Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Shyamasree (শ্যামশ্রী)

Tragedy

4  

Shyamasree (শ্যামশ্রী)

Tragedy

জীবনযাপন ( পর্ব - দুই)

জীবনযাপন ( পর্ব - দুই)

9 mins
427


আরতি যেন হাত চলছে না, প্রতিদিন এই সময় রান্নাঘরে গিয়ে রান্নাঘর পরিস্কার করে জলখাবার বসিয়ে দেয়। এই বাড়িতে চায়ের চল নেই, সুজিত মাঝে মাঝে খেলেও, চা রাখা হয়েছে ছেলে মেয়েগুলোর জন্য। সুজিত সকালে ঘুম ভেঙেই গোয়াল ঘর থেকে গোরু বের করে এনে জল খাইয়ে দুধ দুইয়ে পাশের মাঠে বেঁধে দিয়ে আসে, বেশি গোরু না। মাত্র দুটো দুধেল গাই। অবশ্য দুটো একসাথে দুধ দেয় না সাধারণত, একটা দুধ দিলে, অন্যটার পেটে বাছুর থাকে। আসলে সুজিত বা আরতি কেউই দুধ বিক্রি করতে চায়না। যতটুকু দুধ হয়, সবটাই ছেলে-মেয়েগুলোর জন্য রাখে। এখন অবশ্য দুটো বাছুর রয়েছে, অবশ্য একটাকে ঠিক বাছুর বলা চলে না, বছর কয়েক পরে নিজেই দুধ দেবে। আরেকটির বাছুর মাসতিনেক, ভালো দুধ দেয়। তবে এড়ে বাছুর, তাই একটু বড় হলেই বেঁচে দিতে হবে। আজকাল তো জমিচাষেও লাগেনা এদের। তবে আরতির বড় মায়া হয়, প্রাণে ধরে বেঁচতে ইচ্ছে করে না৷ নিজেদের মতো মনে হয়, মা-বাবা মেয়েদের এতো যত্নে বড় করে, তারপর অন্যের ঘরে পাঠাতে হয়, সেখানে জানে তাদের মেয়েকে পদে পদে পরীক্ষা দিয়ে যেতেই হবে। মা-বাবারো কি প্রাণে ধরে দিতে ইচ্ছে করে কি মেয়েকে অন্যের ঘরে পাঠাতে ? কি এ অনিয়ম হোক কি নিয়ম চলেই আসছে। আরতি এটা ভেবেও হাসি পায় মানুষ কি স্বার্থপর যেহেতু মানুষের ক্ষেত্রে পুরুষরা শক্তিশালী ও আয় করে, তাই নিয়ম করে তাকে বাড়িতে রাখার বিধান দিয়েছে, কিন্তু গোরু বা মোষের মতো প্রাণীর ক্ষেত্রে মহিলাদের মূল্য বেশি, তাই তাদেরকে কাছে রাখে মানুষ। সমগ্র পৃথিবীই চলছে স্বার্থের কারণে।

এসব কথা আরতি একা থাকলেই ভাবে, হয়তো উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে, শুধু তাই নয় ভালো ফলও করেছে। তাই হয়তো তার ভাবনা চিন্তা পাড়ার অন্য বৌ-ঝিদের তুলনায় পরিপক্ক বেশী। কিন্তু আজ এসব কিছুই মাথায় আসছে না। সমগ্র চিন্তা জুড়ে খালি বিল্টু আজ।সুজিত দুধ দুয়ে কখন দিয়ে গিয়েছে, আরতি বসে বসে দুধ জাল দিচ্ছিলো, উনুন যে কখন নিভে গিয়েছে সে লক্ষ্যই করেনি। সুজিত গোরু মাঠে বেঁধে এসে স্ত্রীকে তখন খাবার না দিতে দেখে বারকয়েক ধীর গলায় ডাকল,ছেলেমেয়েরা উঠে যাবে তাই। তবুও কোনো সাড়া না পেয়ে রান্না ঘরে এসে দেখে দুধ কিছুটা উথলে পড়েছে,তবে তেমন পড়েনি, আগেই উনুন নিভে গিয়েছিল তাই রক্ষা। সুজিত স্ত্রীকে এমন অন্যমনস্ক কোনো দিনও দেখেনি, তাই সে অবাক হয়ে স্ত্রীর কাছে এসে বসে গায়ে হাত রাখতেই চমকে উঠে তাকায় স্বামীর দিকে আরতি। সুজিত বলে "কি গো কি ভাবছো? দুধ যে উথলে পড়ে গিয়েছে, ওদিকে আবার উনুনও নিভে গিয়েছে, অবশ্য তাতে ভালোই হয়েছে, আগে বলতো কি হয়েছে তোমার? "

আরতি নিজেকে সামলে নিয়ে বললো " কই কিছু হয়নি তো, এমা এত্তো দুধ পড়ে গেছে, আমি লক্ষ্যই করিনি "বলে দ্রুত হাতে দুধের পাত্র নামিয়ে রেখে উনুনে চায়ের জল বসিয়ে দিতে দিতে বললো " বলছি আজকে তোমাকে দুধ ছাড়া চা করে দিই আর সাথে মুড়ি মেখে দিই। কাল ছেলেটার দুধ সাবু তৈরী করে দিয়েছি বার তিনেক, তাই দই বসাতে পারিনি। আজকে তাই আর দই চিঁড়া তোমাকে দিতে পারলাম না।"

" আরে ছাড়ো তো, আমি কি বাচ্চা নাকি? তুমি তো এসে চা খেতে দাওনা। বলো এটা নাকি একরকম নেশা, নইলে চা মুড়িই তো খেতাম। আর শোনো আজ তুমি নিজের জন্যও একটু করো, একসাথে বসে খাবো।"

আরতি স্বামীর কথায় লজ্জিত হয়ে বললো "ধ্যাৎ, তুমি দালানে গিয়ে বসো আমি চা আর মুড়ি মেখে নিয়ে যাচ্ছি।"

সুজিত যেতে যেতে বললো "নিজের জন্য করতে ভুলো না কিন্তু। "

আরতি হেসে বললো "আচ্ছা বাবা আচ্ছা।" সুজিত চলে যেতেই চোখটা জলে ভরে উঠলো ওর। কি জানি কতদিন এই সুখ আছে ওর কপালে কে জানে? ওর আগের জীবনের সবটা জানলে কি মেনে নিতে পারবে সুজিত? বাচ্চাদের থেকেও দূর হয়ে যেতে হবে, কিন্তু ওদের ছেড়ে বাঁচবে কি করে? এরচেয়ে মরে...

সুজিত বাইরে থেকে মৃদু গলায় আবার ডাক দিলো, " কি গো আর কতক্ষণ?" চায়ের জল ফুটে গিয়েছিল, চিনি আর চা-পাতা দিয়ে, নাড়িয়ে বললো "এই তো যাচ্ছি, উনুন নিভে গিয়েছিল, তাই সময় লাগছে।" বলে দ্রুত হাতে একটি পাত্রে তেল দিয়ে মুড়ি মেখে, দুটো গ্লাসে চা ছেকে বাইরে নিয়ে স্বামীর সামনে পাত্রটা রেখে নিজেও বসলো। এখন বাড়িতে শ্বাশুড়ি বা ভাশুর কেউ নেই। তাই আড়াল আবডালের প্রয়োজনও নেই। তাছাড়া কম দিন তো হলো না বিয়ে হয়েছে।

সুজিত হেসে বলল, " বাঃ নিজের জন্য চা এনেছ?"

"তুমি খাও আমি ভাতটা বসিয়ে দিয়েই আসছি।"

সুজিত স্ত্রীর হাতটা ধরে বসিয়ে বললো " আহ্ বসোনা, পরে খেলে চা ঠান্ডা হয়ে যাবে, ঠান্ডা চা কি খেতে ভালো লাগে? "

" বেশীক্ষণ নেবো না,উনুনটা নিভে গেলে জ্বালাতে আবারও ঝক্কি পোহাতে হবে। এখন সাড়ে আটটা বাজতে যায়। ভাতটা হয়ে থাকলে, আলুসেদ্ধ আর ভাত খেয়ে অন্তত যেতে পারবে ছেলেটাকে ডাক্তার দেখাতে।"

সুজিত হেসে বললো "আচ্ছা যাও তবে আসতে দেরি করো না।"

আরতি বললো "এই যাই আর এই আসছি।"

সুজিত আরতির যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে ভাবতে থাকে, "আরতি সবসময়ই ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাবছে। কখনো দেখলাম না নিজেকে সময় দিতে৷ ছেলে অসুস্থ তাই এমন অন্যমনস্ক, আমি ভাবছি কি না কি হলো।"

বলে মুড়ি চিবোতে শুরু করে।

আরতি এসে দেখে তখনও উনুনটা নিভে যায়নি এক্কেবারে। দ্রুত হাতে ভাত,একটা কাপড়ের পুটুলিতে কিছুটা ডাল ও আলু দিয়ে ভাতের হাড়িটা উনুনে চাপিয়ে বাইরে আসতেই দেখে স্বামী কার সাথে বসে কথা বলছে। এগিয়ে আসতেই দেখে বিল্টু বসে রয়েছে। আর ওর নিজের জন্য করা চা-টা চুমুক দিয়ে খাচ্ছে। সুজিত আসতে দেখে অসহায় ভাবে তাকালো, ওর নিজেরই খারাপ লাগছে। নিজেই করতে বললো চা আরতির জন্য, সেটা অন্য একজন খাচ্ছে। আরতির সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই, বিল্টুকে দেখে হঠাৎ মাথাটা ঘুরে গেল,মনে হলো পায়ের নিচের মাটিটা দুলে উঠলো। কোনো মতে ঘরের খুঁটিটা ধরে নিজেকে সামলালো। আরতি হয়তো লক্ষ্য করলো না, বিষয়টি ওর স্বামীর দৃষ্টি এড়ালো না। সে উঠে এসে বললো " কি গো কি হয়েছে তোমার, শরীর খারাপ লাগছে?"

" না না আমি ঠিক আছি, যাই অয়নদের উঠিয়ে দিই।" বলে আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেল।

বিল্টু বুঝতে পারেনি আরতির উপস্থিতি সে পেছন ঘুরে বসেছিল। আরতি ঘরে এসে মুখে কাপড় দিয়ে কাঁদতে শুরু করলো যাতে কেউ না বুঝতে পারে, সে ভেবেছিল চলে গিয়েছে বিল্টু। কিছুক্ষণ পরে শাড়ির আঁচলে টান পড়তেই দেখে অনয় মায়ের দিকে জিজ্ঞাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে। আরতি তাড়াতাড়ি চোখ মুছে ছেলের দিকে ঘুরে কপালে হাত দিয়ে জ্বর পরীক্ষা করে সে কেমন আছে জিজ্ঞেস যেতেই অয়ন তার আগে জিজ্ঞেস করল " কি হয়েছে মা? কাঁদছো কেন? বাবা কিছু বলেছে?"

আরতি জোর করে মুখে হাসি নিয়ে ছেলেকে বুকে টেনে বলল "কই বাবা কিছু হয়নি তো.."

কথা শেষের আগেই চয়ন, নয়ন উঠে এসে কোমড়ে হাত দিয়ে বললো "শুধু দাদাকেই আদর কর তুমি, দাদাকেই ভালোবাসো।"

আরতি হেসে হাঁটু গেড়ে বসে তিনজনকে বুকে টেনে নিলো। আরতি না চাইতেও চোখ জলে ভরে এলো, এরাই তো ওর স্বর্গ, কিন্তু কতদিন এই সুখ কপালে আছে কে জানে? কম তো কষ্ট পায়নি সে জীবনে। অনেক সাধ্যসাধনার পরে এই সুখ ধরা দিয়েছে ওর জীবনে।

চয়নের মাথায় মায়ের চোখের জল পড়তে সে তাকিয়ে বললো " মা তুমি কাঁদছো।"

"হ্যাঁ রে ভাই মা তখনও কাঁদছিল, আমি জিজ্ঞেস করলেম, তবুও বললো না।"

নয়ন কিছু বললো না এখুনি কেঁদে ফেলবে এমন মুখ করে মায়ের দিকে চাইতেই আরতি বললো " আরে পাগল এ আমার আনন্দের কান্না?"

" আনন্দের সময় কেউ কাঁদে? আমাদেরকে বোকা পেয়েছ?"

আরতি এবারে হেসে ফেললো মেয়ের মুখে এই কথাটা শুনে, নয়ন এত্তোটুকু কিন্তু খুব পাকা পাকা কথা বলে, "না না, কার সাহস আছে আমার অয়ন চয়ন নয়নকে বোকা বলে, তবে বড়োরা খুব বোকা, তাই ওরা অনেক বোকা বোকা কাজ করে। "

স্ত্রীকে এখনো বাইরে আসতে না দেখে সুজিত ঘরে এসে আরতি আর বাচ্চাদের মনভরে দেখে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে বললো "খুব তো আদর করছো, আজ দাদার জ্বর তাই ওই দুইটিতেও বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে নিলো। স্কুলে যেতে হবে না?"

চয়ন আর নয়নের মুখ কালো হয়ে গেল। স্কুল যেতে তাদের একদমই ভালো লাগে না।

তারপর আরতির দিয়ে চেয়ে বললো "ভাতটা বসিয়েছ, ভুলেই গিয়েছ নিশ্চয়। যাও দেখে এসো।"

আরতি জিভ কেটে বললো " এমা তাইতো, আচ্ছা তুমি একটু বিছানাটা গুছিয়ে ওদের মুখ ধুইয়ে দিও, আমি ওদের খাবার নিয়ে আসি।" বলে স্বামীর পাশ চলে যেতে গিয়েও থেমে বললো " আচ্ছা উনি কোথায়?"

সুজিত প্রথমতটা কথাটা না বুঝে " কে? " বলেই সাথে সাথে মনে পড়ে যেতে বললো " কে বিল্টূ বাবু? একটু বেরোলেন, আজকে উনাকে খেতে বললাম।"

বিল্টু নেই শুনে আরতি নিশ্চিন্ত হয়ে রান্না ঘরে গেল, ভাত উথলে উঠেছে, জল দিয়ে ঘেটে দিলো আরতি, প্রায় হয়ে এসেছে ভাত। এখন প্রায় সাড়ে নয়টা বেজে গিয়েছে কিছু খেতে দিলে ভাত খেতে পারবেনা। এক থালায় দুটিকে মেখে খাইয়ে দেবে ও। আজ আর অয়নকে স্কুলে যেতে দেবে না, ডাক্তার দেখিয়ে আনুক ওকে ওর বাবা।

ভেবে ঘরে গিয়ে দেখে বাপ বেটা বেটি মিলে বিছানা গোছাবে কি লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। আরতি দেখে সবাই চুপ। খুব রাগ হয়ে গেল আরতির, "ওরা না ছোট, তুমি নিশ্চয় নয়। সব সময় কাজ বাড়ানো তোমাদের কাজ। চয়ন আর নয়ন স্নান করে আয়,অয়ন তুই গিয়ে চোখ মুখ ধুবি খালি, কাল জ্বর হয়েছিল মনে আছে নিশ্চয়। আর তোমাকে আজ এবেলায় দোকান খুলতে হবে না,ছেলেটাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাও। " বলে বিছানা গোছাতে শুরু করলো আরতি। ছেলে মেয়েদের চলে যেতে দেখে সুজিত কর্মরত স্ত্রীর পাশে এসে দাঁড়িয়ে হঠাৎ করে গালে চুমু খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল। আরতি লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে উঠলো, মনে মনে বললো " বয়স তো কম হল না, কিন্তু একই রয়ে গেল লোকটা।"

বাচ্চারা সবে স্কুলে বেড়িয়েছে আর অয়নকে নিয়ে সুজিত গিয়েছে গ্রাম থেকে ৪ কিমি দূরের মফঃস্বলে। সেখানে জনা দুই হাতুড়ে, একজন পাশ করা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আর একজন বংশ পরম্পরায় কবিরাজ আছেন। নিজের সময় আরতি হাতুড়ে বা কবিরাজের কাছে গেলেও , ছেলে-মেয়ের পাশ করা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। যদি নেহাৎ তাকে না পাওয়া গেলে কবিরাজকে দেখায়। আরতি তাড়াতাড়ি স্নান সারতে চলে গেল। মাটির বাড়ি বটে, তবে আরতি এসে কলঘরের পাশে টিন দিয়ে একটা স্নানাগার করিয়েছে, আর পায়খানাও, অবশ্য পায়খানাটা সরকারি সাহায্যে করা।স্নানঘর করা নিয়ে কম কথা শুনতে হয়নি তাকে।

স্নান সেরে ফুল তুলছে নিজের হাতে লাগানো বাড়ির পাশের বাগান থেকে, মনে হলো কেউ রয়েছে, কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না ও। পুজোর ফুল তুলে পুজো সেরে সবে কাপড় বদলাতে ঘরে ঢুকেছে,কে একজন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো ওকে। আরতি এখন প্রায় আটত্রিশ, কিন্তু এখনো বেশ সুশ্রী সামান্য মেদ জমেছে শরীরে এটাই।

আরতি চিৎকার করতে যেতেই ওর মুখ চেপে ধরে লোকটা বললো "অকারণ চিৎকার করছো কেন আরতি, তোমার তো আমার স্পর্শ অচেনা নয়। এই তো মোক্ষম সময়, বাড়ি ফাঁকা, আমার পাওনাটা এখুনি মিটিয়ে দাও না।" বলে আরতির গায়ের ঘ্রাণ নিলো। আরতির শরীর রিরি করে উঠলো।

আরতি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, এমন সময় বাইরে সাইকেলের আওয়াজ হতেই বিল্টু আরতিকে ছেড়ে দিলো।

আরতি তাড়াতাড়ি করে কাপড়টা ঠিক করে বাইরে এসে দেখে স্বামী ফিরে এসেছে।

" কি গো কোথায় ছিলে?"

আরতি সাথে সাথে উত্তর দিতে পারলো না, তখনও ওর বুকখানা সমান তালে কেঁপে চলেছে। অয়ন এগিয়ে মায়ের কাছে আসতে গিয়েও দাঁড়িয়ে পড়লো, কারণ মা পুজোর কাপড়ে কিছু ছোয়না।

সুজিত সাইকেল থেকে নেমে স্ত্রীকে দেখে বললো "কি গো এখনো পুজো হয়নি।"

আরতি কোনো মতে বললো "এই হয়েছে। "

"কাপড়টা এখনো ছাড়োনি কেন? ওই কাপড়ে তুমি তো কিছুই করবে না।"

বিল্টু ঘর থেকে হাসতে হাসতে বেড়িয়ে বললো "আরে দাদা দোষটা আমার"

সুজিত বিল্টুকে ওদের শোবার ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতে দেখে অবাক হয়ে একবার বিল্টু আর একবার স্ত্রীর দিকে তাকালো।

বিল্টু মনে মনে খুব খুশি হলো, সন্দেহ বীজ বপন করা হয়ে গিয়েছে, এখন শুধু জল দেওয়া।

" আরে দাদা বুঝতে পারলেন না তাই তো, আমি বলছি পরিস্কার করে। আমি তো আপনার সামনে বেড়িয়ে গেলাম, সকালে খোঁজ করলাম তখন শুনলাম এই গ্রামে ভদ্রলোক থাকে না, তখন পাশের গ্রামে গেলাম, সেখানে ওই নামে একজন রয়েছে বটে, কিন্তু উনি আমার পরিচিত ব্যক্তি নন। কি করব বুঝতে পারলাম না। বাড়ি থেকে সেই ভোরে বেড়িয়েছি। মাথাটা ঘুরছিলো, কোথায় যাব? আপনাদের ছাড়া কাউকে তো চিনি না। আপনার বাড়ি এলাম তখন কাউকে দেখলাম না। কিছু না বুঝে টলমল পায়ে আপনার ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েছি। আরতি তো জানে না অন্য ঘরে পুজো করছিলো।এই ঘরে এসে আমাকে দেখে আর ওর শাড়ি বদলানো হয়নি। "

সুজিত কি বুঝলো কে জানে মুখে কিছু বললো না।

আরতি আর মানসিক চাপ নিতে পারলো না, জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেল....


চলবে..


বিঃদ্রঃ কেমন লাগছে গল্পটা অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন, আপনাদের মন্তব্য ব্যতীত বুঝতে পারবোনা গল্পটা ভুল পথে এগোচ্ছে না তো?



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy