/গয়নার বাক্স/সত্য ঘটনা
/গয়নার বাক্স/সত্য ঘটনা
রাজলক্ষ্মীর বাড়ি ঢাকা জেলা। রাজলক্ষ্মীর বাবা রাজলক্ষ্মীকে খুব আদরে মানুষ করেছে। রাজলক্ষ্মীর বাবার নাম বিহারীলাল দত্ত। একমাত্র মেয়ের রাজলক্ষী। রাজ লক্ষীর বাবা রাজলক্ষ্মীকে আদর করে লক্ষী বলে ডাকতো। রাজলক্ষীকে দেখতে একেবারে দুর্গা প্রতিমা। সব থেকে ইউনিক রাজলক্ষ্মী দুটো চোখ। টানা টানা দুটো কাজল নয়না। মাথায় এক ঢাল চুল কারলি হেয়ার। ঈশ্বর যেন সারা পৃথিবীর রূপ রাজলক্ষ্মীর শরীরে ঢেলে দিয়েছে। তখনকার দিনে একটাই কথা ছিল উচ্চ কুলীন বংশ। পাত্রকে যেরকমই দেখতে হোক না কেন ওই যে জাতে কুলি ন। রাজলক্ষ্মীর বাবা রাজলক্ষ্মীকে বিয়ের সময় পাল্লাবাট খারায় বসিয়ে এক পাল্লায় সোনা সোনা দিয়ে আর এক পাল্লায় রাজলক্ষ্মীকে বসিয়ে দিয়ে বিয়েদেয়। মেয়ের বিয়েতে কোন ত্রুটিরাখেনি। স্বামী তিন কড়ি বোস। দেখতে একেবারেই ভালো নয়। বিরাট ব্যবসায়ী। যাইহোক রাজলক্ষ্মী সুখে শান্তিতে দিন কাটছিল । বিয়ের এক বছরের মাথায় রাজলক্ষ্মীর কোলে। রাজলক্ষ্মীর এক সই ছিল নাম কুন্দ বালা একটা মেয়ে এলো। তার নাম বিভাবরী। কিছুদিন বাদে রাজলক্ষ্মী স্বামী বিরাট অসুখ করে। তখন রাজলক্ষ্মীর অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়। অথচ স্বামী তিন কড়ি কে বাঁচানো গেল না। রাজলক্ষ্মী যে গয়না ছিল সেই গয়নাগুলো মাটির তলায় পুঁতে রেখেছিল। এই কথা মেয়ে বিভাবরী জানত। মেয়ে বিভাবরী মায়ের খবর তো নিতো না খালি আলুটা মুলোটা চালটা কলাটা নিতেই থাকতো সমান রাজলক্ষ্মীর এক সই ছিল নাম তার কুন্দ বালা রাজলক্ষ্মীকে বলতো তুমি আমার কাছে এসে থাকো। তোমার তো মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে তোমার আর পিছুটান কোথায়? আমারও তো স্বামী মারা গেছে অনেক বছর হয়ে গেল আমরা দুই বোনে একসাথে ভালই থাকবো। রাজলক্ষ্মী বলল ঠিক আছে। তারপর রাজলক্ষ্মী কুন্দুবালার কাছে চলে গেল। রাজলক্ষী কুন্দু বালার বাড়ি গিয়ে ম্যালেরিয়া হলো। বিভাবরী একটুও দেখতে গেল না
। সেই সময় কুন্ডু বালার ছেলে ছেলে বৌমা বিদেশ থেকে এসেছে। কুন্দুবালার বৌমা মিমি রাজলক্ষীকে সেবা যত্ন করে সারিয়ে তুলল। এইবার রাজলক্ষ্মী কুন্দলাকে বলল অনেকদিন তো হলো এবার একটু বাড়ি থেকে কয়দিন ঘুরে আসি ওখানে তাড়া বন্ধ হয়ে আছে কি হচ্ছে একটু দেখে আসি আর জমি থেকে যে সমস্ত টাকা-পয়সা পায় সেগুলো তুলে আনি। এই বলে রাজলক্ষ্মী বাড়ির দিকে রওনা হ রাজলক্ষ্মী জানতো তার গয়নার বাক্সটা কোথায় পুঁতে রেখেছিল মাটির তলায়। গিয়ে দেখল সেখানে আর নেই। এইটা জানত একমাত্র তার মেয়ে। তখন রাজলক্ষ্মী মনের দুঃখে কুন্দুবালাকে কি সব কথা বলল। কুন্ডু বালা যখন বলল তোমাকে আর যেতে হবে না বাড়ি ফিরে তুমি আমার কাছেই থাকো। সেই থেকে রাজলক্ষ্মী কুন্দুবালার কাছেই থাকতে লাগলো। রাজলক্ষ্মী যা কিছু ছিল সবই কুন্দুবালার বৌমাকে দিল মেয়ে বিভাবরিকে আর দিল না কিছু।