Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sangita Duary

Romance

5  

Sangita Duary

Romance

তোমায় নতুন করে পাবো বলে

তোমায় নতুন করে পাবো বলে

8 mins
3.6K


পূবদিকের জানলা ভেদ করে সূর্যের আলো চোখে পড়তেই ধরফরিয়ে উঠে পড়লো সোনালী। ইস সকাল হয়ে গেল! কাল অনেক রাত পর্যন্ত নিখিল ল্যাপটপে ব্যস্ত ছিল। তাই সোনালী আর কি করে, মনের মানুষটি পাশে বসে সারারাত কাজ করে কাটাবে আর সে ভোঁস ভোঁস করে নাক ডাকবে, এইরকম স্বভাব সোনালীর নেই। সেও স্বামীর পাশে বসে আজকের দিনটার জন্য প্ল্যান ছকে রেখেছে।

মধ্যরাতে নিয়মমাফিক নিখিলের সঙ্গে আদর-খেলার পর যখন ক্লান্তি নিখিলকে ঝটপট ঘুম পাড়িয়ে দিলো, সোনালী পাশের বালিশটায় মাথা রেখে হাতজোড় করে কতবার ঠাকুরকে ডাকলো, যেন রোজকার মতো কালও ভোর ভোর উঠে পড়তে পারে! সেই ছোটবেলায় পড়া রাইম, আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ, আরে ভোরে ওঠা সোনালীকে ওয়াইজ নাইবা করলো, ভোর ভোর মর্নিং ওয়াকটা তাকে হেলদি স্লিম এন্ড সারাদিন এক্টিভ বানিয়ে রাখে, ঠিক যেমনটা বিয়ের আগেও ছিল! কিংবা বিয়ের এই একবছর পরও! নাহলে এতদিনে মাসে চোদ্দটা আত্মীয় আর বছরে কুড়ি খানা বিয়ে অন্নপ্রাশন খেয়ে সোনালীকে এখন সবাই জোজোর ছোট বোন বলে ভুল করতো।

সোনালীর একটা দিনের ওয়ার্ক আউট তাহলে মাঠে থুড়ি বিছানাতেই মারা গেল। ধুস! বলে বিছানা ছাড়তে গিয়ে চোখ পড়ল পাশের সজ্জায়। বালিশে মুখ গুঁজে অঘোরে ঘুমোচ্ছে নিখিল। কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়েও সরিয়ে নিল সোনালী। থাক, ঘুমোক। সারাদিনটা বড্ড খাটুনি যায় লোকটার। সরকারি প্রাইমারি স্কুলের যা মাইনে, তাতে দুজনের সংসার ভালোমতোই চলে যাবে, তবু সকাল বিকেল অনার্স কোর্সের টিউশনি করে নিজের চর্চা রাখার জন্য।

সোনালীর বাবা বলতেন কুড়ি বছর স্কুলে শুধু ছাত্র ঠেঙালে মাস্টাররা নাকি গাধা বনে যায়। নিজের জ্ঞান বিদ্দ্যে ভুলে তারা নাকি গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে যায়। না বাবা নিখিলকে গাধার বুদ্ধিতে দেখতে সোনালী পারবেনা, তার চেয়ে যেমনটাতে নিখিল ভালো থাকে, থাকনা।

স্বামীর থেকে আদুরে দৃষ্টিটা সরিয়ে নিয়ে সোনালী বাথরুমে ঢুকলো। ভালো করে স্নান করলো। আলমারি খুলে লাল হলুদ গাদোয়াল পরলো একটা। কানে হাতে গলায় হালকা সোনা। সিঁথিতে পরিপাটি সিঁদুর আর কপালে ছোট্ট লাল টিপ। দুচোখে কাজল টানা মেঘ। চায়ের ট্রে হাতে ঘরে ঢুকলো। নিখিল নিশ্চয় চমকে যাবে, ঘুম ভেঙে সোনালীর গায়ের মিষ্টি ল্যাভেন্ডার মাতিয়ে দেবে ওকে! এসব ভেবে সোনালীর কাজল চোখে লজ্জা নেমে এলো।

ঘরের পর্দা সরাতেই দেখলো বিছানাটা ফাঁকা। নিখিল নেই, এরই মধ্যে বাথরুমে ঢুকে গেলো? যা এই প্ল্যানটাও ঘেঁটে গেল। বেড সাইড টেবিলে চায়ের কাপ রেখে চুলে আলগা খোঁপা করে সোনালী বিছানা গোছাতে শুরু করে। ঠিক আছে, বাথরুম থেকে নিখিল বেরোলেই নাহয়... আবার লজ্জা করলো সোনালীর।

বাথরুমের দরজা খুলল, সোনালী বিছানা থেকে নেমেই থ!

"একি! আজও তুমি বেরোবে?"

জামা প্যান্ট পরে নিখিল রেডি।

"কেন কি আছে আজ?" শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে নিখিল জিজ্ঞেস করলো।

যাহ! বেমালুম ভুলে গেল আজকের দিনটা? সোনালীর কান্না পেয়ে গেল খুব। চোখের জল লুকিয়ে বলল, "কিছু না, কখন ফিরবে?"

চুলে চিরুনি বোলাতে বোলাতে নিখিল বললো, "আজ দুটো ব্যাচের পরীক্ষা নেব, স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে মিটিং আছে , ওখানেও তাড়াতাড়ি যেতে হবে, দুপুরে স্কুলেই খাওয়া দাওয়ার বন্দোবস্ত হবে"।

-"ও, তাহলে জলখাবার খেয়ে বেরোবে তো? কখন বেরোবে, তাহলে চটজলদি কিছু বানাতাম, পরোটা বা লুচি করবো, খাবে?"

-"না না, ওতো সময় নেই, তুমি বরং দই দিয়ে একটু চিঁড়ে মেখে দাও"...

অভিমান কখন যে দু চোখে বৃষ্টি নামিয়ে দেয়! কাজল মেঘ লেপ্টে যায় চোখের চারিদিক। সোনালী কি কীই না ভেবেছিল আজকের দিনটা কে নিয়ে, কাল কত রাত অবধি কত কিছু ভেবে রাখলো, অথচ আজ সকাল থেকেই সব ভণ্ডুল হয়ে যাচ্ছে।

দু চামচ দই চিঁড়ে মুখে তুলে নিখিল কব্জি ওল্টালো। ঘড়ি দেখেই উঠে দাঁড়িয়েছে, "দেরি হয়ে গেল!"

"ওকি, আর খাবে না?"

-"তুমি খেয়ে নিয়ো"- বলেই দৌড়োলো নিখিল।

সোনালী ধপ করে বসে পড়লো চেয়ারে। তাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী, নিখিল ভুলেই গেল? একবছরের প্রেম আজকের দিনই শেষ হয়ে গেল। স্বামীর এঁটো দই চিঁড়ে চামচে করে মুখে তুললো সোনালী।

হাতে এখনও সাতটা ঘন্টা সময়। গতবছর সন্ধে পাঁচটা সাতে, গোধূলি লগ্নে তাদের বিয়ে হয়েছিল। সোনালীকে তিনটে নাগাদ ফোন করলেই হলো। সত্যি, খুব দুঃখ পেয়েছে মেয়েটা।

কিন্তু সোনালীকে সারপ্রাইজ দিতে হলে এইটুকু না করলেই যে হতো না, সোনালী সারাদিন মনখারাপ করে যখন সব আশা শেষ করে ফেলবে, ঠিক তখনই চমকে দেবে। ভেবেই একপ্রস্থ হেসে নিলো নিখিল। ওদিকে মন্দিরে ঠাকুর মশাইকে বোঝানো হয় গেছে। বালক ভোজনের খিচুড়ির জোগারও হয়ে গেছে। এবার শুধু সময়ের অপেক্ষা। নিখিল বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই বিছানায় শুয়ে সোনালী। কিচ্ছু ভালো লাগছেনা। পুরোনো স্মৃতি চোখের সামনে চলচ্চিত্র হয়ে ধরা দিচ্ছে বারবার।

দেখাশোনা করে বিয়ে ওদের। সেই প্রথম সোনালীকে বাড়িতে নিখিলের দেখতে আসা। অফ হোয়াইট শার্ট পরেছিলো সেদিন। সোনালী লজ্জায় মুখ তুলে তাকাতেই পারেনি, নত মস্তকে দেখেছে নিখিল হাতের আঙ্গুল মোটকে চলেছে, টেনশনে। সেজ পিসি জোর করে ওদের দুজনকে পাশের ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিল, সেই প্রথম সোনালী দেখলো নিখিলকে, চোখে রিমলেস চশমা, হালকা দাড়ি গোঁফ।

সেদিন নিখিল বলেছিল, "কলেজে একজনকে ভালো লাগলেও প্রপোজ করতে পারিনি, পরে দেখেছি আমার যতগুলো বন্ধুর লাভ ম্যারেজ হয়েছে, একবছর পরই সম্পর্কটা ভাইবোনের ঝগড়ায় চলে গেছে। আমি অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে বিশ্বাসী, কারণ চিনতে চিনতেই মোটামুটি বছর দশেক কাটিয়ে ফেলবো, তারপর বাচ্চা কাচ্চার ঝামেলায় ঝগড়া করার ফুরসৎই হবে না.. তবে হ্যা, শেষ বয়সে কিন্তু চায়ের কাপ হাতে লম্বা বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে চুটিয়ে প্রেম করবো। আসলে কি বলতো সব জিনিস প্রথম থেকেই পুরোটা পেয়ে গেল সেটার প্রতি আকর্ষণ চলে যায়। ভালো জিনিস চেখে চেখে খেতে হয়..."

খুব হাসি পেয়েছিল সোনালীর। কিসের সঙ্গে কিসের তুলনা।

আর দ্যাখা হয়নি ওদের, একেবারে ছাদনাতলায়। তবে এটুকু বেশ বুঝছিলো সোনালী, অপেক্ষা বড্ড মধুর হয়।

বিয়ের দিন শুরু থেকে ঘটে যাওয়া এক একটা লোকাচার শেষে বরের প্রবেশ, সেদিনের সেই নিখিলকে বর বেশে দেখা, সব কিছুতেই ভালোলাগা মিশে ছিল।

এই একটা বছর নতুন বিয়ের গন্ধটা শুঁকেই যেন কেটে গেল হঠাৎ।

নিখিলের সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে বাড়ি ফিরে যতটুকু সময় সবটাই সোনালীর জন্য। একটু একটু করে চিনেছে নিখিলকে, ভালোবেসেছে। খারাপ লাগলে নিজের মনকে মানিয়ে নিয়েছে।

সেদিন নিখিল ঠিকই বলেছিল হয়তো, প্রেমের বিয়ে হলে হয়তো অধিকার বোধটা আরো তীব্র হতো ফলে প্রত্যাশাও তীব্রতর হতো, আর তা ফলপ্রসূ না হলেই ..ইট পাটকেল লাঠা লাঠি ইত্যাদি।

তাই বলে নিখিল আজকের দিনটাই ভুলে গেল? এই খারাপ লাগাকে কি করে মানিয়ে নেবে সোনালী? ভালোবাসার বিয়ে নয় বলে কি নিজের স্বামীর থেকে এইটুকু প্রত্যাশাও করতে পারেনা সোনালী?

মোবাইলটা হঠাৎ বেজে উঠলো, ধরতে ইচ্ছে করছে না, নিশ্চই দিদি, উইশ করবে, এ যেন সেই আগুনে ঘি দেওয়া। সোনালী ফোনটা ধরলনা। আবার বাজছে। এবার চোখ মুছে ফোনটা তুলেই চমক, নিখিল। এবার সরি বলবে নিশ্চই, সোনালী আবার যেন শিহরিত হলো। ঠোঁটের কোণে সরু হাসি।

ফোনটা তুলতেই ওপারে নিখিলের উদ্বেগ কন্ঠ, "এক্ষুনি একবার কালীবাড়ি এসো।"

"কেন?"

"আরে আমার এক বন্ধু তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে পালিয়ে এসেছে। বাড়ি থেকে জেনে যাওয়ার আগেই ওদের বিয়ে দিতে হবে, শোনো ওরা টাকা পয়সা সঙ্গে আনেনি, তুমি তোমার বেনারসি আর আমার ধুতি পাঞ্জাবিটা সঙ্গে এনো, আমি ওদের কথা দিয়ে ফেলেছি, ওরা পরে ফেরত দিয়ে দেবে বলেছে। রাখছি বুঝলে, তাড়াতাড়ি এসো!"

প্রচন্ড রাগ হচ্ছে সোনালীর, তার বেলায় স্কুল টিউশন, আর বন্ধুর বেলায়...নিজেদের বিয়ের জোড়টা পর্যন্ত দিয়ে দিতে হবে? এই জন্যই বলে ভালো করে যাচাই করে তবেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়...!

সোনালী বিরক্ত মুখে আলমারি খুললো, প্লাস্টিক প্যাকেটে ভরলো ধুতি বেনারসি। মন্দিরে ঢুকতেই খিচুড়ি ভোগের গন্ধ। খিদেটা চিনচিন করে উঠলো। সেই সকালে নিখিলের পাতের দই চিঁড়ে টুকুই যা পেটে আছে। আজ মন্দিরে বিশেষ কিছু অনুষ্ঠান আছে নাকি ,নাহলে এমন সময় ভোগের সুবাস কেন?

সিঁড়িতে ওরা করা? বাবা মা দিদি জামাইবাবু, কি ব্যাপার?

সোনালীকে দেখেই হইহই করে উঠলো নুপুর, এইতো কনে এসে গেছে, এতদিন বউ বরদের অপেক্ষায় সেজে অপেক্ষা করছে, তুই তো নিয়মটা উল্টে দিলি রে!

মানে? কিসব বলে যাচ্ছে দিদি? কে বর? আর নিখিলই বা কোথায়?

নুপুর চোখ পাকিয়েছে, "না এখন নয়, একেবারে শুভদৃষ্টির সময় বরকে দেখবে, দে তো ধুতি পাঞ্জাবিটা দে, নিখিলকে দিয়ে আসি, আর তুই ওই মন্দিরের লাগোয়া ঘরটায় গিয়ে শাড়িটা বদলে ফেল, যা.... আরে পাঁচটা সাতে লগ্ন, কখন কি হবে, বিয়েটা মিটলে তবেই না ওরা খেতে বসবে!"

সিলিং থেকে রজনী গন্ধার বিশাল গোল চাঁদোয়া ঝুলছে বিছানা পর্যন্ত, সারা ঘরে নতুন বিয়ের গন্ধ, হালকা গোলাপি আলো, ঠিক গতবছরের ফুলসজ্জার দৃশ্য, জানালার পাল্লা খোলা, বাইরে থেকে চাঁদ উঁকি দিচ্ছে ঘরে।

সোনালীর চোখে আলগা শাসন, "এটা কি রকম হলো?"

নিখিলের দু চোখে দুস্টুমি, "নিজের বউকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করার রীতিটা আমিই প্রথম শুরু করলাম। এইভাবে প্রত্যেক বছর আমরা বিয়ে করবো, প্রত্যেক বছর তুমি নতুন বউ হবে, নতুন করে সংসার শুরু হবে আমাদের, কোনোদিন নিজেদের পুরোনো করবোনা।"!

সোনালীর চোখে ছদ্মকোপ, "আমাকে জানিয়ে করলে বুঝি বাধা দিতাম?"

-"তাহলে সব আশা ভঙ্গ হওয়ার পর এইভাবে সারপ্রাইজড হতে না! এতটা ভালো লাগতো না, ডিটেকটিভ গল্প পড়ো নি? সব আশা যখন শেষ হয়ে যায়, জট পাকিয়ে যায়, তখনই তো রহস্য উন্মোচনে আসল মজা! "

আরও গাঢ় হয়ে বসলো নিখিল, "সত্যি বলো, তোমার ভালো লাগেনি? মজার ব্যাপার কি জানো, সকাল থেকে বিয়ের সব রীতিই কিন্তু পালন হয়েছে, আমার দই চিঁড়ে খাওয়া, তোমার আমার এঁটো খাওয়া, তারপর সারাদিন উপোস, খালি গায়ে হলুদ টাই যা...!"

সোনালী মিচকে হাসলো, "আমাদের বডি ওয়াশটায় টারমারিক ফ্লেভার আছে কিন্তু"!

নিখিল হাতে তালি দিয়ে উঠলো, "একেই বলে সব ভালো যার, শেষ ভালো তার, জানো সোনা, আজ মন্দিরে ওই ভিখিরিগুলো যখন পাত পেরে খাচ্ছিল, দেখেছো ওরা আমাদের কেমন দু হাত তুলে আশীর্বাদ করছিল? সারাবছর তো আমরা আত্মীয় বন্ধু নিয়ে কাটাই, ওদেরকে দেখো সামান্য আয়োজনে কত খুশি, পরের বছর কোনো অরফ্যান হোমে যাবো কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে, কেমন? একটাই কমতি রয়ে গেল, এই অল্প সময়ে চন্দননগর থেকে মা বাপি আসতে পারলো না, আসলে প্ল্যানটা কাল রাতেই মাথায় এল কিনা, তবে কাল পরশু করে কিন্তু ওখানে যাবো আমরা, আশীর্বাদ নিতে!"

সোনালী নতুন চোখে দেখছে স্বামীকে আবিষ্ট হয়ে, বোধহয় একেই প্রেমে পড়া বলে? ভালোবাসা বলে? ভালোবাসার মানুষটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বোত্তম ভাবেই পেতে ইচ্ছে করে। নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে, নাহলে এরকম মানুষ কটা হয়? ভাগ্যিস সোনালী যাচাই করেনি, কষ্টিপাথরে ঘষতে ঘষতে তাহলে হয়তো আসল সোনাটাই ক্ষয়ে যেত।

সব জিনিস যাচাই করা যায়না, বিশ্বাস রাখতে হয়, বিশ্বাসেই তো বস্তু মেলে, তর্কে যা বহুদূর!

সোনালী প্রসঙ্গ ওল্টালো, "তা বাবা মা দিদি..."

-"ওই তো আজ সকালেই তোমায় মিথ্যে বলে যে বেরোলাম, সবাইকে কনভিন্স করে... নাহলে আমি একা সবকিছু পারতাম বলো? তাছাড়া বাবা না এলে কন্যাদান করতেন কে? তুমি আমার স্ত্রী, এই সত্যিটা যেমন বদলাবেনা, তেমনি তুমি বাবারও মেয়ে, এই চরম সত্যিটাও আমার অস্তিত্বের ছায়ায় কোনোদিন ঢেকে যাবেনা। এবার বলো হানিমুনে কোথায় যাবে? মানে সেকেন্ড হানিমুনে?"

সোনালী লজ্জা পেতে গিয়েও থমকেছে। আর লজ্জা পেয়ে কাজ নেই, সোজা জড়িয়ে ধরেছে নিখিলের গলা, "কেন, যেখানে গতবার গেলাম, মন্দারমনি, বিয়ে যখন প্রত্যেকবার একই বউকে করছো, তখন হানিমুনের জায়গা বদলাবে কেন? আমাদের ভালোবাসার কোনো কিছুকেই আমরা পুরোনো হতে দেবনা, কোনোদিন!"

-"তাহলে চলো...!"

-"কোথায়?"

-"আজ মন চেয়েছে, আমি হারিয়ে যাবো, তোমার সাথে, নতুন করে!"

ফুলসজ্জায় হারিয়ে যাচ্ছে একবছরের পুরোনো নতুন দম্পতি, ঘরময় জুড়ে রজনীগন্ধার সুবাস সেই সঙ্গে আরও কয়েকটা গন্ধ, নতুন পরিচয়ের, নতুন বিয়ের, নতুন প্রেমের, নতুন আদরের।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance