Sucharita Das

Abstract Romance Classics

4  

Sucharita Das

Abstract Romance Classics

শরতের শিউলি(শরৎ কাল)

শরতের শিউলি(শরৎ কাল)

8 mins
814


 মালিনী রোজ ঘুম থেকে উঠে নিজের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ। ওর ব্যালকনির ঠিক উল্টো দিকে একটা অনেক দিনের পুরানো আমলের বাড়ি আছে।খালিই পড়ে আছে বাড়িটা বহুদিন যাবৎ। বেশ অনেকটাই জায়গা জুড়ে বাড়িটা। আর সবথেকে ভালো লাগে মালিনীর, ওই বাড়ির বাগানের শিউলি গাছটাকে। কি সুন্দর সাদা ফুল চাদরের মতো বিছিয়ে পড়ে থাকে গাছের তলায় ভোরবেলা। আর কি মিষ্টি গন্ধ। যেন শরতের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে এই ফুলগুলো। মালিনী আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে পেঁজা পেঁজা তুলোর মতো মেঘেদের। শহর থেকে একটু দূরে এই মফঃস্বল এলাকায় প্রকৃতিকে বেশ কাছ থেকে অনুভব করা যায়। প্রত্যেকটা ঋতুর মাহাত্ম্য আলাদাভাবে অনুভব করা যায় যেন। শহরের ইঁট, সিমেন্টের ইমারতের আড়ালে তা কখনোই হারিয়ে যায় না। সৌমিত্র যখন এই জায়গায় ফ্ল্যাটটা নেবার আগে মালিনীকে দেখাতে এনেছিল, মালিনী একবার দেখেই হ্যাঁ বলে দিয়েছিল। এখানে শহরের সুযোগ সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে গ্ৰামের পরিবেশের আনন্দও উপভোগ করা যাবে এই ভেবে।  


সেদিন মালিনী ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে রোজকার অভ্যাসমতো ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সদ্য ঝরে পড়া সতেজ শিউলির সুগন্ধকে অনুভব করছিল। হঠাৎই ওর চোখে পড়ে উল্টোদিকের বাড়িটার ছাদে একজন বয়স্ক মহিলা ঘোরাঘুরি করছে। মালিনী ভাবলো, তবে কি বাড়িটা ভাড়াতে দিয়ে দিয়েছে । ওই বাড়ির ভদ্রমহিলা তো বহুদিন আগে তার স্বামী মারা যাওয়ার পরই ছেলের সঙ্গে বাইরে চলে গিয়েছিল। মালিনীর অবশ্য এসব কথা জানবার কথা না। কারণ এমনিতেও তাদের ফ্ল্যাটে সবাই যে যার নিজের নিজের মতো থাকে। কারুর ব্যাপারেই কেউ কোনো অযথা কৌতুহল দেখায় না। সামনে দেখা হলে ওই একটু সৌজন্য মূলক হাসির বিনিময় হয়। ব্যস এর বেশী কিছু না। মালিনী ওই বাড়ির সব কথা তার কাজের মেয়ে মালতীর থেকেই জানতে পেরেছে। তার মা নাকি ওই বাড়িতে বহুদিন কাজ করেছিল। মালিনী মনে মনে ভাবলো, কই গত কালও তো মালতী এত বকবক করছিল তার সঙ্গে, কিন্তু ওই বাড়িতে যে কেউ এসেছে সেকথা তো একবারও বলেনি। তবে কি জানে না সেও।



বেলার দিকে মালতী কাজে এসেই বলে, "ও বৌদি জানোতো তোমার ব্যালকনির উল্টোদিকে যে পুরোনো বাড়িটা আছে, ওই বাড়ির মাসিমা কাল ফিরে এসেছে। তার নাকি আর ছেলের বাড়ি থাকতে ভালো লাগছে না ওই শহরে। বলেই মালতী শুরু করলো," শোনো বৌদি ওই মাসিমা যতই বলুক, আমার তো মনে হয় আসল সত্যিটা অন্য কিছু। হয়তো ছেলের বৌয়ের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছে দেখো, আর তাই ফিরে এসেছে এখানে।" মালিনী একটু ধমক দিয়েই মালতীকে বললো,"সব কথার অত ভিতরে যাবার তোমার কি দরকার আছে মালতী। থাক না যে যার মতো করে ভালো। ভালো থাকার অধিকার তো সবারই আছে বলো। আর সব কথার খারাপ মানে বের করতে নেই। মাসিমা তো এতকাল ছেলের বৌয়ের সঙ্গেই থাকতেন। হয়তো ওনারই ইচ্ছায় উনি এসেছেন এখানে।" মালিনীর কথায় মালতী একটু অসন্তুষ্ট হলো মনে হলো। 



সেদিন পাশের মার্কেট থেকে নিজের কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গিয়েছিল মালিনী। ফেরার সময় ওই পুরানো আমলের বাড়িটার পাশ দিয়ে যাবার সময় কৌতুহলবশত বাড়িটার গেটের দিকে চোখ পড়ে গিয়েছিল মালিনীর। মালিনী লক্ষ্য করলো ওই বাড়ির বয়স্ক ভদ্রমহিলা একজন লোক দিয়ে বাগানটা পরিষ্কার করাচ্ছে। মালিনীকে দেখে ভদ্রমহিলা হাসলেন একটু, তারপর বললেন, "অনেকদিন বন্ধ হয়ে পড়েছিল তো বাড়িটা, তাই অযত্নে অনেক আগাছা জন্মেছে বাড়ির আশেপাশে। আর বাগানটাও ঘাসে ভর্তি হয়ে গেছে, তাই একটু পরিষ্কার করাচ্ছি। ভদ্রমহিলা মালিনীকে দেখে এগিয়ে এসে বললেন," তুমি কি আশেপাশেই থাকো ?" মালিনী ইশারায় ওর ফ্ল্যাটটা দেখিয়ে বললো,"হ্যাঁ আপনার বাগানের শিউলি ফুলের গাছটা আমার ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে স্পষ্ট দেখা যায়।" ভদ্রমহিলা হেসে বললেন,"তোমার বুঝি শিউলি ফুল খুব ভালো লাগে? তুমি আসবে আমার বাড়িতে, রোজই তো কতো শিউলি ফুল ঝরে পড়ে থাকে তলায়। পুজোর ঠিক আগেটায় খুব শিউলি ফুল হয় গাছটায়। জানো তোমার মেসোমশাই খুব শখ করে এই শিউলি ফুলের গাছটা লাগিয়েছিলেন, আমি ভালোবাসতাম বলে।" বলেই ভদ্রমহিলা বললেন,"এই দেখো তুমি আবার কিছু মনে করো না যেন, তোমাকে তুমি বলে সম্বোধন করছি বলে। আসলে আমার ছেলের বউও তোমারই বয়সী হবে।" মালিনী বললো,"আপনি আমাকে তুমি করে বললেই আমি বেশি খুশি হবো মাসিমা।" ভদ্রমহিলা মালিনীকে ওনার বাড়িতে আসতে বলেন একদিন। মালিনীও কথা দেয় যে সে আসবে। সেদিন আর বেশীক্ষণ দাঁড়ায় না মালিনী, ঘরে অনেক কাজ পড়ে আছে যে।



এরপর থেকে ভদ্রমহিলা ছাদে উঠলেই মালিনীর সঙ্গে টুকটাক কথা বলতো। কবে যে ধীরে ধীরে মালিনী ওই নিঃসঙ্গ মানুষটার খুব আপনজন হয়ে উঠেছিল, তা সে নিজেও বুঝতে পারেনি। আলাপ পরিচয়ের সূত্র ধরে ভদ্রমহিলা মালিনীকে নিজের ঘরে প্রায়ই আসতে বলেন। যদিও মালিনীর সেভাবে সময় হয় না বলে অতো যাওয়া আসা করতে পারে না ও। তাই ও নিজেই মাসিমাকে আসতে বলে ওর ফ্ল্যাটে। কিন্তু মাসিমা বলেন, এখানে আমার বাড়ি তুমি এলে তোমার বেশি ভালো লাগবে মালিনী। আমি বয়স্ক মানুষ অতো হাঁটাচলা করতে পারি না। তারপর থেকে সময় সুযোগ হলেই মালিনী ওই নিঃসঙ্গ মানুষটার কাছে যেত। আর তারপর কথায় কথায় কতো রকমের গল্প যে করতেন ভদ্রমহিলা তার হিসাব নেই। ছেলে, বউয়ের সঙ্গেই থাকতেন স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে। স্বামী, স্ত্রী অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই বাড়িটা তৈরি করেছিলেন, বাগানসমেত বাড়ি। দুজনেই যে ভীষণভাবে গাছপালা ভালোবাসতেন। কতোরকমের গাছ আছে এই বাগানটায় , নিজের চোখে না দেখলে হয়তো মালিনীও বিশ্বাস করতো না। মাসিমার কাছেই শোনা মালিনীর, ওনার স্বামী যখন বেঁচে ছিলেন তখন নাকি দুটো লোক সারাদিন কাজ করতো বাগানে।অথচ আজ অযত্নে কি দুর্দশা হয়েছে বাগানটার। তাও মাসিমা আসার পর কদিন ধরেই বাগান পরিষ্কারের জন্য দুটো লোক রেখেছেন। নাহলে আগে তো ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে মালিনী দেখেছে, আগাছায় ভরে থাকতো বাগানটা। এই বাগান আর ঘরের টানেই আপাতত মাসিমার এই বাড়িতে পদার্পন। ছেলে নাকি বলেই দিয়েছে, যাচ্ছ যাও, আমরা কিন্তু ওখানে গিয়ে তোমার দেখাশোনা করতে বা বাড়ির দেখাশোনা করতে পারবো না। মাসিমার ছেলে নাকি আবার বিদেশে চলে যাচ্ছে, আর তাই এই পৈতৃক সম্পত্তির প্রতি তার কোনোরকম মোহ মায়া নেই। মাসিমা একপ্রকার ছেলের সঙ্গে মতানৈক্য করেই ফিরে এসেছে এখানে। 



সেদিন রাতে মালিনী যখন সৌমিত্রকে তার মাসিমার গল্প শোনাচ্ছিল, তখন সৌমিত্র মালিনীকে বললো,"কি দরকার মালিনী, অপরিচিত কারুর সঙ্গে এতো ঘনিষ্ঠতা বাড়াবার। আগে তো তুমি নিজের মতো থাকতে এখানে"। মালিনী নিজেও হয়তো সৌমিত্রর এই প্রশ্নের উত্তর জানে না। এক অপরিচিতা নিঃসঙ্গ মানুষটার সঙ্গে মালিনীর কেমন যেন এক অদৃশ্য যোগসূত্র তৈরি হয়ে গিয়েছিল। মানুষটার একাকীত্ব মালিনীকে বড়ো কষ্ট দিতো। কিছুই তো চাইছে না মানুষটা, শুধু একটু কথা বলতে চায়, এই বয়সে নিজের একাকীত্বটাকে হয়তো বা ভাগ করে নিতে চায় মালিনীর সঙ্গে। শেষ বয়সের এক নিঃসঙ্গ মানুষের এটুকু চাওয়াকে তো পূর্ণ করা যেতেই পারে। ধীরে ধীরে সময় পার হয়ে যায়। মাসিমাকে মালিনী নিজের মায়ের মতই সম্মান দেয়। ভালোমন্দ রোজই কিছু না কিছু রান্না করে দিয়ে আসে সে মানুষটাকে। নিজের সামনে বসিয়ে খাওয়ায়, কি পরম তৃপ্তিতে খায় মানুষটা। সেটা দেখে মালিনীর মনেও এক অদ্ভুত পরিতৃপ্তি হয়। নিজের মা,বাবা, শ্বশুর ,শাশুড়ি অনেকদিন আগেই মারা গেছে। বয়স্ক মানুষের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ তাই মালিনীর হয়নি সেভাবে। আর তাই হয়তো বয়স্ক এই মানুষটাকে কাছে পেয়ে, তাঁর স্নেহ মমতার হাত নিজের মাথার উপর সযত্নে সঞ্চিত করে রাখতে চেয়েছে মালিনী।



দেখতে দেখতে প্রায় দু বছর হয়ে গেল মাসিমার এখানে আসার। মালিনী এখন সন্তান সম্ভবা। মালিনীর সূত্র ধরেই সৌমিত্রর সঙ্গেও মাসিমার পরিচয় হয়ে গেছে। মালিনীর সন্তান সম্ভাবনার খবরে মাসিমা সৌমিত্রকে সবকিছু ভালোভাবে বলে দেন। নিজের মেয়ের মতোই মালিনীকে তিনি যত্ন করেন। শত কষ্ট হলেও ফ্ল্যাটে এসে নিয়মিত মালিনীর দেখাশোনা করে যান। দেখতে দেখতে মালিনীর সন্তান হবার দিন আগত। এক ফুটফুটে মেয়ের জন্ম হলো মালিনীর কোল আলো করে। মাসিমা ভীষণ খুশি নাতনিকে কাছে পেয়ে। মালিনীও খুশি তার মেয়ে দিদার আদর যত্নে বড়ো হবে এই ভেবে। মাসিমার ছেলে বউ ফোন করলে মাসিমা নতুন অতিথির ঘরে আসার খবর শোনায়। তারাও খুশি এই ভেবে যে তাদের মা এই বয়সে নিঃসঙ্গ নেই এটা জেনে।



মাসিমাই মেয়ের নামকরণ করেছেন। মালিনী আর সৌমিত্র তাতে কোনো আপত্তি করেনি। একজন বয়স্ক মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার সৌভাগ্য কজনের হয়। মালিনীর মেয়ে তার এই নতুন দিদুনের কাছে খুব আনন্দে থাকে। মাসিমা সেদিন মালিনীকে বললেন, "জানিনা কদিন বাঁচবো মালিনী। যদি মরে যাই কখনও, আমার দাহ সংস্কার তোমরাই করে দিও। ছেলে তো আর অতো দূর থেকে আসতে পারবে না, সে তো আগেই বলে রেখেছে। তাই তাকে আর বিরক্ত করবো না"। মালিনী মাসিমাকে ধমক দিয়ে বললো, "এসব বাজে কথা না বললেই কি হচ্ছে না আপনার মাসিমা। যখন যা হবে দেখা যাবে, এখন ওসব ভাবতে হবে না"।




ক'দিন ধরেই মাসিমার শরীরটা ভালো নেই। মালিনী সৌমিত্রকে বলে ডাক্তারও দেখিয়েছে। সেরকম কোনো সমস্যা তো নেই বললেন ডাক্তারবাবু। মালিনীও তাই নিশ্চিন্তে নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে গেল। মালিনী ঘরে ফেরবার জন্য উঠতেই মাসিমা ওর দুটো হাত জড়িয়ে ধরে বললো, " অনাত্মীয়া হয়েও অনেক ভালোবাসা পেয়েছি তোমার থেকে এই শেষ বয়সে। যদি কখনও হঠাৎ চলে যাই, ওই আলমারিটায় তোমার জন্য কিছু রাখা আছে, ওটাকে মাসিমার আশীর্বাদ বলে রেখে দিও সযত্নে। এইটুকুই শুধু চাওয়া তোমার থেকে মালিনী।" কে জানে কেন আজ মাসিমার কথায় মালিনীর বুকের ভেতরটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠলো। ঘরে ফিরে মালিনী সারারাত ঘুমোতে পারলো না। পরদিন সকালেই মালিনী সৌমিত্রকে বলে মাসিমাকে দেখতে গেল একটু। দরজা খুলে দিলো সর্বক্ষণের কাজের মেয়েটি। মালিনী মেয়েটিকে জানতে চাইলো মাসিমার ব্যাপারে। মেয়েটি বললো এখনও ওঠেনি মাসিমা। মালিনী মাসিমার ঘরে গিয়ে মাসিমার গায়ে হাত দিয়ে ডাকতে গেল মাসিমাকে। কিন্তু একি মাসিমার গা তো বরফের মতো ঠান্ডা। মাসিমা তো সাড়াও দিলো না মালিনীর ডাকে। মালিনী ঘরে এসে সৌমিত্রকে বললো একজন ডাক্তারকে সঙ্গে নিয়ে আসতে। ডাক্তার এসে সব দেখে জানালেন, অনেকক্ষণ আগেই নাকি মাসিমা মারা গেছেন। মালিনী ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো মাসিমাকে জড়িয়ে। 



মাসিমার ইচ্ছানুযায়ী তাঁর অন্তিম সংস্কারের যাবতীয় দায়িত্ব মালিনী পালন করলো। পরদিন মালিনীর মনে পড়লো তাকে বলা মাসিমার শেষ কথাগুলো। মালিনী এগিয়ে গেল মাসিমার ঘরে রাখা আলমারির দিকে। তারপর আলমারি খুলে দেখতে পেলো মাসিমার লেখা একটা চিঠি, চিঠিটা খুললো মালিনী-----


স্নেহভাজনেষু মালিনী,


        এখানে আসার পর থেকে তোমাকেই নিজের পরম আত্মীয়, পরম আপনজন বলে ভেবেছিলাম। আর তারপর তো তুমি নিজ গুনে কবে আমার মেয়ে হয়ে উঠেছিলে তা নিজেও বুঝতে পারিনি। মালিনী আজ তোমার এই মা তার শেষ বেলায় তোমাকে কিছু দিতে চায়। তুমি যদি সেটা মন থেকে না নাও, তাহলে তোমার এই মা মরে গিয়েও শান্তি পাবে না হয়তো। আমার সন্তানও চায় আমি তোমাকে এটা দিই। তাই তুমি যেন কখনই এটা ভেবে কষ্ট পাবে না যে আমার সন্তানকে বঞ্চিত করেছি। মালিনী আলমারির ভেতর যে কাঠের বাক্স আছে তাতে আমার সম্পত্তির দলিল আছে। আমি আমার যাবতীয় সম্পত্তি তোমার নামে দানপত্র করে গেলাম। আর হ্যাঁ, আরেকটা কথা , তোমার এই মাসিমা জানে তার পরম প্রিয় শিউলি ফুলের গাছটার যত্ন তোমার থেকে ভালো আর কেউ করতে পারবে না। ভালো থেকো, সুখে থেকো সবসময় তোমরা ।


                          ইতি

                    তোমার মাসিমা



মালিনী চিঠি পড়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো। এক অনাত্মীয় মানুষও কখনও এতো আপন হতে পারে? কে বলে সম্পর্ক এখন আর আগের মতো নেই। সম্পর্ক আগের মতই আছে, তাকে শুধু খুঁজে নিতে হয়। পরদিন ভোরবেলা মালিনী শিউলি গাছের তলায় গিয়ে সদ্য ঝরে পড়া অনেক শিউলি ফুল কুড়িয়ে আনলো। তারপর মাসিমার ফটোর সামনে গিয়ে সেই ফুল সাজিয়ে দিয়ে বললো, "তোমার দেওয়া ভালোবাসার স্বরূপ আমি গ্ৰহণ করলাম, তুমিও আমার এই শ্রদ্ধার্ঘ্য গ্ৰহণ করো। যেখানেই থেকো ভালো থেকো মাসিমা।"


           সমাপ্ত



  





Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract