বর্ষা রানী//
বর্ষা রানী//
"আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেবো মে সে"। ঝন্টুদেরবাড়িতে আম কুড়াতে যাবি?উমা বললো যাব। তাড়াতাড়ি চল!
আকাশের ঘন কালো মেঘ। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি আসবে আর আম কুড়ানো ও
যাবে না। তুই একটা ব্যাগ নিয়ে নে। আমি একটা ঝুড়ি নিয়ে নিয়েছি।
আরে চল! চল !আর দেরি করিস না।
- উমা আর ভিকি দুজনে মিলে আম কুড়তে চলে গেল ঝন্টুদের বাগানে।
ভিকির অনেকগুলো বন্ধুও গেল রাজা ,সম,গোপাল মনি ষ, জন ,ডোডো। আরো অনেকে। উমার বান্ধবী রানী ও গেলো।
সব বন্ধুরা মিলে অনেক আম কুড়ালো। ভিকির বন্ধুরা সব চলে গেল।
উমা আর ভিকি পড়ে রইল।
ভিকি দেখছে কেউ কোথাও নেই সব বন্ধু বান্ধবী চলে গেছে।
আর একটা ছোট্ট ছেলে সমানে আম ফেলে যাচ্ছে আর ভিকি আম কুড়িয়ে যাচ্ছে।
ভিকি বাচ্চাটাকে চিনতে পারছে না।
আম গাছে অনেকটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে একটা ব্যাগ ভর্তি আম নিয়ে।
বাচ্চা ছেলেটা যখন কথা বলছে না তখন ভিকির মনে সন্দেহ হলো এ কখনোই মানুষ হতে পারে না এটা ভূত। ভিকি খুব ভয় পেয়ে গেল। চিৎকার করে উমাকে ডাকতে লাগলো।
উমা তাড়াতাড়ি করে ভিকির কাছে এলো।
ভিকি বলল আম গাছে কোন ছোট্ট ছেলেকে দেখতে পাচ্ছিস?
উমা বললো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
ভিকি বলল এখান থেকে তাড়াতাড়ি চল বাড়ি গিয়ে সব কথা বলব।
ভিকি আর ও উমা আম বাগান থেকে বেরোতে বেরতে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে পড়ে গেল।
একেবারে বৃষ্টিতে ভিজে চান করে গেল।
বাড়ি যেতে ভিকির খুব জ্বর এসে গেল।
ভিকির দাদু খুব বকা দিল বলল ওই আম বাগানে ভূত আছে অনেক অনেক ভুত-পেত্নী ঘোরাঘুরি করে
ওই আম গাছে ছোট একটা বাচ্চা ছেলে গলায় দড়ি দিয়েছিল।
ভিকি জ্বর 7 দিন ধরে থাকলোভিকির মা ডাক্তার, বৈদ্য, ঠাকুরবাড়ি ,ওঝা এই সমস্ত করে জ্বর ছাড়ালো।
ভিকি একটু সুস্থ হয়েছে আবার এই বর্ষার মধ্যে ধান ক্ষেতে অনেক রকম মাছ আছে ধরতে গেল।
আবার জলকাদার মধ্যে খেলা শুরু করে দিল।
গ্রামের ছোট ছোট ছেলেপেলেরা যেটা করে থাকে।
ভিকি, এটা করেও শান্ত হয়নি আবার পুকুরে গেল মাছ ধরতে বৃষ্টির মধ্যে।
সারাদিন ধরে ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে।
- ভিকি বলতে শুরু করলো"ইলশে গুড়ি ইলশে গুড়ি"
ভিকি ও বন্ধুরাঅনেক মাছ ধরল।
তার থেকে কিছু মাছ উমাদের বাড়িতে দিয়ে এলো।
উমার ঠাকুরমা ভিকিকে বকা দিল।
এই বৃষ্টির মধ্যে তুই মাছ ধরতে গেলি কেন?
দুদিন আগে থেকে তো জ্বরে থেকে উঠলি।
ভিকি পড়াশোনায় খুব ভালো ছেলে। মা বাবার একটা মাত্র সন্তান।
ভিকির পরিবার খুব ধনী। দাদুর অনেক জায়গা জমি আছে। দাদু অনেক বড় ব্যবসায়ী। দাদুর বয়স হয়েছে তবে ওর বাবাই ব্যবসা দেখাশোনা করে।
এদিকে উমার মা-বাবা মারা গেছে। উমার তখন দু বছর বয়স গাড়ি এক্সিডেন্টে মা-বাবা মারা যায় উমা বেঁচে যায়।
সেই থেকে উমা দাদু ঠাকুমার কাছে মানুষ হয়।
দাদু রেলে কাজ করতো।
এখন পেনশন পায়। আর কিছু জাগা জমি আছে বছরের চাল ডাল সবজি ওখান থেকেই উমাদের মোটামুটি ভালই চলে যায়।
ভিকি পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করলো।ওকে ব্যাঙ্গালোরে পাঠিয়ে দিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে।
ভিকি তাড়াতাড়ি করে পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি নিয়ে বাড়িতে এলো।
ভিকি সরাসরি উমাদের বাড়িতে গিয়ে দাদু ঠাকুমার কাছে উমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিল।
দাদা ঠাকুরমা রাজি হয়ে গেল। এমন পাত্র সহজে মেলেনা।
বর্ষাকাল প্রচুর জল জমে গেছে। উমার দাদু বললো বর্ষাটা যাক তারপরে তোমাদের বিয়ে হবে।
ভিকি বললো না এই বর্ষাতেই আমি বিয়ে করবো।
তারপর ভিকি নৌকো করে বিয়ে করতে এলো।
টানটান উত্তেজনা ভিকি খুব আনন্দ করে বিয়ে করতে এলো।
ভিকির বর্ষাকাল/ বর্ষার রানী খুব প্রিয়।
অনেক লোক নেমন্তন্ন হল সবাই নেমন্তন্ন রক্ষা করতে এল।
কিছুদিন পর ভিকি উমাকে নিয়ে এই বর্ষার মধ্যেই সিকিম বেড়াতে চলে গেল।
একটাই কথা বর্ষা রানী ভিকির খুব প্রিয়।
ভিকির এই বর্ষা রানীর স্মৃতি শৈশবে গ্রামের বাড়িতে প্রচুর বন্ধুদের সাথে।
বর্ষা রানী গল্পটা কেমন লাগলো??