তাকিয়ে আছে লতা ।


লতার কাছে গিয়ে রোহিত দাঁড়ালো , লতা কিছু বুঝেই পারলো না যেন ।রোহিত দেখলো লতা এক ভাবে তাকিয়ে ছিল সেই জঙ্গলের দিকে । রোহিত লতার কাঁধে হাত দিতেই লতা চমকে উঠলো। রোহিত বলল কি হয়েছে কি দেখছো এই ভাবে । লতা বলল কি সুন্দর দেখো এই নদী ওই দুরের জঙ্গল । রোহিত ও তাকালো সত্যি কি সুন্দর দৃশ্য দেখে রোহিতের মন ভরে গেলো। বাংলোর রিভার ফরেস্ট নাম টা কিন্তু সত্যিই সার্থক। ফরেস্ট বাংলো থেকে নদী ও জঙ্গল দুটোরই দেখা মেলে । লতার তো ফরেস্ট বাংলো তে এসে আনন্দ আর  ধরেনা , তাও যেন রোহিত লতার মধ্যে একটা আনমনা ভাব লক্ষ করলো । রোহিত ভাবলো হয়তো এই গাড়ি জার্নিতে লতা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে । যাই হোক এই সব ভুলে ওরা তাকিয়ে রইলো জানালার বাইরে । তারা দেখলো উত্তরে জানালার নিচ দিয়ে বয়ে গেছে একটা খরস্রোতা নদী । সেই নদীর জল নানা রকম পাথরে বিঁধে বয়ে চলেছে এক অদ্ভুত সুন্দর শব্দের ঢেউ তুলে। আর সেই নদীর ওপারেই শুরু হলো গভীর জঙ্গল। দেখে মনে হলোনা যে ওই জঙ্গলে কেউ যায় বলে। এমন সময় হোটেলের একজন লোক চা নিয়ে ঘরে দিয়ে গেল। লতা চায়ে চুমুক দিয়ে আহঃ বলে একটা শব্দ করে বললো । তোমার কাকাবাবু কে ধন্নবাদ জানাই এতো সুন্দর জায়গায় আমাদের থাকার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। তার পর লতা বলে আমরা বেড়াতে বেড়োবো কখন। রোহিত খুব আনন্দ পেলো এই কথা শুনে । এমন সময় ম্যানেজার বাবু এসে পড়েন। দুজন কেই উদ্দেশ করে প্রশ্ন করেন। রাতে কেমন ঘুম হলো । রোহিত বললো খুব ভালো। এখানকার আবহায়া খুব সুন্দর ও মনোরম। ম্যানেজার বাবু বললো এটাই তো এখানকার স্পেশালিটি আছে। দেখবেন না কেমন বাড়ে বাড়ে খিদে পায়ে । রোহিত বললো সে না হয় হলো , কিন্তু কাকাছাকাছি দেখার কি কি আছে সেটা তো বলুন। ম্যানেজার বাবু বলেন সে নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না। আমাদের জিপ গাড়ি আছে , ড্রাইভার যিনি তিনি এখানকার খুব ভালো গাইড। আপনাদের সব কিছু দেখিয়ে দেবে। আপনাদের নিরাপত্তা ও থাকবে ওর সাথে থাকলে। রোহিত বলে কেন ? ম্যানেজার বাবু বলেন এখানে বাঘ বেরিয়ে পরে মাঝে মাঝে । তাছাড়া পাগলা হাতির দল মাঝে মাঝে চলে আসে। তাই কাছে পিঠে ছাড়া , দূরে কোথাও গেলে জিপে করেই যাবেন বাবু। রোহিত বললো ওই নদীর ওপারে যে জঙ্গলটা আছে। ওখানে কি আছে। ম্যানেজার বাবু বলেন ওই জঙ্গলটাতে কেউ যায়না। বোন বিভাগ থেকে ওই জঙ্গলে যাওয়া অনেক দিন আগে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়া ওই জঙ্গলের সব রাস্তায় বন্ধ হয়ে গেছে। যাওয়ার কোনও উপায় নেই। লতাও মন দিয়ে সব কথা শুনছিলো আর তার মনে ওই জঙ্গলটাকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছিলো। এই সব ভাবছিলো লতা । এমন সময় রোহিত আসে ডাকে তাকে লতা যেন আবার কেমন অন্য মনস্ক হয়ে পরে । রোহিতের ডাক সে শুনতে পায় না । রোহিত লতাকে জোড়ে ডাকে লতা চমকে ওঠে , তাকিয়ে রোহিত কে দেখতে পায় । রোহিত এসে তারা দেয় লতাকে কিগো ঘুরতে যাবে না। এই তো বলছিলে যে কখন ঘুরতে নিয়ে যাবে। ম্যানেজার বাবু ওখানেই ছিলেন উনি বলেন । তাহলে আপনারা তৈরী হয়ে নিন আমি গিয়ে বাহাদুর কে গাড়ি বার করতে বলি। রোহিত বলে বলবাহাদুর কে ? ম্যানেজার বাবু বলেন আপনাদের ড্রাইভার টু গাইড। এই বলে ম্যানেজার বাবু চলে গেলেন। যথারীতি ঠিক আটার সময় রোহিত লতা তৈরী হয়ে নেমে এলো। ওরা এসে দেখে যে ব্রেকফাস্ট ও রেডি খাবার টেবিলে। ম্যানেজার বাবু বললেন ব্রেকফাস্ট করে আপনারা বেরিয়ে পরুন। তাহলে লাঞ্চের আগে ফিরতে পারবেন। এর মধ্যই বাহাদুর ও এসে গেলো গাড়ি নিয়ে। বাহাদুর এসে বললো রাম রাম ম্যানেজার বাবু। আর রোহিত আর লতা কে দেখে বললো এই সাহেব আর দিদিমনি যাবেন বুঝি। ম্যানেজার বাবু বললো হ্যা। তুই কিন্তু সব কিছু ভালো করে ঘুরিয়ে বারোটার মধ্যে এখানে পৌঁছে দিবি এনাদের। বাবাদুর বলে জি সাব। এর মধ্যে রোহিত আর লতার ব্রেকফাস্ট হয়ে গিয়েছিলো। রোহিত ও লতা দুজনেই গিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো । বাহাদুর গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাংলোর ফটক দিয়ে চলে গেলো দূরে। বাহাদুর খুব মিশুকে মানুষ দেখা গেল। আর ও অনেক কিছু যে জানে এই হাজারীবাগের বিষয়ে তাও বোঝা গেলো। সব জায়গায় গাড়ি থামিয়ে বাহাদুর সেই জায়গার বিশেষত্ব বুজিয়ে দিতে থাকলো রোহিত ও লতা কে। বাহাদুর বাংলা পরিষ্কার না বলতে পারলেও যা ও ভাঙা ভাঙা বাংলা বলছিলো তাতে তাদের বুঝতে কিছুই অসুবিধা হচ্ছিলো না। কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাহাদুরের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়ে ওঠে। এই ভাবে ফেরার পথে। তারা এক নদীর ধারের রাস্তা দিয়ে ফিরতে থাকে তারা। কি সুন্দর সেই নদী এঁকে বেঁকে দূরে চলে গেছে। লতা বললো এই নদীটার নাম কি বাহাদুর। বাহাদুর বললো এই নদীর নাম প্রেম হারা দিদিমণি । আপনাদের ফরেস্ট বাংলোর উত্তর দিক দিয়ে যে নদী দেখা যায় , ইহা ওই নদী খান আছে বটে।। রোহিত বলে প্রেম হারা নাম কেন। এমন নাম তো শুনিনি কোনোদিন। আসলে বাবুজি এই নদী আর ওই যে জঙ্গল , এর অনেক গল্প আছে বাবুজি। আর এই গল্প আপনাদের ওই ফরেস্ট বাংলোকে নিয়েই। কিন্তু এই কথা আমার বিশ্বাস হয়না বাবু। রোহিত বলে কি হয়েছিল কিসের গল্প বোলো । বাহাদুর বলে ও কিছু নয় বাবু পুরোনো কথা যত সব। লতা বলে বাহাদুর দা তুমি বোলোনা গো আমরা শুনবো । বাহাদুর বলে ঠিক আছে দিদিমনি । এই বলে বাহাদুর বলা শুরু করলো। 


অনেক দিন আগে নাকি এক নব দম্পতি হাজাবারিবাগের এই ফরেস্ট বাংলোতে ঘুরতে এসেছিলো। তারা তিন দিন ছিল এই বাংলোতে। কিন্তু চতুর্থ দিনে হঠাৎ রাতে , তখন প্রায় মাঝ রাত। একদল লোক আসে সেই বাংলোতে আর সেই ছেলে আর মেয়েটির নাম ধরে বার বার চেঁচাতে থাকে। লোকগুলো এমন ভাবে তাদের খুঁজতে থাকে যেন খুঁজে পেলেই সেই ছেলে আর মেয়েটির শেষদিন। সেই যে আক্রোশ ছিল তাদের মধ্যে । সবাই বুঝে গিয়েছিলো যে আজ কিছু একটা হতে চলেছে। সেই ছেলেটির নাম ছিল প্রেম আর মেয়েটির নাম ছিল মনিহারা । সেই ডাকাডাকি শুনে ওই ছেলে আর মেয়েটি ওই বাংলোর এক উত্তর মুখী জানালা দিয়ে দড়ি দিয়ে নিচে নেমে নদী পেরিয়ে ওই জঙ্গলে যায় প্রাণ বাঁচাতে। সেটা দেখে ফেলে সেই আগুন্তুক লোক গুলির মধ্যে একজন। পরে জানা যায় সেই লোক গুলি ছিল ওই মেয়েটির বাবার পোষা গুন্ডা। ছেলেটি মেয়েটিকে ভালোবাসতো আর তাকে নিয়ে পালিয়ে এসেছিলো হাজারীবাগে। মেয়েটির বাবা ছিলেন অনেক ধোনি তাই তিনি চাইছিলনা যে তার মেয়ে ওই ছেলেকে বিয়ে করুক। আর বাবার অমতে বাড়িতে থেকে সেই ছেলের সাথে চলে আসার জন্য। আজ এই গুন্ডা জাতীয় লোক গুলোর আজ আবির্ভাব। সেই যে লোকটি দেখে ফেলেছিলো প্রেম আর মণিহারা কে ওই জঙ্গলে যেতে। তখনি তারা সবাই মিলে প্রবেশ করে সেই জঙ্গলে। আর ঘিরে ফেলে ওই ছেলে ও মেয়েটিকে। আর মেয়েটির চোখের সামনে সেই লোকগুলো পিটিয়ে মেরে ফেলে ওই ছেলেটিকে। আর দেহটা ভাসিয়ে দেয় ওই নদীর জলে। সেই দেখে মণিহারাও লাফিয়ে পরে ওই নদীতে। আর ওই খরস্রোতা নদীর পাথরে আঘাত পেয়ে সেও নদীর জলে যায় ভেসে। এক সাথে শেষ হয়ে যায় দুটি প্রাণ। সেই থেকে এই নদীর নাম হয়ে যায় প্রেমহারা। সোনা যায় নাকি আজও মাঝ রাতে এখনো ওই জঙ্গলে দেখা যায় ওদের সোনা যায় ওদের কান্না। এই গল্প করতে করতে তারা চলে আসে বাংলোতে । বাহাদুরের গল্পে রোহিত আর লতা এমন ভাবে হারিয়ে গিয়েছিলো যে সময়ের কথা মনেই ছিলোনা। আরো হয়তো খানিকটা বাকি ছিল গল্পের , কিন্তু ফরেস্ট বাংলোর গেট টা যখন দেখা দিলো দূর থেকে। তখন বাহাদুর বলে উঠলো ওই যে বাবুজি আমরা চলে এসেছি বাংলো দেখা যাচ্ছে। রোহিতের মনে হয় কিছু আরো বাকি ছিলো ওই গল্পের যা বাহাদুর বল্লোনা । বাহাদুর তাদের বাংলোতে নামিয়ে দিয়েই গাড়ি ঘোরাচ্ছে। রোহিত বললো আর কিছু কি বাকি ছিল বাহাদুর গল্পটার। বাহাদুর থতমত খেয়ে বললো না বাবুজি । এই বলেই সে চলে গেলো গাড়ি নিয়ে। লতা যেন এর পর থেকে কেমন চুপচাপ হয়েগেলো। রোহিত বুঝতে পারলোনা যে লতা কি ভাবছে। তারপর সেই সব মাথা থেকে জেরে ফেলেদিয়ে । রোহিত লতাকে বললো চলো গো খুব খিদে পেয়ে গেলো যে। লতা উত্তরে শুধু হু বললো। বিকালে রোহিত আর লতা হাঁটতে বেড়োলো সেই নদীর দিকেই । দেখা গেলো যে যত তারা নদীর কাছে যেতে থাকলো রাস্তা ততই উঁচুনিচু পাথুরে। একটা ছোট পাথরে হোঁচট খেয়ে তো লতা পরেই যাচ্ছিলো , রোহিত তাড়াতাতি করে ধরে ফেললো লতাকে। আর বললো কিগো লতা দেখে শুনে চলো যদি পরে যেতে কি হতো বলতো। লতা তখন অদ্ভুত ভাবে আর এক অদ্ভুত গলায় বলে উঠলো , কেন তুমি তো আছো আমাকে ধরার জন্য। তুমি আমায় ছেড়ে কোথায় যাবেন না আমি জানি । আমার মনে হলো সে গলা লতার গলা নয়। তারপর লতা হেসে উঠলো আর আমার মাথায় আলতো ভাবে হাত বুলিয়ে নেমে পরে সেই খরস্রোতা নদীর মধ্যে। আমি ওকে ডাক দিলাম লতা নেমোনা। কিন্তু সে আমার কোনো কথা শুনলনা , শুধু হেসে উঠে আমাকে বললো আমাকে ধরো দেখি। আমি ভাবলাম ও হয়তো আমার সাথে মজা করছে। আমিও নামলাম জলে হাঁটুর একটু নিচ পর্যন্ত জল। আমি এগিয়ে গেলাম লতার দিকে। দেখি আমাকে দেখে লতাও এগিয়ে যেতে থাকলো নদীর ওপারে জঙ্গলের দিকে। এদিকে সূর্য প্রায় ডুবে গাছে বললেই চলে। আমি দেখলাম যে লতা নদী পেরিয়ে ওই বিশাল ঘন জঙ্গলটার মধ্যে যাচ্ছে। আমি প্রাণ পনে এগোতে লাগলাম আর চেঁচাতে থাকলাম লতা যেওনা ওদিকে গভীর জঙ্গল তুমি যেও না। কিন্তু লতা যেন আমার কোনো কোথাই শুনতে পেলোনা। লতা সে ওই জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে গেলো। আমিও তাড়াতাড়ি নদী পেরিয়ে গেলাম ওই জঙ্গলের মধ্যে। আর গিয়ে দেখতে পেলাম এক অপূর্ব দৃশ্য। জন্মে একটা সুন্দর বিস্তীর্ণ জলাশয় চাঁদের আলোয় সেই জল জলমল করছে। আর সেই জলাশয়ের ঘাটে বাধা একটা নৌকা। আর তাতেই বসে আছে লতা । হাসি মুখে চেয়ে আছে আমারি দিকে। আমাকে হাত নেড়ে ডাকলো সে । আমি গেলাম তার কাছে। আমাকে সে বললো আমাকে জলাশয়ে ঘোড়াবে না তুমি। জানিনা আমার আমার কি হয়েছিল , আমি বললাম হ্যা। এই বলে আমি নৌকোতে উঠে দাঁড় টানতে থাকলাম। নৌকো চলে এলো মাঝ জলাশয়ে। লতা হাত ডুবিয়ে জলাশয়ের তুলে গিয়ে হঠাৎ যেন কি ভাবে পরে গেলো জলে। আর বলতে থাকলো আমাকে বাঁচাও রোহিত আমি ডুবে যাচ্ছি। তখন যেন আমার ঘোর কাটলো। আমি লতা কে দেখে বলতে থাকলাম লতা আমি তোমাকে কিছু হতে দেবো না। চারিদিকে চাইতে লাগলাম কিন্তু কেউ কোনো দিকে নেই। কিন্তু রোহিত ও যে সাঁতার জানতো না লতারই মতো। তখন রোহিত বলে তুমি বলেছিলে না লতা আমি তোমাকে সব সময় ধরে ফেলবো , তোমাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবনা । আমি তোমার কিছুই হতে দেবোনা। আমি তোমাকে আজ বাঁচাতে না পারি আমিও তোমার সাথেই মরবো লতা। এই বলে রোহিত জাপিয়ে পরে জলে। জড়িয়ে ধরে লতাকে লতাও জড়িয়ে ধরে আর দুজেই কাঁদতে থাকে। এখন যেন রোহিতের মনে হল এই তার আসল লতা। এই ভাবে আস্তে আস্তে তারা তলিয়ে গেলো সেই জলের নিচে। শেষ হয়ে গেলো আরো দুটো জীবন , যেমন হয়েছিল প্রেম আর মণিহারার।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract