হার জিত
হার জিত
ঘরের এককোনে মুখ ভার করে বসে আছে বিশাল। সেই বিকেল থেকেই ছেলের মুখ ভার দেখে রঞ্জিত বাবু এবার বাধ্য হয়ে ছেলের সামনে এসে বসলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, "কি হয়েছে বিশু!!"
"কিছু না বাবা" ছোট্ট বিশাল মুখ ঘুরিয়ে বসে রইল।
"আরে বল আমাকে, বাবাকে বলবি না?" রঞ্জিত বাবু আবার জিজ্ঞেস করতে বিশাল বলল, "আমি আজ আবার হেরে গেছি বাবা। ওরা আমাকে খুব ক্ষেপিয়েছে, বলেছে আমার দ্বারা খেলা হবে না। আমি যেন বাড়িতে বসে বোনের খেলনা নিয়ে খেলি" বলে বিশাল কাঁদতে লাগলো।
সুনন্দা দেবী ছেলের কান্নার শব্দ শুনে ছুটে এলেন, "একি কি হয়েছে?"
"কিছু না, তুমি যাও" রঞ্জিত বাবুর কথায় সম্মতি জানিয়ে সুনন্দা দেবী চলে গেলেন।
রঞ্জিত বাবু ছেলের চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বললেন, "খেলায় তো হার জিত থাকবেই বিশু"।
- কিন্তু আমি তো কোনোদিন জিততে পারি না। প্রথম বলেই আউট হয়ে যাই। আমাকে আর কেউ টিমে নেবে না বলেছে।
- আরে খেলা মানে কি শুধুই ক্রিকেট! চল, আজ নতুন একটা খেলা আমি তোকে শেখাই।
- কি?
- ব্যাডমিন্টন।
- ওটা তো আমি জানি বাবা, বোনুর সঙ্গে মাঝে মাঝে খেলতাম। কিন্তু ও পারে না একদম, শুধু ব্যাট দু'টো বাজায়।
রঞ্জিত বাবু হেসে উঠলেন, "বুবু ছোটো তো তাই পারে না। চল আমি তোর সঙ্গে খেলবো। এমনিতেই শীতকাল চলছে, ব্যাডমিন্টন খেলতে বেশ লাগে। চল চল..." রঞ্জিত বাবু ছেলেকে নিজের সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন।
বাড়ির বাগানে বাবার সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলতে খেলতে বিশাল ভুলে গেলো বিকেলের হারের দুঃখটা। বাবার সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠল ছেলেটা। মুখের হাসিটা জেতার আনন্দের চেয়েও বেশি দামী।