Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Manab Mondal

Abstract Inspirational

4  

Manab Mondal

Abstract Inspirational

দেশের মাটি

দেশের মাটি

4 mins
486


গেরুয়া সাদা সবুজ রঙটা এ কয়েকটি দিনের জন্যে প্রিয়। ঘুরে ঘুরে গাড়ি গুলো আর ফুটপাতে দামি জামা কাপড় পড়া লোক গুলোকে ও বিক্রি করছে ও পতাকা। দেশের স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস এ সব ও কিছুই বোঝে না। ও জানে ২৬ জানুয়ারি আর ১৫ আগষ্ট এর আগে পতাকা কেনার ধুম পড়ে মানুষ গুলোর । এমনি দিন ও ফুলের গজরা বিক্রি করে।

ও বাঙালি। আমার সাথে কিভাবে আলাপ । দুই তিন দোকানে ব্রেড পকরা, বরা পাউএর , দাম জিজ্ঞেস করে, কম দাম হওয়ায় একটা সিঙ্গারা কিনে খাওয়া মানুষ আমি। ও সেটা লক্ষ করেছিলো। অথচো মাকে আমি মিথ্যে বলতাম এই তো এগরোল খেলাম।

আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব এই মিথ্যা কথাকে ঘিরে। ও ওর মাকে মিথ্যা বলে। ও আর ওর মা বাংলা থেকে এসেছিলো রান্না কাজ করতে। কিন্তু ওর মাকে যে এনেছিলো সে আসলে দেহ ব্যবসা শুরু করেইছিলো ওর মাকে দিয়ে। তাই ওখান থেকে পালাতে বলে, ওর পাড়াতুতো মাসির কাছে। সেখানে ও কাজ করে খেতো কিন্তু তবুও ওকে বিনা কারণে মার ধর করা হতো। তাই ও পালিয়ে আসে প্রথমে ভিক্ষা করলেও , ও জানতো এর কোন ভবিষ্যৎ নেই তাই এখন ব্যবসা করে। ফ্লাইওভার তলায় একটা আস্তানা গড়ে ছিলো।

প্রথম আলাপ ও ওর দেশের বাড়ি কথা বলেছিলো।ওর দেশের মাটি নাকি খুব উর্বর সবুজ ধান থেকে সবজি চাষ সব হয়। নানা রঙের ফুল হয় ওখানে। ফল হয় গাছে গাছে। সেই ফল খেতে আসে কতো নাম না জানা রঙ্গীন পাখি । ওর দেশের মাটি ওকে স্বপ্ন দেখাতো ঘুরে দাঁড়ানোর , একবার খরাতে ফসল নষ্ট হয়েছে তো কি হয়েছে আবার হবে আসছে বছর। লড়াই ওরা করতে জানতো কিন্তু মাত্র হাজার পাঁচেক টাকা জন্য বাজে কথা শোনতেই ওর বাবা আত্মহত্যা করেছিল। তারপর দেশের ভিটে মাটি ছেড়ে এখানে আসা ওদের।

এ শহর মানুষের হাতে অনেক পয়সা আছে। পনেরো আগষ্ট , ১লা জানুয়ারি মাঝে এদের কোনো পার্থক্য নেই। মেসে ঢুকেই শুনেছিলাম ওই গজরা বিক্রি করা মেয়েটাকে কারা যেনো তুলে নিয়ে গেছে। ব্যস্ত শহরে ওকে আর খোঁজ করা হয়নি।

হঠাৎ দুই দিন আগে সন্ধ্যায় ওর সাথে আবার দেখা অনেক দিন পর । বেলা পুরে ব্রীজের তলায়। অন্ধকার হলেও আমি ওকে চিনতে পারেই গিয়েছিলাম ওর কাছে ।

ও বললো " চলতে হ কে নসে বারা"

আমি বললাম " শিউলী তুই আমাকে চিনতে পারলি না"

ও দুই একবার দেখে বললো " বরা পাউ বাবু। টাইম খোটা করিস না। যা এটা ধ্যানদার সময়। "

আমি চাকরি পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই ওর তিনটে রাতের দাম মুখের উপর ছুঁড়ে দিলাম। তারপর নিয়ে এলাম । ওকে বুঝিয়ে দিলাম পুরুষ মানে ও যাদের দেখেছে তারা জোর করে বা পয়সার বিনিময়ে কারো শরীরের দখল উপভোগ করে। তাদের দলে আমি পরি না। আমার ফ্ল্যাটে দুটি ঘর আছে। একটায় ও থাকতে পারে। সন্মান জনক একটা কাজ জোগাড় করে দেবো আমি একটু সময় দিলে , ততদিন ও একটু কম মাইনেতে রান্নবান্না খাওয়া পড়ার কাজ করতে পারে।

ও বুঝতে পেরেছিল আমি একা মানুষ নিজের কাজটা একাই করে নিতে পারতাম। তাই ওকে পরিচারিকা কাজ দিয়েছি , দয়া না ভালোবাসার টানে সেটা জানতে চেষ্টা করলো ও ছলে বলে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শেষ মেষ জিজ্ঞেস করলো।" বরা পাউ বাবু, তুই বিয়ে করবি না।"

আমি বললাম" চাকুরী করে একটু প্রতিষ্ঠিত হতে হতে বুকের চুল সাদা হয়ে গেছে। আমাকে আর কে বিয়ে করবে?"

ও বললো " সেম হাল এখানে, ভরা যৌবন বেকার, নষ্ট মেয়েকে কে বিয়ে করবে।"

আমি বললাম " মেয়েরা কি মছি মার্কেটের মছি , যে নষ্ট হয়ে যাবে। এখানে ইন্ডিয়া গেট সাগরটা দেখেছিস সাগরটা নোংরা , ঐ টুকু সাগর কে নষ্ট করছে এই শহরের মানুষরা। বাকি সাগর টা এখনো সুন্দর। তোর জীবনের এইটুকু অংশ ভুলে। শুরু কর নতুন করে। মনের মানুষ পেয়ে যাবি"

বাইরে বৃষ্টি পড়ছিল। আমি শুয়ে পরা ঘটনা খানেক পর । হঠাৎ আমার ঘরে এসে হাজির। বললো ওকে আমার পাশে একটু শুতে দিতে হবে বৃষ্টি আওয়াজ ওর ভয় করছে। একটু জায়গা দখল করলো ও বিছানায়। তার পর আমার পাশ বালিশ টা গেলো ওর দখলে। শেষ মেস দখল করলো আমাকে ও। ঠোঁটে ঝগড়া ঝাটি শেষ। একবারো দুইজনেকে দুই জনে কেউ কাউকে " I love you" বললাম না। কিন্তু প্রতিটা শ্বাস প্রশ্বাস যেনো বলেদিলো এই দুই এক দিনে, বা অনেক দিন আগে থেকে আমরা দুইজন দুইজনকে ভালো বেসে ফেলেছি।

যৌবন সম্পর্কে স্থাপনের পর যেনো একটা মেয়ে বা ছেলে আত্মবিশ্বাসী হয়ে যায় একটা সম্পর্ক নিয়ে। স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।ও বললো , আমাকে নিয়ে ও ওর দেশের বাড়ি, দেশের মাটিতে ফিরে যেতে চায়। ওর পাড়া একটা ছেলের সাথে দেখা হয়েছিল। ওর ঠাকুর মা কাকা চায় ওরা দেশে ফিরে ওদের ভাগটা নিয়ে নিক। বিক্রি করুক থাকুক ওদের আপাত্তি নেই। এতোদিন ওরা বুঝতে পেরেছে ওর বাবার মৃত্যুতে ওর মায়ের কোন দোষ নেই। কিন্তু ওর ফেরার মুখ ছিলো না। কিন্তু আজ এই শহর ছেড়ে ও ফিরতে চাইছে ওর দেশের মাটি তে। ওর কথায় এ শহর টায় একটা বাজে গন্ধ আছে। ওর দেশের মাটি র একটা সুন্দর গন্ধ আছে। ওর মায়ের গায়ের গন্ধ মতো।

ভোরের নতুন আলোটা ওর মুখে চুমু খেলো এসে। আমি একটা চুমু খেলাম। ঘুমন্ত অবস্থায় ও আমাকে আরো একটু আঁকড়ে ধরলো। আমি ফোন নম্বর টিপে ট্রাভেল এজেন্সি বললাম তিনটে কোলকাতার টিকিট করতে। তারপর মা বাবা কে জানিয়ে দিলাম আমি ও ফিরছি দেশের মাটি তে। কারণ ওরা জানতো এখনো আমি বিদেশে কাজ করি। ও বেশ খুশি। কিন্তু ও একবার জানতে চাইলো ওদের অতীত জানতে পারলে এ সমাজ ওকে স্বাধীন ভাবে বাঁচতে দেবে তো???


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract