অলৌকিক
অলৌকিক
কয়েকদিন ধরে খবরে একটা নাম বার বার ঘুরে ফেরা করছে একটা বালিকা বিদ্যালয়। কারণ ওই বিদ্যালয়ে একটার পর একটা মেয়ে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হচ্ছে তাও আবার বিদ্যালয়ের বাথরুমে। চুড়িদারের ওড়না দিয়ে গলায় দড়ি কিন্তু মৃত্যুর পরই শরীরটা কেমন ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে শরীরে যেনো বিন্দু মাত্র রক্ত নেই। যেনো ওই শরীর গুলোর রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত কেউ শুষে খেয়ে ফেলেছে। ঘটনা টাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই অঞ্চলে অনেকেই স্কুল ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু কেনো এমন হচ্ছে এই নিয়ে ভিন্ন জন ভিন্ন মতামত জানাচ্ছে। কেউ বলছে মেয়ে গুলো ইচ্ছাকৃত আত্মহত্যা করছে কেউ বলছে ওই বাথরুমে "গলাসা " আছে তাই একের পর এক সবাই ওই একই জায়গায় আত্মঘাতী হচ্ছে।
বিদ্যালয় প্রায় বন্ধের মুখে কেই বা পাঠাবে নিজের মেয়েকে ওই মৃত্যুর মুখে।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো তাও কোনো না কোনো মেয়ে প্রতিদিন ওই স্কুলে মারা যাচ্ছে একই ভাবে সবার পরনে একই স্কুলের ড্রেস গলায় ওড়না জড়িয়ে মৃত্যু।
স্কুল কর্তপক্ষ জানিয়েছে উপর মহলে।
আর এই স্কুলের রহস্য উদঘাটন এর দ্বায়িত্ব
পড়লো আমাদের প্যারানরমাল টিমের উপর ।
আমরা টিম নিয়ে সাথে কিছু গেজেট নিয়ে পৌছালাম ওই বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের চারপাশে ভালো করে দেখলাম কোথায় কিছু খুজে পেলাম না। আমাদের টিম এগিয়ে গেলো বাথরুমের দিকে আমরা দেখছিলাম ওখানে কোনো বাইরে থেকে সংযোগ আছে কিনা যেটা দিতে একের পর এক একইভাবে খুন করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো ক্লু পেলাম না। সেদিনের মত ফিরে চলে এলাম।
আমরা আবার পৌছালাম সেই স্কুলে সকাল থেকেই রোদ নেই কেমন একটা পরিবেশ। মনটাও ভালো নেই। আগের দিনের মতো আবার গেলাম সেই বাথরুমের দিকে.. গত দিনে আর কেউ আত্মঘাতী হয়নি। খবরটা শুনে ভয়টা একটু হলেও কেটেছে আমরা সকলে ভেবেই নিয়েছি এটা কোনো ক্রাইম অলৌকিক কিছু হয় তায় হয় তো ভয়ে দুদিন মাডার বন্ধ আছে। আমি বাথরুমের চারপাশে ঘুরাঘুরি করছি আমাদের বাকি টীম মেম্বাররা গেছে একটু চা খেতে আমি চা খাই না তাই একটু ঘুরে ফিরে দেখছি..
আমার সামনে একটা মেয়ে এসে দাঁড়ালো সাদা ড্রেস নীল ওড়না..
মেয়েটি বলল : আমাকে বাঁচাও দিদি.. দিদি আমাকে বাঁচাও.. ওরা আমাকে মেরে ফেলবে..
বাথরুমের দিকে আঙুল দেখিয়ে মেয়েটি একই কথা বলে চলেছে।
আমার এক্ষণ মেয়েটার সাথে যাওয়া উচিত নাকি বাকিদের ডাকা উচিত বুঝতে পারছি না। মেয়েটিকে বাঁচাতে আমি দৌড় দিলাম বাথরুমের দিকে।
আমি:- কই কেও কোথাও নেই তো। কে তোমাকে মারতে চাইছে।
মেয়েটির দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম মেয়েটি নিজের রূপ পরিবর্তন করছে। সাদা স্কুল ড্রেসটা রক্তের দাগ লাল গিয়ে উঠেছে মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে। মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে বার বার বলছে আমাকে বাঁচাও আমাকে বাঁচাও। হাত দুটো বাড়িয়ে আমার দিকে এগিয়ে আছে। আমি ভয়ে জ্ঞান হারালাম।
পরে যখন চোখ খুলি দেখতে পেলাম আমি হাসপাতালের বেডে সেদিন আমাকে আমার টীম মেম্বাররা খুঁজে না পেয়ে উদ্ধার করেছিল ওই স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায়। আমার শরীরে দুটো দাতের দাগ হাসপাতালে আনার পর আমাকেও রক্ত দিয়ে হয়েছিল কারণ আমার শরীরে রক্তের পরিমাণ কমে গেছিলো। সঠিক সময়ে আমার টিম চলে আসায় শেষ রক্ষা হয়েছিল।
পড়ে ওই স্কুলের হেড মিস্ট্রেস এর সাথে কথা বলে জানতে পারি ওই স্কুলের এক ছাত্রী কে একজন শিক্ষিক ধর্ষণ করে খুন করেছিল কয়েক বছর আগে তারপর থেকে ওই বাথরুম বন্ধ ছিল কিন্তু এক্ষণ আবার পুনরায় চালু করা হয়েছিল তাতেই এত বিপত্তি। ওই শিক্ষক একজন পুলিশ হেফাজতে। মেয়েটির কথা ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।