সন্তানের দুষ্টুমি ( পর্ব ১)
সন্তানের দুষ্টুমি ( পর্ব ১)
জানলা দিয়ে বাইরেটা দেখছিল শ্রীলতাদেবী,, আর ভাবছিল, কতো বছর কেটে গেল জীবনে।
যেন জীবনটা,, কাল শুরু হয়ে আজ শেষ হয়ে গেল।সময় নদীর মতন এতো দ্রুত চলে গেল।
শ্রীলতাদেবী,, ওনার স্বামী পরিতোষকে ৩ বছর আগেই হারিয়েছেন।
শ্রীলতাদেবী আর পরিতোষবাবুর নিজেদের বাড়ি ছিল। ওই বাড়িতেই ৩০ কেটে গেছে।
শ্রীলতাদেবীর, তখন ২৬ বছর বয়স ছিল যখন ওনার পরিতোষবাবুর সাথে বিয়ে হয়।
আজ ওনার ৫৬ বছর বয়স ।
ওনার ছেলে প্রতাপ এখন অনেক বড়ো হয়ে গেছে।
প্রতাপ চাকরি করে ।
প্রতাপের বিয়ে হয়ে গেছে আরাধনার সাথে।
প্রতাপ, আরাধনা, দুজনেই চাকরি করে ।
আরাধনা বাড়ির বউ বলে চাকরি করতে পারবেনা,, এটা শ্রীলতাদেবীর কাছে অন্যায় ছিল ।
চাকরি করে আরাধনা কিছু টাকা কামায়,, যার মাধ্যমে, ও নিজের দরকারি, ইচ্ছের জিনিস নিজেই কিনতে, করতে পারে। কারোর কাছে চাইতে হয়না।
এটা ওর হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে কোনদিন্ও ছিল না শ্রীলতাদেবীর।
নিজেই তাই, আরাধনার পাশেই থাকতেন উনি,, আর মনে শক্তি দিতেন আরাধনাকে,,, যে ওর ও অধিকার আছে চাকরি করার ।
প্রতাপকে, চাকরি করতে অফিসে যেতেই হয়।
তবে,, আরাধনা ওয়ার্ক ফ্রম হোমেই চাকরি করে।
শ্রীলতাদেবী,, গল্পের বই পড়ে,, গান শুনেই দিন কেটে যেত।
রাতে ডিনারের সময় শ্রীলতাদেবী গল্প করতেন প্রতাপ আর আরাধনার সাথে ।
একটু একা একা লাগতো। কিন্তু উনি খুব চাপা স্বভাবের ছিলেন । কিছুই বলতেন না।
কিছু মাস আগেই জানা গেছে,,, আরাধনা প্রেগন্যান্ট।
সবাই খুব খুশি ।
প্রতাপ বলল--" মা, আজ কেক নিয়ে আসছি,, আনন্দ করবো।"
শ্রীলতাদেবী--" এই এখন কেক, বায়রের কোন খাবার খায় না । আরাধনার সহ্য হবেনা।
একদম নয়।"
আরাধনা প্রেগন্যান্ট বলে, শ্রীলতাদেবী সেরম কাজ ই করতে দিতেন না। সবই প্রায় নিজেই করতেন।
হঠাত্ই,, প্রতাপ নতুন চাকরি পেয়েছে।
সবার মনে হচ্ছিল,, ঈশ্বর মুখ তুলে চেয়েছেন।
যে বাড়িটায় ওনারা থাকতেন পুরোনো হয়ে গেছিল।
প্রতাপ একদিন বলে--" মা বাড়িটা পুরোনো হয়ে, অনেক জায়গায় damp পরে গেছে,,, আমি তাই নতুন ফ্ল্যাট কিনব ভাবছি ।"
শ্রীলতাদেবী--" ভালো তো।
কেন না,, নতুন ফ্ল্যাট। এখন আমার, মিষ্টি নাতি বা নাতনি আসবে।
এসে এই বাড়িটা দেখলে রাগ হবে।
তুই ভালো ভাবে দেখে, ফ্ল্যাট কিনিস।
তবে আমি চাই,, তোর সন্তানের অন্যপ্রাশোন এই বাড়িতে হোক। ওর দাদুর বাড়ি। "
প্রতাপ--" আচ্ছা ঠিক আছে । তাই হবে।"
ক্রমশ প্রকাশ্য