বুদ্বুদের ঘর
বুদ্বুদের ঘর
নিজের চোখে দেখিনি তো আমি কোনো জলসাঘর,
কি করে যে জ্বালাতো আগে ঝাড়বাতি আলোর।
তবে দেখেছি অনেকদিন, বিন্দু বিন্দু মাটি জুড়ে,
কি করে কুমোর পোকা বানায় ঘর, তার শিশুর !
বুঝে পাই না তো আমি একটা কথা কিছুতেই,
বাবুই পাখির বানানো ঘরকে কেন লোকে বলে বাসা!
ছোটোবেলায় জমির ধানের পাতায় বা মাঠের ঘাসে,
দেখেছি মাঝে মাঝেই যেন একদলা থুতু পড়ে আছে।
এমন তেপান্তরের মাঠে জনমনিষ্যি কোত্থেকে আসে?
কেউ কেউ বলেছিল, রাতে নাকি ভুতেরা থুতু ফেলে,
শুনে গা টা কেমন যেন করে উঠতো ছমছম,
তবে আমি পাইনি ভয় মোটেও, জানি যে রাম নাম।
মন দিয়ে যে আমি সেই ছড়াটা শিখেছিলাম !
"ভুত আমার পুত, পেত্নী আমার ঝি,
রাম লক্ষণ সাথে আছে, ভুতে করবে কি ?"
যতোই থুতু ফেলুক, ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করুক,
বা ভয় পাইনি বলে রাগ করুক, আমি নই বেকুব।
মা বলেছিলো, ওগুলো ভুতের থুতু নয় মোটেই,
কোনও এক পোকার কির্তী, এতে ভয়ের কিছু নেই।
কিন্তু হঠাৎ গত পরশু দিন, তুলসী গাছের পাতার___
পেছনদিকে ঠিক সেরকম একদলা থুতু চোখে পড়ে।
মনে মনে হাসি আর ভাবি ভুতের এতো দুঃসাহস!
আজ আমি নির্ঘাত একটা-দুটো ভুত তো ধরবোই।
ওমা! কি কান্ড! নরম সেই ফোমের ভেতর থেকেই,
সবুজ রঙের একটা সত্যিকারের পোকা বেরোয়,
ছবি তোলার পর আমি গুগল ভাইয়ের দ্বারস্হ হই।
খোঁজ পাই এটা নাকি এক রকমের গ্রাস হপার,
জীবন চক্রে থাকে যখন একা ডানা গজাবার আগেই
বুদ্বুদ দিয়ে বানায় একা নিজের জন্যে থাকার ঘর।
নামটা যথেষ্ট খটোমটো, philaenus spumarius !
বাংলা ভাষায় কিরকম যে এর উচ্চারণ হবে ?
কতকিছুই যে আশ্চর্য আছে, আমাদের এই ভবে !
কে জানে হয়তো আমার মতোই নিজে নিজেই গায়,
না হোক জলসা, না থাকুক জলসাঘর!
পোকাটা নিশ্চয়ই একা একা বুদ্বুদের গদিতে শুয়ে,
যখন খুশী তখন নিজেকেই নিজে গান শোনায়।