Rukhsana Akhtar

Classics

4.1  

Rukhsana Akhtar

Classics

ডাইরির সেই পাতাগুলো

ডাইরির সেই পাতাগুলো

3 mins
389



পর্ব :- ৯

কলমে:- রুখসা

   সেদিনটা ছিল খুব খুশির দিন কিন্তু কে জানত এই খুশি ক্ষণস্থায়ী। নতুন কিছু গড়ে উঠবার আগে তাকে একবার না একবার দুঃখের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় নয়ত তার ভীতটা ঠিক আলগা রয়ে যায়। ঘটনার জন্য হয়ত কেউ প্রস্তুত ছিল না। পেরিয়ে গেছে দুটি মাস। মাধ্যমিক পরীক্ষার চাপে কিছুই লিখে উঠতে পারিনি। ক্ষণে ক্ষণে

পরিস্থিতি বদলায় আর পরিস্থিতির সাথে মানুষ। 

    

    সেদিন ম্যামকে পছন্দের করেতে দাদার সাথে এসেছিল দাদার বাবা, দাদার দুলাভাই (জামাইবাবু... আমার মায়ের ভাইপো), দাদা বোন, তাদের পুচকি তিন বছরের মেয়ে এবং দাদার বাবা। সবারই ম্যামকে খুব পছন্দ হয়েছে। তার পরদিনই ম্যামের বাড়ি থেকে লোক এল। ম্যামের বাড়ি বহুদূর হওয়ায় তারা খুব সকাল বেড়িয়ে ছিল। রাস্তার ধারের ধাবাতে তারা ব্রেকফাস্ট সেরে নিলেও ম্যামের বাবা ছিলেন অসুস্থ মানুষ হালকা ভারসাম্যহীন। তাই উনি আমাদের বাড়িতে এসে হালকা ভারী খাবার খেয়ে নেন। 

   এবার আসি ম্যামের বাড়ির পরিচয়ে। ওনার বাবা অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ। উনি কিছুটা ভারসাম্যহীন। ঘরের দেখাশোনা করতে পারেন না। ম্যামের মাও খুব ভালো মানুষ। ম্যামের দিদি আছে সেও ভালো মানুষ। কিন্তু ওনার হাসবেন্ড বরাবরই কেমন একটা। সারাক্ষণ ঔদ্ধত্য আর অহংকারের মধ্যে বিরাজ করেন। ওনি আগে এয়ারফোর্সে চাকরি করতেন। এখন ছেড়ে দিয়েছেন। ওনার দুই ছেলে খুব মিষ্টি আর চঞ্চল। এসে থেকেই ঘরকে মাতিয়ে রেখেছে। 

    এরপর ওরা সবাই মিলে দাদাদের গ্রাম এ গেল। ওখানে কি হয়েছে তা আমি ঠিক বলতে পারব না কারণ ম্যামের সাথে সেদিন আমি স্কুল চলে গিয়েছিলাম। সেদিন ফুল টাইম ক্লাস করলাম। স্কুলেতে গিয়ে যখন বললাম ম্যামের বিয়ে দাদার সাথে হচ্ছে সবাই অবাক। সবাই অবাক হয়েছিল এটা জেনে যে এত ভালো পড়াশোনা করা ছেলেটার এখন বিয়ে হয়নি। এত বড়ো অফিসে চাকরি করে তবুও মেয়ে পছন্দ করতে পারেনি। 

ব্যাস হয়ে সারাদিনে যে যাই বলুক না কেন শেষ টপিক "আরেশা ওয়েডস্ আরিয়াল"। 

     ঘরে এসে জানতে পারি আর একটু পর ম্যামের বাড়ির সবাই গ্রাম থেকে ফিরে আসবে। সেদিন কোনো টিউশন ছিল না আমার তাই ফ্রেস হয়ে খেতে বসলাম। খেয়ে উঠার কিছুক্ষণ পর শুনলাম ম্যামের বাড়ির সবাই চলে এসেছে। এরপর বড়োরা সবাই বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা করছিলেন। সবার ছেলে পক্ষকে পছন্দ হয়েছে। এরপর বিয়ের পাকা হলেই হলো। কিন্তু অদৃষ্টের কি ইচ্ছা তা কেউ জানে কী ????????? 

সেদিন আর তেমন কিছু ঘটেনি তবে ম্যাম আর দাদা খুব খুশি ছিলেন।


 দু পর ম্যামের মূখটা অনেকটা শুকনো লাগছিল। কেন তা আমরা কেউ বুঝতে পারিনি। তবে সেদিন রাতে ম্যামের ওই জামাইবাবু ফোন করতে ঘটনাটা স্পষ্ট হল। উনি আব্বু ফোন করে জানালেন ------

-------স্যার আরেশা এই বিয়েটা করতে পারবে না। 

------ কেন?? ওর তো কোনো প্রবলেম আছে বলে মনে হচ্ছে না। তবে??? 

--------স্যার সব প্রবলেম কি মূখে বলে দিতে হয়। ছেলে থাকে আসামে আর মেয়ে থাকে WB তে ডিসট্যান্সটাও তো দেখতে হবে নাকি। নাকি শুধু বিয়ে করব বললেই হল। 

------- সে আপনারা যা ভালো বোঝেন করবেন। আমি আর কি বলব?? 

 ( বাকিটা শোনার সময় হয়নি কারণ টিউশন ছিল। তবে এটুকু বুঝতে পেরেছিলাম হয়ত এই বিয়েটা আর স্বাভাবিকভাবে হবে না।) 

  টিউশন থেকে ঘরে ফিরে জানতে পারি বিয়ে ক্যানসেল। আর কি করার গেল সব আনন্দ মাটি হয়ে চুপচাপ পড়তে বসলাম। 

   এর কিছু দিনের মাথায় মায়ের ভাইপো ফোন করে ম্যামের নম্বর চায় আর এও জানায় যে দাদা বলছে বিয়ে করলে ম্যামকেই করবে।

   আজ , তার ঠিক ১৫ দিন পর আজ হঠাৎ দাদা পাপাকে ফোন করে বলে -----

----- স্যার আপনার একটা সাহায্য চাই। 

----- আমি তোকে সাহায্য করব কি করে??? 

----- স্যার আজ আমি আরেশাকে বিয়ে করব মানে জাস্ট ধর্মীয় মতে আর এখানে ওর কোনো অভিভাবক নেই। আপনার কাছে থাকে ও। আপনি ওর বাবার মতো তো আপনাকে ওর বাবা হিসেবে এখানে থাকতে হবে। 

----- কিন্তু আমি কি করে যায় বল ওর বাবা মা কি ভাববে?? আর তাছাড়া তো বুনুর টার্মিনাল এক্সাম আর কাকিমার শরীর খারাপ। তাহলে আর কিছু দিন আগেই তো তোর বনের বিয়েতে গিয়েছিলাম। 

----- স্যার ওর পরিবার কে কিছুই জানানো হয়নি। স্যার ওর ফোন সুইচ ওফ থাকবে কাল সারাদিন। আর ওর ফ্যামিলি থেকে ফোন করলে কিছু একটা বলে সামলে নিবেন প্লিজ আর আপনাকে আমি একান্ত অনুরোধ করছি কাল প্লিজ আসবেন কাকি নিয়ে আসবেন। 

( দাদা আব্বুর বেস্ট স্টুডেন্টদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আর প্রিয় ছিলেন তাই আব্বু দাদার কথা ফেলতে পারল না।) 

----- আচ্ছা নে আমি যাবো তবে তোর কাকিমার শরীর খারাপ তাই সে যাবে না। তবে তুই ওর ফ্যামিলিকে বিয়েটা না জানিয়ে ভালো করছিস না। যা কর সাবধানে কর। 

এরপর........ 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics